Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চেয়ারম্যানের লাঞ্চিত সইতে না পেরে আত্মহত্যা করলো আ.লীগ নেতা

যশোর ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০২২, ৭:৩৬ পিএম

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের দাউদ শেখ (৭০) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা বিষপান করে প্রাণ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বজনদের দাবি- উপজেলার বারবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের মিছিল মিটিংয়ে না যাওয়ায় অকথ্য নির্যাতন, মারধর ও বয়োবৃদ্ধদের চুল দাড়ি ধরে লাঞ্চিত হওয়ার অপমান সইতে না পেরে তিনি প্রাণ দিয়েছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সকালে যশোর আড়াইশ শষ্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। দাউদ হোসেন কালীগঞ্জ উপজেলার ৯ নম্বর বারবাজার ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি।

স্বজনরা বলেন, গত ৭ জুন উপজেলার বারবাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে একটি প্রতিবাদ মিছিল হয়। মিছিলে না যাওয়ায় ওইদিন সন্ধ্যায় একটি চায়ের দোকানে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ। এরপর রাতে তিনি ক্ষোভে-দুঃখে বিষপান করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বারবাজার অপু ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে পকেট থেকে তিনি একটি চিরকুট বের করে দেন। এ সময় চেয়ারম্যানের অনুসারী কনক, জাহিদসহ কয়েকজন চিরকুটটি ছিনিয়ে নেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
দাউদ শেখের ছেলে আলিম হোসেন বলেন, ৭ জুন রাতে তার বাবা বিষপান করেছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি মারা যান। বাবার কাছে থাকা চিরকুটের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।
চেয়ারম্যানের মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ কথা জেনে চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলাম। চেয়ারম্যান বলেছেন- মিছিলে না যাওয়ায় চাচার মুখ ধরে একটু ঘুরিয়ে দিয়েছিলাম। চাচা-ভাস্তে ইয়ার্কি মেরেছি, আর কিছু করিনি।
নিহতের নাতি শাকিল হোসেন বলেন, নানাকে প্রথমে বারবাজার অপু ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানে গেলে নানা একটি চিরকুট বের করে দেন। চিরকুটটি রাকিব নামের একটি ছেলে পড়ে। সেই চিরকুটে লেখা ছিল চেয়ারম্যান তাকে অপমান ও মারধর করেছে। তার মৃত্যুর জন্য চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ দায়ী বলেও চিরকুটে লেখা ছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাকিব হোসেন বলেন, বারবাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় দাউদ শেখের সঙ্গে দেখা হয়। তখন উনার মুখ দিয়ে বিষের গন্ধ বের হচ্ছিলো। তখন জানতে চাইলে উনি বিষের বোতলও দেখান। পরে তাকে বারবাজার অপু ক্লিনিকে নিয়ে যাই। এ সময় তার পকেটে থাকা একটি চিরকুট দেন। চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমাকে দোকানে অপমান করা হয়েছে। চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী।’ চিরকুটে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়ে গেছেন। এরপর চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকা কনক ও জাহিদ চিরকুটটি ছিনিয়ে নেয়।
তবে ৯ নম্বর বারবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার (দাউদ হোসেন) মাথায় প্রোব্লেম ছিল। সে খায় স্পিরিট। আর এখন আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে প্রতিপক্ষরা।
কালীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, আমি শুনেছি দাউদ শেখ নামে এক ব্যাক্তি বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। যশোরে ময়নাতদন্ত সমপন্ন হয়েছে। রিপোর্ট পেলে আরও বিস্তারিত বলতে পারবো। তিনি আরো বলেন, তার মারধরের বিষয়টি পুলিশকে কেউ জানায়নি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আ.লীগ নেতা

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ