বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে
মহারশি নদীর পানি বেড়ে আবারও শেরপুরের ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার
নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ১৭ জুন শুক্রবার ভোর থেকে মহারশি ও সোমেশ্বরী
নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার সদর বাজার, উপজেলা পরিষদ চত্বর ও
আশপাশের এলাকা প্লাবিত হয়। এর আগে গত ৯ জুন পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতীতে বন্যা
নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে উপজেলার অন্ততঃ ৪০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। এক
সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় দুর্ভোগে
পড়েছেন স্থানীয় মানুষজন।
জানা গেছে, শুক্রবার ভোর থেকে মহারশি নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর
ইউনিয়নের অন্তত পাঁচ গ্রাম এবং সোমেশ্বরী নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায়
ধানশাইল ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে
বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। পানির তোড়ে শুক্রবার রামেরকূড়া গ্রামের
বাঁধের সাথে একটি বাড়ি ও মুরগীর খামার ভেসে গেছে। সেই সাথে ওই গ্রামের
বেশ কয়েকটি বাড়ির মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ায় স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস বিভাগ
উদ্ধারের চেষ্টা করছে। প্রবল পানির স্রোত থাকায় নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র
চলে গেছে।
এদিকে নালিতাবাড়ী উপজেলার চেল্লাখালী ও ভোগাই নদীর পানি বেড়েছে।
চেল্লাখালি নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ১৭৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত
হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি
গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ঝিনাইগাতী বাকাকুড়া গ্রামের বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, রাইতে এল্লা
মেঘ আইলো, সহালেই দেহি আমার বাড়ি উডানে পানি, পরে চুলার মধ্যে
আগুন দিবার পাইনি। তাই বিস্কুট খাইয়ে আছি। একই গ্রামের বাসিন্দা
আফজাল বলেন, ঢলডা সহালেই আইছে। পরে খালি বাড়তেই আছে, মেলা মানুষ
ঘর থনে বাইরে আবার পাইতাছে না।
রামেরকূড়া গ্রামের বাসিন্দা ফকির মিয়া বলেন, হডাত কইরি ঢল আইলো,
আইয়ে বাধটা ভাঙ্গিয়ে গেল গা। সাথে সাথে ওইহানে এডা ঘর আছিল,
মুরগীর খামার আছিল, সব পানির সাথে গেছে গা।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আল মাসুদ বলেন,
বৃষ্টি ও উজানের পানির কারণে কিছু জায়গায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। পাশাপাশি
স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা
করি, খুব দ্রুতই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ হবে। আর পানি কমে যাওয়ার পর
সংস্কার কাজ শুরু হবে।
এ ব্যাপারে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.
শাহজাহান মিয়া বলেন, গত রাতে জেলা সদরে ৮৫ মিলিমিটার ও নালিতাবাড়ী
উপজেলায় ১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া সকালে
নালিতাবাড়ীর চেল্লাখালি নদীর পানি বিপদসীমার ১৭৬ সেন্টিমিটার ওপর
দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে
জানিয়েছি। তারা সব সময় নির্দেশনা দিচ্ছেন। ঢলের পানি নেমে গেলে
ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণসহ বরাদ্দ সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।