নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দেশের ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সংবর্ধনা পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত পুরুষ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা ও ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট দলের সদস্যরা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গণভবনে রোববার আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিন দলের প্রত্যেক ক্রীড়াবিদকে পাঁচ লাখ টাকা করে এবং কোচ ও কর্মকর্তাদের দুই লাখ টাকা করে অর্থ পুরস্কার দেন প্রধানমন্ত্রী। এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে সাম্প্রতিক সময়ের সাফল্য ও গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম তুলে ধরেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল। এ সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাইম সোহাগ সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ক্রীড়াবিদদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভবিষ্যতে আরও ভালো খেলতে হবে। যখন খেলতে নামবে, তখন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মানসিকতা নিয়ে নামবে। আমি সব সময় তোমাদের পাশে আছি। তোমাদের যখন যা লাগে আমি দেবো।’ দেশের অসহায় ক্রীড়াবিদ, সংগঠক এবং তাদের পরিবারকে নিয়মিতই সহায়তার অনুদান দিয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঠিক একইভাবে দেশের জন্য সাফল্য বয়ে আনা ক্রীড়াবিদদেরও সংবর্ধনা দিতে কার্পন্য করেন না তিনি। এ ধারাবাহিকতায় এবার সংবর্ধনা পেল পুরুষ জাতীয় ফুটবল দল, অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দল এবং ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড টুর্নামেন্টে সেরার খেতাব জেতা ক্রিকেট দল।
২০২০ সালে মুজিববর্ষে নেপাল জাতীয় দলের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জেতা ফুটবল দলের সদস্য তারকা ফুটবলার তপু বর্মণ। ইনজুরির কারণে প্রায় ছয় মাস তিনি মাঠের বাইরে। এই সময়টা তার খুব কষ্টে কেটেছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সংবর্ধনা পাওয়ার পর অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে তপু। তিনি বলেন, ‘ইনজুরিতে পড়লে খুব কঠিন সময় যায় ক্রীড়াবিদদে। আজ (রোববার) প্রধানমন্ত্রীকে খুব কাছ থেকে দেখলাম এবং ফুটবলের জন্য সংবর্ধনা পেলাম এটা আমাকে মানসিকভাবে দারুণ উজ্জীবিত করেছে।’ তপু যোগ করেন, ‘করোনাকালীন সময়ে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। বর্তমানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ দেশের প্রায় কোটি মানুষ। এর মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে ডেকে সম্মানিত করেছেন। স্বাভাবিক সময় হলে হয়তো আমরা ছবি তুলতে পারতাম এবং কুশলাদি বিনিময় হতো। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাওয়াত দিয়েছেন। সামনে আবার ভালো কিছু অর্জন করে পুনরায় প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার আশা রাখি।’
জামাল-তপুদের সঙ্গে সংবর্ধনা পেয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাজয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলও। ২০২১ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন মারিয়া মান্ডারা। ওই দলের প্রত্যেক ফুটবলারও পাঁচ লাখ এবং কোচ ও কর্মকর্তারা দুই লাখ টাকা করে অর্থ পুরস্কার পেয়েছেন। সংবর্ধনা পেয়ে নারী ফুটবল দলের দলনেতা জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘খেলাধুলাকে অত্যন্ত ভালবাসেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ করে নারী ফুটবলের প্রতি উনার সুনজর রয়েছে। নারী ফুটবলাররা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সংবর্ধনা পেয়ে অনুপ্রাণিত হয়েছে। তারা সামনের টুর্নামেন্টে সাফল্য পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আবারো সংবর্ধনা নিতে চায়।’
তবে নারী ফুটবল দলের ক’জন ফুটবলার গণভবনে যেতে পারেননি। রোববার থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। তাই পরীক্ষার্থী ফুটবলারদের নাম বাদ দিয়েই বাফুফে গণভবনে তালিকা পাঠিয়েছিল। বন্যার কারণে পরীক্ষা স্থগিত হলেও পরবর্তীতে আর নাম সংযোজনের সুযোগ ছিল না বাফুফের। এদিকে নারী ও পুরুষ ফুটবল দলের পাশাপাশি ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড দলও প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা পেয়েছে। গত মার্চে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত চারজাতি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। তিন দলের ৬৬ জন ক্রীড়াবিদ এবং কোচ ও কর্মকর্তা মিলিয়ে ২২ জন সহ মোট ৮৮ জন প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা পেয়েছেন। ক্রীড়াবিদদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ ফুটবলার, ২৩ জন নারী ফুটবলার এবং ১৮ জন প্রতিবন্ধী ক্রিকেটার রয়েছেন।
৮৮ জনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারজনকে ডেকে তাদের হাতে উপহার তুলে দেন। এরা হলেন- পুরুষ ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা, নারী দলের অন্যতম ফুটবলার মনিকা চাকমা এবং ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ফয়সাল খান। বাকি ৮৪ জনের উপহার তাদের হাতে হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।