Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মা পাড়ি দিতে প্রস্তুত দেড় হাজার নতুন বাস

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২২, ১:০৯ পিএম

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে সুগম হচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রা। রোববার থেকে গণপরিবহনে পদ্মা সেতু পাড়ি দেবে দুই পাড়ের মানুষ। সেতু পাড়ি দিতে এরইমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে দেড় হাজার যাত্রীবাহী বাস। জেলায় জেলায় তৈরি হচ্ছে আরও নতুন বাস। বিভিন্ন স্টাইল আর রং-বেরঙয়ে সাজানো হচ্ছে এসব বাস। ?পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল করতে যাওয়া বাসের ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিআরটিসি বাসের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারের এই সংস্থাটি। এতদিন যেসব জেলায় বিআরটিসি বাস ছিল না, এমন জেলায়ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ও নন-এসি দুই ধরনের বাস নামাচ্ছে তারা। একই সঙ্গে বেসরকারি বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানি বাসের ভাড়া নির্ধারণ করে টিকিট বিক্রি শুরু করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন- ২৬শে জুন দুই পাড়ের গণপরিবহন চলাচল করবে।

সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বাস সাজিয়ে রাখা হয়েছে। অপেক্ষায় চালক ও স্টাফরা। প্রথম দিন থেকেই বাস চালাবে এনিয়ে অনেকেই খুঁশিতে আত্মহারা। নতুন নতুন রুট সৃষ্টি হওয়ায় খুশি তারা।
সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার দিন থেকেই ৬০টি পরিবহন কোম্পানি প্রায় দেড় হাজার বাস সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে যাতায়াত করবে। শরীয়তপুরে শতাধিক বাস প্রস্তুত করা হয়েছে। ফরিদপুর ও মাদারীপুর জেলার বাস মালিকরা নতুন বাস নামাচ্ছেন। প্রস্তুতি নিতে পিছিয়ে নেই সারা দেশে চলাচলকারী পরিবহন গ্রুপগুলোও। পরিবহন কোম্পাানিগুলো সায়েদাবাদ যাত্রাবাড়ী এলাকায় কাউন্টার খুলে বসেছেন। অনেকেই নতুন করে জায়গা খুঁজছেন। আগে যেসব পরিবহন মালিক গাবতলী থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে বাস চালাতেন তারাও এখন সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে এসেছেন। সাকুরা পরিবহন (প্রা.) লিমিটেডের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, পদ্মা পাড়ি দিতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। এখন শুধু অপেক্ষা। ইতিমধ্যে ২৬শে জুন থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ঢাকা, বরিশাল, খুলনা, যশোর এসব রুটে চলবে। আমাদের বেশির ভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়ে গেছে। গ্রিনলাইন পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার বলেন, প্রথম দিন থেকেই আমরা ৩০টি বাস চালু করবো। এগুলো তিনটি রুটে চলবে। ঢাকা-খুলনা-সাতক্ষীরা রুটে ১০টি, ঢাকা-যশোর-বেনাপোল রুটে ১০টি, ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে ১০টি করে বাস চলবে। বন্যার কারণে অনলাইনে কিছুটা কম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। তবে অফলাইনে যথেষ্ট টিকিট বিক্রি হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা বাসের সংখ্যা বাড়াবো।
আমাদের কিছু বাস মালয়েশিয়ায় তৈরি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা বলছেন, সেতু উদ্বোধনের আগেই হাজার হাজার বাস প্রস্তুত রয়েছে। সেতু চালু হলে আরও বাস বাড়বে। সারা দেশের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে যুক্ত করবে নতুন পরিবহনগুলো। অনেকেই রুট পারমিট নিয়েছেন। কেউ কেউ রুট পারমিট নেয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছেন। প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় তৈরি করা বাসগুলো যাত্রী পারাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। এখন আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না। মানুষ চাইলেই দুই পাড়ে যখন তখন পাড়ি দিতে পারবে। তবে অনেকেই বলছেন, নতুন রুটে নতুন বাস নামলেও সরকারকে নিয়মিত তদারকি করতে হবে। অনেক অসাধু পরিবহন ব্যবসায়ী পুরাতন বাস কিংবা ফিটনেস বিহীন বাসগুলো রং করে এই রুটে নামাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কসহ দক্ষিণের হাইওয়েগুলোর জন্য অনেক বাস উপযোগী নয়। তবুও এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা লাভের আসায় এসব বাস নামাচ্ছেন। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। পরিবহন মালিকরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় গাবতলী-পাটুরিয়া রুটের বাসগুলো সায়েদাবাদ কেন্দ্রিক হয়েছে। তবে এখানে যথেষ্ট জায়গা নেই।
সায়েদাবাদে কয়েকটি বড় কোম্পানির বাস ছাড়া ছোট ছোট কোম্পানির বাস সেখানে রাখার পরিবেশ নেই। নেই কাউন্টার। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) সূত্র জানায়, আগের মতো ফেরি পথেও চলবে বিআরটিসি বাস। পদ্মা সেতু পারাপারে নতুন ৬০ থেকে ৭০টি বাস বিভিন্ন রুটে চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এগুলো সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাবে। ইতিমধ্যে গাবতলী থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলকারী বাসের অনেক কোম্পানি পদ্মা সেতু হয়ে বাস চালাতে আগ্রহ দেখিয়েছে। বর্তমানে মাওয়া হয়ে ১৩টি পথে বেসরকারি কোম্পানির বাস চলাচলের অনুমতি আছে। বিআরটিসির অনুসারে, বর্তমানে ফেরি পারাপারের মাধ্যমে ঢাকা থেকে খুলনা ও যশোরে ১৬ থেকে ১৭টি বাস চলাচল করে। বরিশাল থেকে মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি পর্যন্ত চলে ১৫টি বাস। তবে এগুলো ফেরি পার হয়ে ঢাকায় আসে না। পদ্মা সেতু চালুর পর এগুলো বরিশাল থেকে ঢাকা পর্যন্ত চালুর পরিকল্পনা করছে সরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিআরটিএ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ