নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এই ফাইনালের আগে রাফায়েল নাদাল কি একবারও ভেবেছিলেন যে, তরুণ ক্যাসপার রুডের কাছে খোয়াতে পারেন তার ফ্রেঞ্চ ওপেনের ট্রফি? নাকি দৃঢ় বিশ্বাসে অটল থেকে নিজেকেই বলে গিয়েছেন, এই রোলাঁ গারোয় শিরোপা কেবল আমারই? অন্তর্যামী হয়ে সে কথা জানার উপায় না থাকলেও দুই ঘন্টা সতেরো মিনিট ধরে চলা এই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে এক চেটিয়া খেলে রেকর্ড ২২তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন ক্লে কোর্টের রাজা।
এই আসরের প্রথম সেমি ফাইনাল ম্যাচটা মহাকাব্যিক হতে হতেও থেমে গিয়েছিলো জভেরেভের এক অনাকাক্ষিত ইনজুরিতে। ক্রীড়া প্রেমীরা ফাইনালেও ঠিক তেমন উত্তেজনায় ভরপুর এক ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় ছিল গুরু ও শিষ্যের মাঝে! হ্যা, ঠিকই পড়ছেন। রুড যে একাডেমির থেকে উঠে এসেছেন তার মালিক ছিলেন রাফায়েল নাদাল। তবে ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলতে নামা রুড দাড়াতেই পারেননি রাফার সামনে। ম্যাচের শুরু থেকেই ১৪ তম ফ্রেঞ্চ ওপেন জয়ের লক্ষ্যে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকেন রাফা। ১ম সেটে একটা ব্রেক পয়েন্ট আদায় করেন রুড, এই যা। তাছাড়া এই সেটে আর কোন প্রাপ্তি নেই নরোয়েজিয়ান রুডের। ৬-৩ গেমে সেট জিতেন নাদাল।
দ্বিতীয় সেটে অবশ্য দারুণ কামব্যাকের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিলো অষ্টম বাছাই রুড। চার নাম্বার গেমে গিয়ে যখন ব্রেক পয়েন্ট জিতে নেন তখন, তিনি ১-৩ এ সেট এগিয়ে ছিলনে। কিন্তু ওটুকুই, এরপর ৩টি ব্রেক সহ টানা ৫টি গেম জিতে সেটটি নিজের করে নেন স্পেনিশ তারকা নাদাল। আর তৃতীয় সেটে এক কথায় উড়ে যান ২৩ বছর বয়সী ক্যাসপার রুড। এই সেট সরাসরি ৬-০ তে জিতে নিয়ে নিজের ৩৬ তম জন্মদিনে ১৪ তম ফ্রেঞ্চ ওপেনেরে মালিক হলেন নাদাল। একই সাথে এখন তিনি সবচেয়ে বেশি বয়সে রোলাঁ গোয়ায় শিরোপা জিতা খেলোয়াড়। টানা ১১ গেম জিতে দু’হাত উঁচিয়ে নাদাল আরও একবার জানান দেন, এখানেই তিনিই রাজা। ২০০৫ সালে রোলাঁ গাঁরোয় অভিষেকের পর এখানে মাত্র তিনটি ম্যাচ হেরেছেন তিনি। জয়ের পর রাফা তাই বলেন, ‘এই অনুভূতি ব্যক্ত করা বেশ কঠিন, আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোর্টে ৩৬ বছর বয়সে আমি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলবো, এই বিশ্বাস আমার ছিলো না। এই শিরোপা আমার সামনে এগিয়ে যাওয়ার চালিকাশক্তি।’
বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে পুরুষ এককে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড গড়েন নাদাল। পেছনে পড়ে যান নোভাক জোকোভিচ ও রজার ফেদেরার। তাদের সঙ্গে স্প্যানিশ তারকার মেজর জয়ের সংখ্যা বাড়ল আরও; নাদালের গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা হলো ২২টি, দুটি কম নিয়ে যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে জোকোভিচ ও ফেদেরার। চোটের কারণে অনেক দিন ধরেই কোর্টের বাইরে আছেন সুইস তারকা ফেদেরার। জোকোভিচ অবশ্য ছিলেন এই আসরে, কোয়ার্টার-ফাইনালে নাদালের কাছে হেরেই বিদায় নেন সার্ব তারকা। আর সেমি-ফাইনালে দুর্দান্ত লড়াইয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে চোট পেয়ে ছিটকে যান আলেক্সান্ডার জেভেরেভ।
বাস্তবিক অর্থে তাই শিরোপা লড়াইয়ের মঞ্চে নাদালের সামনে শক্ত কোনো চ্যালেঞ্জ ছিল না। চমক দেখিয়ে রুড ফাইনাল পর্যন্ত উঠে এলেও সব সময়ের সেরা খেলোয়াড়দের একজন এবং এই কোর্টের সেরাকে হারাতে অবিশ্বাস্য কিছু করে দেখাতে হতো তাকে। অভিজ্ঞতার ঘাটতি নিয়ে তার কিছুই করতে পারেননি রুড। ম্যাচ শেষে রুডের জন্য শুভকামনা জানালেন নাদাল। ধন্যবাদ দিলেন নিজের দল ও পরিবারকে, ‘ক্যাসপার, এখানে রোলাঁ গাঁরোয় তোমার সঙ্গে ফাইনাল খেলতে পেরে সত্যিই আমি আনন্দিত। তুমি দুর্দান্ত। দুর্দান্ত একটি ক্যারিয়ারের জন্য তোমাকে অভিনন্দন জানাতে চাই। বিশেষ করে এই দুই সপ্তাহ, আমি মনে করি খুব গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমি তোমার, তোমার পরিবার ও তোমার দলের জন্য খুব খুশি। ভবিষ্যতের জন্য আপনাদের সকলের জন্য শুভকামনা রইল। আমার দল, আমার পরিবার, সবাইকে ধন্যবাদ দিতে হবে। এই বছর যা ঘটছে, তা অসাধারণ।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।