Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতে মহানবী (সা.)এর অবমাননা : অবিলম্বে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনুন

বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২২, ৭:৪৯ পিএম | আপডেট : ৮:১৬ পিএম, ৭ জুন, ২০২২

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও হজরত আয়েশা (রা.) কে নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও দিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দালের অবমাননাকর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ ভারতে মহানবী (সা.) ও হজরত আয়েশা (রা.) কে নিয়ে অবমাননার প্রতিবাদে অবিলম্বে জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনার জোর দাবি জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, মহানবী (সা.) ও হজরত আয়েশা (রা.)কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করে বিজেপির দুই নেতা বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত করছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে ভারতের ইসলাম বিদ্বেষী কুলাঙ্গারদের অবিলম্বে গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশ ঃ আজ মঙ্গলবার মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের মধুপুরে এক জরুরি পরামর্শ সভায় সংগঠনের আমীর আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর
বলেন, মহানবী (সা.) ও হজরত আয়েশা (রা.) কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করে বিজেপির দুই কুলাঙ্গার নেতা বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত করছে। এ ঘটনায় আরব বিশ্বসহ সারা পৃথিবীতে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিজেপি নূপুর শর্মাকে সাময়িক বরখাস্ত এবং নবীন কুমার জিন্দালকে বহিষ্কার করেছে। এটি সুস্পষ্টভাবে একটি প্রহসন এবং পরিস্থিতি সামলানোর আরেকটি নির্লজ্জ প্রচেষ্টা।
মধুপুর পীর সাহেব ভারত সরকারকে অন্যের ‘বিশ্বাস ও ধর্মের প্রতি সম্মান’ জানানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাসূল (সা.)এর অবমাননা সর্বকালে অগ্রহণযোগ্য ও সবদিক থেকে ধিক্কারযোগ্য। এতে মুসলিমদের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হয়। নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালকে শুধু সাময়িক বহিস্কার নয়, তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যেন ভারতে এমন মন্তব্য করার দুঃসাহস কেউ না দেখাতে পারে সেজন্য জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনেই এর নিন্দা প্রস্তাব আনতে হবে। অন্যথায় মুসলমানদের ক্রোধ ও ক্ষোভ কোনভাবেই প্রশমিত হবে না।
সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ রুহুল আমিনের পরিচালনায় খাস কমিটির পরামর্শ সভায় উপস্থিত ছিলেন, নায়েবে আমির মাওলানা রশিদ আহমদ, মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ ইমাদুদ্দীন, মাওলানা নুরুল হক হামিদী, মাওলানা মিজানুর রহমান (সোনাহাজরা) মাওলানা আবুল কাশেম আশরাফী, মাওলানা মুফতি কামরুজ্জামান, মুফতি মাহবুবুর রহমান নবাবগঞ্জী, মুফতি নাজমুল হাসান বিন নুরী, মুফতি নেসার আহমদ, মাওলানা আব্দুল হান্নান, মাওলানা হারুনুর রশীদ, মাওলানা শেখ সাদী, মুফতি আবু বকর, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মাওলানা শামীম হাসান, মাওলানা আবুল হাসান, মাওলানা ইউনুছ কাসেমী হাঁসাড়া, মাওলানা আবু ইউসুফ ও মাওলানা মাসুম বিল্লাহ।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ঃ বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, যুবসেনা ও ছাত্রসেনা ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে ভারতের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ট সহচর কট্ররপন্থী দল বিজেপির মুখপাত্র রাসূলুল্লাহ (সা.) এঁর শানে কটুক্তি ও চরম অবমাননাকর মন্তব্য করার প্রতিবাদে মুহাম্মদ আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিলোত্তর মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সাংগঠনিক সচিব সৈয়দ মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদী। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এঁর শানে কটুক্তি ও চরম অবমাননাকর মন্তব্য করায় গোটা মুসলিম বিশ্বের হৃদয়ে আগুন জ্বলছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মহান আল্লাহ পাকের মনোনীত হাবীব রাহমাতুল্লীল আলামীনকে নিয়ে ভারতের বিজেপির মূখপাত্র নূপুর শর্মা ও দিল্লির মিডিয়া প্রধান নবীন কুমার জিন্দাল যে মারাত্মক মন্তব্য করেছে তা কখনো একজন ঈমানদার মেনে নিতে পারেনা। এটা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরী করার একটা ইস্যূ মাত্র। রাসূলের (দ.) প্রতি এমন অবমাননাকর মন্তব্যই প্রামণ করে ভারতের বিজিপি সরকার মুসলিম ধর্ম বিদ্বেষী। তিনি এসব কুলাঙ্গারদের অবিলম্বে গ্রেফতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ইসলামী ফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, নূপুরের এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্ব জেগে উঠেছে। সুতরাং বাংলাদেশ একটি মুসলিম দেশ হিসাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বজায়ের লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এর প্রতিবাদ জানাতে হবে।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনার সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিন্সিপাল আবু নাসের মুহাম্মদ মুসা, অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দীন, মুহাম্মদ ইমরান হুসাইন তুষার, মাহমুদুল হাসান রিয়াদ, হাফেজ মুহাম্মদ ওমর ফারুক, মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ আরিফ, নাজমুল হক, গাজী মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও শাফায়াত উল্লাহ, আমান উল্লাহ।
পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রেসক্লাবে এসে মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ঃ জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা মনসুরুল হাসান রায়পুরী ও মহাসচিব শায়খুল হাদিস হাফেজ মাওলানা ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম এক বিবৃতিতে বলেন,ভারতের বিজেপির মুখপাত্র ও তার প্রেস সচিব বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সহধর্মিনী আম্মাজান আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে মুসলিম উম্মাহর কলিজায় আঘাত দিয়েছে। তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে হবে। আমাদের বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাস করতে হবে।
জাতীয় ইমাম পরিষদ বাংলাদেশ ঃ জাতীয় ইমাম পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি আব্দুল্লাহ ইয়াহইয়া ও সেক্রেটারী মুফতি আ ফ ম আকরাম হুসাইন আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে ভারতে নবী (সা.) এর অবমাননার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে ভারতের সব পণ্য নিষিদ্ধ করতে হবে। নেতৃদ্বয় বলেন, ভারতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবমাননা করে নিন্দিত কাজ করেছে। রাসূলের অপমানে কোনো মুসলমান বসে থাকতে পারে না। তারা নবী অবমাননার দৃষ্টান্তমূলক বিচার কার্যকর করতে ভারতের সঙ্গে সকল সম্পর্ক ত্যাগ এবং ভারতে পণ্য বর্জন করতে বিশ্বের মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ লেবার পার্টি ঃ ভারতের মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর সহধর্মিণী মা আয়েশা (রা.) সম্পর্কে চরম অবমাননাকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফারুক রহমান বলেছেন, বিজেপি মুখপাত্র রাসূল (সা.) নিয়ে কটুক্তি করে সারা বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয়ে কুঠারাঘাত করেছে। মুসলমানের কাছে প্রিয় নবীর সম্মান নিজের জীবনের চেয়েও মূল্যবান।
আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, আরব বিশ্ব ইতোমধ্যে মহানবী (সা.) অবমাননার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে। ভারতীয় পণ্য বয়কটের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তাঁরা। এটা প্রিয়নবীর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। দোষী ব্যক্তিদের শুধু দলীয় পদ স্থগিত নয়; বরং তাদেরকে যথাযথ শাস্তির আওতায় আনা এবং প্রকাশ্য ক্ষমা চাইতে হবে। আগামীকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মানববন্ধন কর্মসূচি সফল করার অনুরোধ জানানো হয়।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ঃ বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত মাওলানা আবু জাফর কাশেমী, নায়েবে আমীর শাইখুল হাদীস মাওলানা আবুল কাশেম কাশেমী, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আলহাজ আজম খান , কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর আমির মাওলানা মুহাম্মদ হোসাইন আকন্দ সেক্রেটারি মুফতি মাহমুদ আলী মাকছুদ খান মামুন, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন আজমি পীর সাহেব ইব্রাহিম বিন আলী মাওলানা মাহবুবুল্লাহ পীর সাহেব টেঙ্গারচর দরবার শরীফ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ভারতে মহানবী (সা.) ও হযরত আয়েশা (রা.) এর অবমাননায় মুসলিম বিশ্ব আজ প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ইতিমধ্যে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে। সউদী আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিজেপি মুখপাত্ররা মহানবী(সা.)কে অপমান করেছে এবং সউদী আরব এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কুয়েত ও কাতার ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ''কাতার চায়, ভারত সরকার অবিলম্বে ওই মন্তব্যের নিন্দা করুক এবং সারা বিশ্বের মুসলিমদের কাছে ক্ষমা চাক।'' কুয়েতও ভারত সরকারকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলেছে। ইরান ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকে জানিয়েছে, এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। প্রতিবেশী মুসলিম দেশ দুটি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানও এর তীব্র নিন্দা করেছে। তারা বলেন, ভারতের উগ্রবাদী ক্ষমতাসীন দল বিজেপির ক্রমাগত ইসলাম বিদ্বেষ, ঘৃণা এবং ইসলাম নির্মূলের নোংরা রাজনীতির সাম্প্রতিক অবস্থান ভারতকে কঠিন এক কূটনৈতিক সমস্যায় ফেলে দিয়েছে। তারা অবিলম্বে দুষ্টচক্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান। গোটা মুসলিম বিশ্ব যেভাবে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও রাষ্ট্রীয়ভাবে সেই রকম প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হোক।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঃ ভারতীয় ক্ষমতাসীন দল, চরম হিন্দু মৌলবাদী জনতা পার্টির মূখপাত্র নূপুর শর্মা ও তার প্রেস সচিব নবীন জিনদাল কর্তৃক মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর সহধর্মিনী আম্মাজান হযরত আয়শা সিদ্দীকা (রাযি.)কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর শায়খুল হাদীস আল্লামা ইসমাঈল নূরপুরী ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ। নেতৃবৃন্দ আজ এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে আল্লাহ তায়ালা বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছেন। তিনি ধর্ম বর্ণ দল মত নির্বিশেষে সকল মানবের জন্য রাসূল হিসাবে প্রেরিত হয়েছিলেন। পৃথিবীর সকল ঐতিহাসিক তাঁকে সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ চরিত্রের অধিকারী মহামানব হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তাঁর সহধর্মিনীগণও স্বতী স্বাধী রমণী এবং সর্বকালের শেষ্ট ও পুত পবিত্র নারীগণই ছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মাঝে মধ্যে কিছুসংখ্যক কুলাঙ্গার নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে তাদের সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করে বসে। যা নবীপ্রেমিকদের কষ্টের ও গোটা মানবজাতির জন্য দুঃখজনক ও লজ্জার। নেতৃবৃন্দ বলেন, ইতিমধ্যে ওআইসি সহ মুসলিম রাষ্ট্রগুলো এর নিন্দা ও প্রতিবাদে কঠিন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারকেও অবিলম্বে এর কঠিন প্রতিবাদ ও জাতীয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাশ করতে হবে।
জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশ ঃ ভারতে দিল্লি বিজেপির মিডিয়া বিভাগের সাবেক প্রধান কুমার জিন্দাল এবং বিজেপির প্রবক্তা নূপুর শর্মার ইসলাম ও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে চরম বিতর্কিত ও আপত্তিজনক বক্তব্য আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজ জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে বক্তারা এ কথা বলেন। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এ ধরনের উস্কানিমূলক আপত্তিকর বক্তব্য চরমভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অন্যতম কারণ। রাজনৈতিক ও সামাজিক শিষ্টাচার বহির্ভূত এ বক্তব্যে আমরাসহ গোটা মুসলিম বিশ্ব গভীর মর্মাহত। জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশ মনে করে, মুসলিম মিল্লাতের পক্ষ থেকে দেশ ও জাতির অভিভাবক হিসেবে বর্তমান সরকারের উচিত, '''রাষ্ট্রীয়ভাবে এ জঘন্য কর্মকা-ের তীব্র প্রতিবাদ জানানো এবং দোষীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার''' দাবি তোলা। উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন, সভাপতি ক্বারী আবুল হোসাইন,মহাসচিব মুফতী মিনহাজ উদ্দিন, মাওলানা জাফর আহমদ শাহতলী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা তসলিম আহমদ,মাওলানা শহিদুল আনোয়ার সাদী ,মাওলানা শামসুল হক ওসমানী, মাওলানা মীর হেদায়েতুল্লাহ গাজী, মুফতি আনিসুল হক, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা রহমত উল্লাহ, মাওলানা সোলাইমান আলী।
আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ ঃ আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশ এর সভাপতি হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা ইয়াহইয়া ও মহাসচিব আল্লামা মুহিউদ্দীন রাব্বানী এক বিবৃতিতে বলেন, বিজেপি নেতারা মহানবী (সা.) এর সম্পর্কে যে মন্তব্য করেন, তা বেশ আক্রমণাত্মক এবং অবমাননাকর। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি।
নেতৃদ্বয় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মহানবী মুহাম্মদ (সা.) ও উম্মাহাতুল মু'মিনিন আয়েশা (রা.) কে নিয়ে বিজেপি নেত্রীর অবমাননাকর বক্তব্য ও বিজিপির মিডিয়া সেলের প্রধান নবীন জিন্দালের টুইট বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলমানকে আহত করেছে। যেহেতু ভারতের সরকারি দলের জাতীয় মুখপাত্র এ হীন বক্তব্য দিয়েছে এবং তাদের মিডিয়া সেলের প্রধান মহানবী (সা.) কে অবমাননা করে টুইট করেছে তাই এটা ইসলাম ধর্মের ওপর মারাত্মক আঘাত হিসেবে বিবেচিত হবে।

তারা আরো বলেন, সারা বিশ্বের মুসলমানরা প্রতিবাদ করার পর বিজেপি তাদের দুই মুখপাত্রকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। অ্যামেরিকানরা এটাকেই বলে, গুজ কপ-ব্যাড কপ রুটিন। প্রথমে নিজেদের কর্মীদের আপত্তিকর মন্তব্য করতে দাও। তারপর চাপের মুখে ব্যবস্থা নাও, যাতে মনে হয় তারা মধ্যপন্থা নিয়ে চলছে।
তারা বলেন, মহানবী(সা.) কে অপমান করা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে তাদের কটুক্তি ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য মূর্খতা এবং তূলনামুলক ধর্মতত্ত্ব সম্পর্কে অজ্ঞতার প্রমাণ। আজ আরব বিশ্বসহ সারা বিশ্বের মুসলমানরা এর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন। ভারতীয় পণ্য বয়কটের মতো পদক্ষেপও তারা গ্রহণ করেছেন। এই ধরনের নীরব, কিন্তু প্রভাব বিস্তারক প্রতিবাদে আমরাও শামিল হবো ইনশাআল্লাহ। এটা হবে প্রিয়নবী (সা.) এর প্রতি আমাদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। তারা আরো বলেন, দোষী ব্যক্তিদের ব্যাপারে যথাযথ আইননানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে এবং প্রকাশ্যে তাদের ক্ষমা চাইতে হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ