নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সাবিনা খাতুনদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি মালয়েশিয়ার মেয়েরা। ফলে যথারীতি বড় হারের শিকার হলো অতিথি দল। গতকাল সন্ধ্যায় কমলাপুরস্থ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ফিফা আন্তর্জাতিক দুই প্রীতি ম্যাচের প্রথমটিতে বাংলাদেশ ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করে মালয়েশিয়া জাতীয় নারী দলকে। বিজয়ী দলের হয়ে জোড়া গোল করেন ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন। বাকি চার গোল করেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, সিরাত জাহান স্বপ্না, মনিকা চাকমা ও কৃষ্ণা রানী সরকার।
‘দুরন্ত গতি’, ‘দুর্বার মানসিকতা’, ‘অকল্পনীয় খেলা’ - এসব বিশেষনেই বিশেষায়িত করা যায় মালয়েশিয়ার বিপক্ষে সাবিনাদের খেলাকে। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৬১ ধাপ এগিয়ে থাকা মালয়েশিয়াকে (৮৫) শুধু বিধ্বস্তই নয়, স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ (১৪৬)। অথচ ম্যাচ শুরুর আগে ফেভারিট ছিল মালয়েশিয়াই। কিন্তু পুরো ম্যাচে একক আধিপত্য বিস্তার কওে খেলে গোলের পর গোল করে বড় জয় তুলে নেয় বাংলাদেশই। ফুটবল খেলায় মাঠের লড়াইয়ে র্যাঙ্কিংয়ের পার্থক্যটা যে নেহাতই একটা সংখ্যা তা প্রমাণ করলো বাংলাদেশের মেয়েরা।
মাত্র ক’দিন আগেই এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে স্বাগতিক মালয়েশিয়ার কাছে ৪-১ গোলে হেরেছিলেন জামাল ভূঁইয়ারা। বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানের সঙ্গে লড়াই করে হারলেও মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ওই ম্যাচে যেন চেনাই যায়নি বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ দলকে। কুয়ালালামপুরে জামালদের সেই ম্যাচে হারের মধুর প্রতিশোধই যেন ঢাকার কমলাপুরে নিলেন সাবিনা-আঁখি খাতুনরা। বাফুফে ক্যাম্পের নারী ফুটবলাররা স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়ে পুরো ম্যাচ উপভোগ করেন। তারা ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ স্লোগানে মুখরিত কওে তোলে সমগ্র স্টেডিয়ামকে। শুধু তাই নয়, স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উপস্থিত হাজারো দর্শক প্রতি মূহুর্তে করতালির মাধ্যমে উৎসাহিত করেন লাল-সবুজের মেয়েদের। এ যেন অন্যরকম এক দৃশ্য।
ম্যাচের শুরু থেকেই মালয়েশিয়ার মেয়েদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকেন সাবিনারা। আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিয়ে মাত্র ১০ মিনিটেই গোল আদায় করে নেয় লাল-সবুজরা। এসময় ডানপ্রান্ত দিয়ে মারিয়া মান্ডার কর্ণার কিকে উড়ে আসা বলে শট করে গোল করেন আঁখি খাতুন (১-০)। ধারাবাহিক আক্রমণের মুখে ম্যাচের ২৫ মিনিটে দ্বিতীয় গোল পায় বাংলাদেশ। ডানপ্রান্ত দিয়ে সিরাত জাহান স্বপ্নার বাড়িয়ে দেওয়া বলে শটে গোল করেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন (২-০)। মিনিট পাঁচেক পর সাবিনার ক্রস থেকে আঁখি খাতুন ডান পায়ের টোকায় নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোল করলে মালয়েশিয়ার রক্ষণভাগ অসহায় দেখা যায় (৩-০)। ৪৫ মিনিটে বক্সের ভেতরে সাবিনার ক্রস থেকে স্বপ্নার আলতো টোকায় গোল (৪-০)। এই গোলের পরই যেন ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে সফরকারীরা। চার গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে গোলক্ষুধা কমেনি বাংলাদেশের মেয়েদের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই মালয়েশিয়াকে কোন সুযোগ না দিয়ে গোল সংখ্যা বাড়ান সাবিনারা। ৬৭ মিনিটে কর্ণার থেকে উড়ে আসা বলে ফ্লাইট মিস করেন মালয়েশিয়ান গোলরক্ষক। ফিরতি বলে মনিকা চাকমা গোল করলে ৫-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। মিনিট আটেক পর দূরপাল্লার শটে উড়ে আসা বলে হেড করে তা জালে জড়ান কৃষ্ণা রানী সরকার (৬-০)। হাফ ডজন গোল হজমের পর অনেকটাই এলোমেলো হয়ে যায় মালয়েশিয়া। ফলে নিজেদের মাটিতে প্রথম ফিফা প্রীতি ম্যাচে বড় ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন সাবিনা-আঁখি-কৃষ্ণা রানীরা। বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া দ্বিতীয় ও শেষ প্রীতি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী রোববার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।