Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিভে যাবে বাতি

রাত ৮টার পর মার্কেট বন্ধ আজ থেকে বিধিনিষেধ : রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের শপিং মল, বিপণি বিতান, দোকানপাট, সব ধরনের মার্কেটে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে খোলা থাকবে : হাসপাতাল, রেলস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে আজ রাত ৮টার পর রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের শপিং মল, বিপণী বিতান, দোকানপাট ও সব ধরণের মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের উপস্থিতিতে বিভিন্ন অংশীজনদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মার্কেটের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হবে। নিভে যাবে বাতি। বিশেষ টিম তদারকী করবে। ব্যতয় ঘটলে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এর আগে ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়। তারও আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দুই বছর পুর্তি উপলক্ষ্যে আলোচনায় মেয়র ব্যারিষ্টার ফজলে নূর তাপস ঢাকা সিটির মার্কেটগুলো রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করার প্রস্তাব দেন এবং এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন পাঠানো হবে বলে জানান।

গতকাল বৈঠকে সারাদেশে রাত ৮টার পর মার্কেট বন্ধের সিদ্ধান্ত আজ সোমবার থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গতকাল রোববার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তাসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। তবে হাসপাতাল, রেল স্টেশন, বাস স্টেশন, বিমানবন্দর, হোটেল, নাপিত, ঔষধের দোকান, সিনেমা, থিয়েটার, মিষ্টি ও ফুলের দোকান, ওয়াসা, বিদ্যুৎ ও গ্যাস অফিস, ক্লাবগুলো যথারীতি খোলা থাকবে; তথা বিধিনিষেধের বাইরে থাকবে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, এমপ্লোয়ার্স ফেডারেশন, এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, ঢাকা চেম্বারসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী মালিক সংগঠন এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন। বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এ সিদ্ধান্তের ফলে আজ থেকে কোন দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপনি বিতান ও কাঁচাবাজার রাত আটটার পরে খোলা রাখা যাবে না। এর ব্যতিক্রম হলে শ্রম আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়ার কথা আছে। তবে মঙ্গলবার সকল অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক শেষে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে তারা।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১১৪ ধারার বিধান কঠোরভাবে প্রতিপালনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে এই বৈঠকটি আহ্বান করা হয়। শ্রম আইনের উল্লেখিত ধারায় বলা রয়েছে, দোকান বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতি সপ্তাহে অন্তত দেড় দিন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে; কোন এলাকায় কোন প্রতিষ্ঠান কোন দেড় দিন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে, তা প্রধান পরিদর্শক নির্ধারণ করবেন এবং কোনো দোকান রাত ৮টার পর খোলা রাখা যাবে না।
এ প্রসঙ্গে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, রাত ৮টার পর দোকানপাট, শপিং মল ও বাজার বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি সেবা দেওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, যেমন-হাসপাতাল, ফার্মেসি, কাঁচাবাজার-এগুলো খোলা থাকবে।

ব্যবসায়ী নেতারা ঈদুল আজহার কারণে ১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। এই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী জানান, বাড়তি ২ ঘণ্টা দোকান খোলা রাখার বিষয়ে অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার মন্ত্রণালয় অনুরোধ জানাবে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সম্প্রতি এই নির্দেশনা দিয়েছে।

শ্রম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, সোমবার থেকে রাত ৮টার পর দোকানপাট, শপিং মল ও বাজার বন্ধ থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রম মন্ত্রণালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ব্যাত্যয় ঘটলে শ্রম আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির জেরে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা অন্যদিকে করোনাভাইরাসের চোখ রাঙানিতে এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সর্বস্তরের সচেতন নাগরিকেরা। এতে করে করোনার প্রকোপ কমে আসবে অন্যদিকে অফিস শেষে রাতে বাসায় ফিরতেও সুবিধা হবে বলে জানান তারা। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে তারা বলেন, সরকার বরাবরই ব্যবসায়ীদের বিভিন্নভাবে সুবিধা দিয়ে আসছে। তারা আবেদন করলেই জিনিসপত্রের দাম বাড়ে ভ্যাটও মওকুফ হয়। জনগনের কোন লাভ হয় না। সম্প্রতি বাজেটেও ব্যবসায়ীদের স্বার্থই রক্ষা করা হয়েছে বলে মত দেন তারা। তাই শুধু সিদ্ধান্ত নিলেই হবে না, বরং তা বাস্তবায়নের দিকে জোর দেয়ার তাগিদ তাদের।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকির স্বাক্ষরিত চিঠিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে রাত ৮টার পরে দেশে দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপনি বিতান, কাঁচাবাজার বন্ধ রাখার নির্দেশনা জানানো হয়।



 

Show all comments
  • Selim Ahmed ২০ জুন, ২০২২, ৬:১৮ এএম says : 0
    সিনেমা থিয়েটার ক্লাব খোলা থাকবে বাহ! এগুলো কবে থেকে জরুরি সেবা হলো সেটাই বুঝলাম না
    Total Reply(0) Reply
  • Khokon Datta Raj ২০ জুন, ২০২২, ৬:১৮ এএম says : 0
    ভাল উদ্যোগ নিয়েছে সরকার এতে সবার ই একটু বেশি বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ হয়েছে।তাতে মানুষ এর শরীর মন ব্যাবসা ভাল হবে।ফ্যামিলেকে কে ও একটু বেশি সময় দিতে পারবে। সাধুবাদ জানাই এমন উদ্যোগ কে।
    Total Reply(0) Reply
  • Rafiqul Islam ২০ জুন, ২০২২, ৬:১৮ এএম says : 0
    ঢাকা শহরে নিরাপত্তা বাতির কত অভাব সেটা রাত ৮টার পরে দোকান বন্ধ হলেই টের পাওয়া যাবে... মুদি দোকান ও কাঁচা বাজার খোলা রাখার দাবী জানাচ্ছি।
    Total Reply(0) Reply
  • Fatima Jahan ২০ জুন, ২০২২, ৬:১৯ এএম says : 0
    এটা আরো আগেই করা উচিত ছিলো,,,,রাতে অন্ধকারের অনৈতিক, অবৈধ কাজ বন্ধ হতো।।। মার্কেট বন্ধ হলে সবাই দ্রুত কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরবে,,,পরিবারকে সময় দিতে পারবে,অহেতুক সময় নষ্ট হবে না,,তাড়াতাড়ি ঘুমাবে তাড়াতাড়ি উঠবে,,রাতে ইবাদতের সুন্দর সময় পাওয়া যাবে।।।। সকাল ভোর থেকে নতুন উদ্যমে কাজ করবে
    Total Reply(0) Reply
  • Mohmmed Dolilur ২০ জুন, ২০২২, ১২:৫৯ এএম says : 0
    কিছু দিনের জন্য এই উদ্যোগ সমস্যা নেই,কিন্তু এই সমস্ত দোকান পাঠ এবং প্রতিষ্ঠান যেহেতু সন্ত্রাসী হামলার সৃষ্টি না হয় যেমন লুট পাঠ না হয়,অন্ধকারে ক্ষতির সম্মুখীন না হয়,সেই জন্য সরকার দায়িত্ব নিতে হবে,সব কিছু বন্ধ থাকবে সব জন শূন্য হয়ে যাবে,মাঝখানে জনগণের সব কিছু লুঠ পাঠ করে নিয়ে যাবে,তা হতে পারে না,এমনেতেই সবাই করনার কারনে ক্ষতিগ্রস্ত,সরকার সেই বেপারে চিন্তা করা উচিত,ঠুস করে হুকুম করে দিলাম,তাহা হতে পারে না,মাসে বিদ্যুত ঘাটতির জন্য মাসে দুই তিন এই বেবসতা করা যায়,তাতে সমস্যা হবে না,কিন্তু সব সময় এই আইনে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • mdimran ali ২০ জুন, ২০২২, ১:৪৭ এএম says : 0
    সরকার খুব ভালো একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে,আমি আশাবাদী বাস্তবায়নের জন্য সরকার কঠোর ব্যাবস্থা নিবে ইনশাআল্লাহ, তবে একটা জিনিস বুঝলাম না ক্লাব গুলো খোলা রাখার কি দরকার ছিল? এটা তো কোনো জরুরী সেবা না,এতে পাপের বোঝা বারবে,আশাকরি সরকার বিষয় টা নিয়ে ভাববে,
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

২০ জুন, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ