পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশের ঢাকা ও ভারতের নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে আন্তঃদেশীয় তৃতীয় যাত্রীবাহী ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস চালু হয়েছে। বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ও ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব গতকাল বুধবার এ ট্রেনের নিয়মিত যাত্রা উদ্বোধন করেন। ভারতের নয়াদিল্লির স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে ভার্চুয়ালি ট্রেনটির ফ্ল্যাগ অফ করেন দুই দেশের রেলমন্ত্রী।
বাংলাদেশের চিলাহাটি স্টেশনে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি পৌঁছায় দুপুর ২টা ৫ মিনিটে। চিলাহাটি স্টেশনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভারত-বাংলাদেশের যৌথ পতাকা দিয়ে স্বাগত জানান। ট্রেনটি প্রায় ৩০ মিনিট যাত্রাবিরতি করে চিলাহাটিতে। ট্রেনটি ভারত থেকে চালিয়ে আনেন সে দেশের চালক বিবেকানন্দ চৌধুরী। চিলাহাটি ইঞ্জিন পাল্টিয়ে সেটি নিয়ে রওয়ানা করেন শাহজাহান আলী। ট্রেনটি চিলাহাটি স্টেশনে পৌঁছলে রেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার, প্রধান বিদ্যুৎ প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান ফিরোজী, পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী মুহম্মদ কুদরত ই-খুদাসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্বাগত জানান। মিতালী এক্সপ্রেস উদ্বোধনের পর টুইট করেছেন ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি তার টুইটে এ পদক্ষেপকে দুই দেশের মধ্যে ঐতিহ্যের পাশাপাশি বর্তমান ও ভবিষ্যৎকে ভাগ করে নেয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেন।
পরে ইঞ্জিন পরিবর্তন করে স্টেশন ত্যাগ করে মিতালী এক্সপ্রেস। চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও চিলাহাটি স্টেশনে যাত্রী ওঠানামার ব্যবস্থা না থাকায় এখন এই ট্রেনের কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না আশপাশের এলাকার মানুষ। তাই এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনার চেয়ে হতাশা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। তবে অনেকে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি এক নজর দেখার জন্য ভিড় করেন চিলাহাটি স্টেশন এলাকায়। ট্রেন আসার সঙ্গে সঙ্গে কেউ কেউ ট্রেনটি ছুঁয়ে দেখেন, অনেকে ট্রেনের সঙ্গে সেলফি তোলেন।
মিতালীতে রংপুর বিভাগের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের জন্য দুটি কোচ বরাদ্দ রয়েছে। এই ট্রেনে ভ্রমণকারী যাত্রীদের অবশ্যই করোনা টিকা গ্রহণের সনদ থাকতে হবে। পাসপোর্ট-ভিসা দেখিয়ে টিকিট সরবরাহ করছে রেল কর্তৃপক্ষ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টেশনে এই ট্রেনের টিকিট মিলছে। পাঁচ বছর পর্যন্ত অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়ে ট্রেনে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসিম কুমার তালুকদার বলেন, মিতালী এক্সপ্রেস চলাচল শুরু করেছে। আপাতত চিলাহাটি স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা করার সুযোগ নেই। তবে ডিসেম্বরের মধ্যে এই স্টেশন থেকে ইমিগ্রেশনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটির পরিচালন সময় ৯ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট। ট্রেনটি ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন পর্যন্ত সপ্তাহে চার দিন চলাচল করবে। ট্রেনটি ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে এনজিপির উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। আর প্রতি সপ্তাহে রোববার ও বুধবার ভারতের এনজিপি থেকে ভারতীয় সময় বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে বাংলাদেশের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া প্রতিটি এসিবাথ সিটের জন্য ৫ হাজার ২৫৫ টাকা, এসি সিট ৩ হাজার ৪২০ টাকা এবং এসি চেয়ার ২ হাজার ৭৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্রেনটি দিনে ৪৫৬ আসন এবং রাতে ৪০৮ আসন নিয়ে চলাচল করবে।
ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকার মোট দূরত্ব ৫৩০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারতীয় অংশে ৮৪ আর বাংলাদেশ অংশে ৪৪৬ কিলোমিটার। তবে মাঝের কোনো স্টেশনে ট্রেনটি থামবে না। যারা এ ট্রেনের যাত্রী হবেন তারা ঢাকায় উঠে নামবেন নিউ জলপাইগুড়ি। আবার যেসব যাত্রী নিউ জলপাইগুড়ি থেকে এই ট্রেনে উঠবেন তারা নামতে পারবেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনে।
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর বাংলাদেশের চিলাহাটি আর ভারতের হলদিবাড়ী রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৫৫ বছর পর ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ২০২১ সালের ২৭ মার্চ যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য মিতালী এক্সপ্রেস উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে করোনাভাইরাস ও ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে যায় মিতালী এক্সপ্রেসের চলাচল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।