Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশের বিস্ময়ে যুক্তরাষ্ট্র বিস্মিত

‘র‌্যাব ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের নির্বাচন দেখতে চায় বাইডেন প্রশাসন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়নের (র‌্যাব) সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করে। ওই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে ‘র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞায়’ বাংলাদেশ সরকারের বিস্ময় প্রকাশ করায় যুক্তরাষ্ট্র বিস্মিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় কর্মরত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। দূতাবাসের মুখপাত্র কার্লা থমাসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, অনেকদিন থেকে মানবাধিকার ইস্যুতে আমরা বাংলাদেশকে সতর্ক করে আসছি। মানবাধিকারের নিয়ে উদ্বেগের কারণে ২০১৮ সালেই আমরা র‌্যাবের প্রশিক্ষণ দেয়া বন্ধ করেছিলাম। বেশ কয়েক বছর ধরে আমরা আমাদের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এসব উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও এটি তুলে ধরেছি। ফলে নিষেধাজ্ঞাটা বিস্ময় হিসেবে এলেও কিন্তু আমাদের যে উদ্বেগ ছিল সেটি নিয়ে বিস্ময় থাকার কথা নয়।

মার্কিন দূতাবাস ‘অ্যামটক’ নামে সাক্ষাৎকারধর্মী নতুন এক প্রোগ্রাম চালু করেছে। তারা বলছে এটি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার হবে। গত শুক্রবার প্রচারিত অ্যামটককের উদ্বোধনী পর্বের অতিথি ছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। মুখোমুখি ওই অনুষ্ঠানে তিনি সম-সাময়িক বিভিন্ন ইস্যু তথা মানবাধিকার, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন, জিএসপি সুবিধা, বাংলাদেশে মার্কিন ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ, বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার সুযোগ বাড়ানো, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ বছরের বন্ধুত্ব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। তিনি বলেন, এ মহুর্তে আমি বাংলাদেশের চেয়ে ভালো কোনো জায়গায় থাকার কথা ভাবতে পারছি না। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো দল বা প্ল্যাটফর্ম বা কোনো কিছুরই পক্ষ নিই না। তবে আমরা যা দেখতে চাই তা মনে হয় বাংলাদেশের সব মানুষই দেখতে চান। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে অনুষ্ঠিত হওয়া একটি নির্বাচন যেখানে বাংলাদেশের মানুষ তাদের পরবর্তী নেতাদের বেছে নিতে পারবে। অবাধ, প্রতিযোগিতামূলক সহিংসতামুক্ত নির্বাচন প্রক্রিয়া চাই যা হবে দমনপীড়নমুক্ত।

এদিকে বাংলাদেশে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ মানবাধিকার লংঘনের গুরুতর অভিযোগগুলো নিয়ে আলোচনা এবং বাংলাদেশের সর্বজনীন মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট ঢাকা আসছেন। আগামী আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ঢাকায় আসতে পারেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন কয়েক মাস আগে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, ঢাকায় জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মানবাধিকার সেল হচ্ছে। তিনি বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মানবাধিকার সেল গঠনের চিন্তা করছে। যাতে মানবাধিকারের বিষয়গুলো আমরা আরও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে পারি।

‘অ্যামটক’ নামে সাক্ষাৎকারধর্মী নতুন এক প্রোগ্রামে মার্কিন রাষ্ট্রদূস পিটার হাস বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ বছরের বন্ধুত্বের চিত্র তুলে ধরে বলেন, কী অসাধারণ সব অর্জন করেছে বাংলাদেশ। যে দেশের জন্ম হচ্ছে যুদ্ধের মধ্য থেকে, আর্থ-সামাজিক অবস্থার দিকে তাকালে দেখবেন এই ৫০ বছরে বাংলাদেশ কী অসাধারণ উন্নয়ন করেছে। এই রূপান্তর ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কেও। এ দেশের অর্জনে আমরা ৮ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছি। এটি করেছি বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তার জন্য। এখনো আমরা একই সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশকে বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, যেখানে কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্যতা থেকে বেরিয়ে এসেছে। শিশুমৃত্যুর হার কমানো, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে রোমাঞ্চ বোধ করছি। আমরা ততটাই দ্রুত যেতে প্রস্তুত যতটা দ্রুত গতিতে বাংলাদেশ এই অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে চায়। আমরা অনেক অনেক ক্ষেত্রে কাজ করতে চাই। যার অন্যতম হলো বিদ্যমান নিরাপত্তা সহযোগিতা। সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমরা অনেক দিন ধরে যৌথ মহড়া করে যাচ্ছি, বাংলাদেশ ও তার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চাই আমাদের কিছু সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি নিয়েও। দ্বিতীয় হলো গণতন্ত্র ও মানবাধিকার। আমরা উভয়ই প্রতিষ্ঠিত হয়েছি গণতন্ত্রের ধারণার ওপর দাঁড়িয়ে। আমাদের বেলায় সে ধারণা হলো প্রতিনিধিত্ব ছাড়া কর আরোপ নয়। আর তাই, বিষয়টি নিয়ে আমাদের অনেক কিছু করার আছে। তবে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের কিছু উদ্বেগও আছে এই বাংলাদেশে, যেগুলো নিয়ে কথা বলতে আমরা কুণ্ঠিত নই। কিন্তু এসব আলোচনা হতে হবে খোলামেলা। উপলব্ধি করতে হবে যে আমরা কাজ করছি এসব নিয়েও। আর শেষ জায়গাটি হলো অর্থনীতি, যেটিকে আমি সামনের দিনে অসাধারণ অগ্রগতির একটি ক্ষেত্র হিসেবেই দেখি। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমি শুধু বলবো, এটি ন্যায্য নয় কেবল এই অর্থে যে আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক বছরে ৮ বিলিয়ন, ১০ বিলিয়ন ডলারের।

বাংলাদেশের বাজার নিয়ে মার্কিন ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রচণ্ড উচ্ছাস আছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, এখানকার সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দ্রুত প্রবৃদ্ধির কারণে এই উচ্ছাস। এখানকার ক্রম-বর্ধনশীল মধ্যবিত্ত শেণির কারণেও এই আগ্রহ। আমার মনে হয় যে বাংলাদেশ কাজ করতে পারে নিজেদের আরও আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করতে। এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির জন্য নয় বরং বাংলাদেশের নিজস্ব বেসরকারিখাতের বিকাশের জন্যেও।

এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, সবচেয়ে বড় ইস্যুগুলোর মধ্যে যেটি প্রায়ই বাংলাদেশের সরকার সামনে আনে, তা হলো জিএসপি সুবিধা ফের চালু করার অনুরোধ। জিএসপি হলো জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র উন্নয়নশীল দেশগুলোকে কিছু শুল্ক ছাড় দেয়। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করে ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর। সেই ট্র্যাজেডির পর আমরা শ্রম অধিকার এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশের কাছে অনেকগুলো বিষয় তুলে ধরেছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বাংলাদেশ এখনো সেসব পূরণ করেনি। একটি ভ্রান্ত ধারণা আছে যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প জিএসপি সুবিধা পাওয়ার যোগ্য, যেটি তারা নয়। এখন আসল সমস্যা হলো বাংলাদেশ যতক্ষণ না জিএসপি সুবিধার জন্য যোগ্য হচ্ছে ততক্ষণ এটি অংশগ্রহণ বা তহবিল গ্রহণের অনুমতি পাবে না আমাদের নতুন ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কর্পোরেশন থেকে।

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর নিরাপত্তা সহযোগিতার ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, মানুষ র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে, চলমান অন্যান্য সহযোগিতার বিষয়গুলো ভুলে যাচ্ছে। আমরা পারস্পরিক সহযোগিতাও করি। আমরা সব ধরনের বিষয়ে সহযোগিতা করি যেমন আইনপ্রয়োগ, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও সামুদ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এবং এসব বিষয়ে আমাদের খুব গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক রয়েছে। এ ছাড়াও আমরা বিচারবিভাগ ও আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ দেই। পুলিশের জন্যও আমাদের অনেক প্রশিক্ষণ রয়েছে। আমরা এই যে এত প্রশিক্ষণ ও অংশীদারিত্ব করছি সামনে তা চালিয়ে যেতে এবং আরও গভীর করতে আমরা খুবই আগ্রহী। র‌্যাবের বিষয়টি আছে যেখানে আমরা গত ডিসেম্বরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি। এবং তারপর অনেকবার শুনেছি যে বাংলাদেশ এতে কতো অবাক হয়েছে! সম্ভবত আমরাও প্রায় বিস্মিত তাদের বিস্ময় দেখে। কারণ ২০১৮ সালে আমরা প্রশিক্ষণ দেয়া বন্ধ করেছিলাম র‌্যাবকে, কারণ মানবাধিকারের নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ছিলো। বেশ কয়েক বছর ধরে আমরা আমাদের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এসব উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। আমরা বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও এটি তুলে ধরেছি। ফলে নিষেধাজ্ঞাটা বিস্ময় হিসেবে এলেও কিন্তু আমাদের যে উদ্বেগ ছিল সেটি নিয়ে বিস্ময় থাকার কথা নয়। র‌্যাব ইস্যুতে মার্কিন দূত আরো বলেন, আমাদের এই সম্পর্কে অন্য দ্বন্দ্বও রয়েছে। এতো গভীর এবং বিস্তৃত সম্পর্কের মধ্যে কিছু বিষয়ে দ্বন্দ্ব থাকাটাই স্বাভাবিক। বৈঠক এবং আলোচনায় আমরা আমাদের চাওয়াটা বললাম। বাংলাদেশ সরকার তার কথাটা বললো। কিন্তু এই দ্বন্দ্ব বা ভিন্নমতের কারণে আমরা পরস্পর থেকে দূরে সরে যাবো না বরং আমরা এগিয়ে যাবো। বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আন্তর্জাতিক মানের চাওয়া জানিয়ে মার্কিন দূত বলেন, প্রথমত: আমি স্বীকার করছি যে, যুক্তরাষ্ট্র সব কিছু একেবারে নিখুঁত নয়। আমাদের সংবিধান বলে আরও বেশি নিখুঁত হতে। যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্রের উন্নততর চর্চা নিশ্চিতে আর কী কী করা যায় তা নিয়েই সেই সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। আমরা সত্যিই সংগ্রাম করছি এবং খোলাখুলি বিতর্ক করছি গোটা যুক্তরাষ্ট্রে। আবার, মানুষ দেখেছে কীভাবে আমাদের বিগত জাতীয় নির্বাচনগুলোতে কারচুপির অভিযোগ এসেছে। এ নিয়ে আদালতগুলোতে মামলাও হয়েছে। এর সবই এটি নিশ্চিত করার অংশ যে গণতন্ত্র চলমান আছে। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের জন্য এক বছরেরও বেশি সময় আছে। আমি এটিও স্পষ্ট করতে চাই যে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পছন্দ নেই। আমাদের কোনো ভোট নেই। আমরা কোনো দল বা প্ল্যাটফর্ম বা কোনো কিছুরই পক্ষ নিই না। সেটি আমাদের কাজ নয়। তবে আমরা যা দেখতে চাই তা মনে হয় বাংলাদেশের সব মানুষই দেখতে চান। তা হল, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে অনুষ্ঠিত হওয়া একটি নির্বাচন যেখানে বাংলাদেশের মানুষ তাদের পরবর্তী নেতাদের বেছে নিতে পারবে। আমরা এমন একটি অবাধ, প্রতিযোগিতামূলক সহিংসতামুক্ত নির্বাচন প্রক্রিয়া চাই যা হবে দমনপীড়নমুক্ত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাবে। আমার মনে হয় এটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত। নির্বাচন আসলে এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে ফলে এটি দেখা জরুরি যেন সবাই এখন থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে নিরাপদ ও সুরক্ষিত বোধ করে যে, কোন পর্যায়ে তাদের অংশগ্রহণ থাকবে এবং কী কী থাকবে না আগামী নির্বাচনে ।

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে গন্তব্য হিসেবে বেছে নিচ্ছে। এমন রিপোর্টের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাক্ষাৎকারে মার্কিন দূত বলেন, এটা ভালো কথা।

জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ঢাকায় মানবাধিকার সেল : বাংলাদেশ চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘকে চিঠি দিয়ে ৬০ জনের গুমের কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে এর বাইরেও আরো ৬৭ জন গুমের সুনিদৃষ্ট তথ্য তাদের কাছে রয়েছে। এ সংক্রান্ত ৩৬ পৃষ্টার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এখন র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার সেল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জানুয়ারি মাসে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সত্য তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি। যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রীদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সেখানকার মিশনও এটা নিয়ে কাজ করছে। র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলাপ হয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরদের এ বিষয়ে চিঠিও দিচ্ছেন। আমাদের মন্ত্রণালয়ে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মানবাধিকার সেল গঠনের চিন্তা করছি। যাতে এ বিষয়গুলো আমরা আরও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে পারি। তবে মানবাধিকার লংঘনের বিষয়টি মার্কিনীদের কাছে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে প্রকৃত ক্ষেত্রে ঘটনা তেমন নয়। এ ক্ষেত্রে সবাইকে প্রকৃত সত্য জানার চেষ্টা করতে বলেছি। মানবাধিকার ইস্যুতে আমাদের যেসব প্রাপ্তি আছে সেগুলোও তাদের জানানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করতে হলে সেটাও করব।

এদিকে বাংলাদেশে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ মানবাধিকার লংঘনের গুরুতর অভিযোগগুলো নিয়ে আলোচনা এবং বাংলাদেশের সর্বজনীন মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আগামী আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট ঢাকা আসছেন। হাইকমিশনার এবং তার টিমকে যথাযথ প্রটোকলে স্বাগত জানানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ১৪ থেকে ১৭ আগস্ট সম্ভাব্য একটি তারিখ ধরে অন্যান্য প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ##



 

Show all comments
  • Bulbul Hossain ১৯ জুন, ২০২২, ১০:১২ এএম says : 0
    আমেরিকার সাম্প্রতিক গুলি বর্ষণের একাধিক ঘটনা প্রমাণ করে যে ওদের চেয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার ও জননিরাপত্তায় বেশ এগিয়ে। Rab এর প্রতি নিষেধাজ্ঞা ওদের বশীকরণ কূট রাজনীতির নগ্ন প্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Omar ১৯ জুন, ২০২২, ১০:১২ এএম says : 0
    র‍্যাব বাহিনী বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাহিনী।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Toufik ১৯ জুন, ২০২২, ১০:১২ এএম says : 0
    জাতীয় নির্বাচন টা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করে দেবার ব্যবস্থা করলেই হবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মার্কিন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ