নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে দুজনের লক্ষ্য থাকবে অভিন্ন। দুজনই চাইবেন নিজেদের কৌশলের সেরা প্রয়োগ ঘটিয়ে জয় ছিনিয়ে আনতে। মাঠের বাইরে অবশ্য রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তির প্রতি শ্রদ্ধার কমতি নেই ইয়ুর্গেন ক্লপের। আদর্শ হিসেবে মানা এই ইতালিয়ানের ব্যক্তিত্বেও মুগ্ধ লিভারপুল কোচ। আজ রাতে ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে আনচেলত্তির রিয়াল ও ক্লপের লিভারপুল। সাফল্যের বিবেচনায় আনচেলত্তিকে ধরা হয়ে থাকে ফুটবল ইতিহাসের সেরা কোচদের একজন হিসেবে। আর অন্যজন আছেন বর্তমানের সেরাদের কাতারে।
এই দুই কোচের প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ২০১৩-১৪ আসরে। কোয়ার্টার-ফাইনালে সেবার দুই লেগ মিলিয়ে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে ৩-২ গোলে হারিয়েছিল আনচেলত্তির রিয়াল। ওই সময়ে জার্মান ক্লাবটির ডাগআউটে ছিলেন ক্লপ। ওই আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে ‘লা দেসিমা’ (দশম শিরোপা) পূর্ণ করেছিল মাদ্রিদের দলটি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১০ বার মুখোমুখি হয়েছেন আনচেলত্তি ও ক্লপ। তাতে এগিয়ে আছেন রিয়াল কোচ, তিনি জিতেছেন চার বার। ক্লপ জয় পেয়েছেন তিন বার, বাকি তিনটি ম্যাচ হয়েছে ড্র।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালকে সামনে রেখে গতপরশু রাতের সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তির স্তুতি গাইলেন ক্লপ। জানালেন, কোচিংয়ের পাশাপাশি মানুষ হিসেবেও সাবেক এসি মিলান কোচের ভক্ত তিনি, ‘আমার চোখে কার্লো নিঃসন্দেহে বিশ্বের সবচেয়ে সফল কোচদের একজন। তিনি যেভাবে সাফল্যকে দেখেন, এজন্য তিনি আমার কাছে একজন রোল মডেল। আপনার সঙ্গে দেখা হওয়া সবচেয়ে ভালো মানুষদের একজন তিনি, আমি মনে করি তার সম্পর্কে সবাই এমন কথাই বলবে। তার সঙ্গ দারুণ, আসলেই চমৎকার একজন মানুষ এবং আমাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে।’
২০১৯ সালে আনচেলত্তি লিভারপুলের নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এভারটনে যোগ দেওয়ার পর তার সঙ্গে ক্লপের কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। আনচেলত্তির হাত ধরেই ‘মার্সিসাইড ডার্বি’-তে ১০ বছরের বেশি সময় পর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জয় পেয়েছিল এভারটন (২-০)। ১৯৯৯ সালের পর অ্যানফিল্ডে সেটি ছিল এভারটনের প্রথম জয়। আনচেলত্তি এখন এভারটনের ডাগআউটে না থাকায় তাদের মধ্যে আবারও আগের সম্পর্ক ফিরে এসেছে বলে মনে করেন ক্লপ। তবে ইউরোপ সেরার মঞ্চে প্রিয় কোচকে কোনো ছাড় দেবেন না ৫৪ বছর বয়সী এই জার্মান, ‘যখন তিনি এভারটনে ছিলেন তখন আমাদের মধ্যে কিছুটা দুরত্ব তৈরি হয়েছিল, কারণ নিজেদের দায়িত্বের এই বিষয়কে আমরা সম্মান করি। সেটা না থাকলে আমরা কয়েকবার একসঙ্গে ডিনার করতাম। আমরা একেবারেই তা করিনি। আমার পক্ষ থেকে তার প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা রয়েছে। আমি নিশ্চিত যে তিনি সব জায়গায় সবকিছুই জিতেছেন এবং কখনই থামবেন না। আমি সত্যিই তার অর্জনকে সম্মান করি, তবে এই ম্যাচে (ফাইনালে) এর কোনো প্রভাব পড়বে না।’
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে কোচ হিসেবে এর আগে লিভারপুলের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা আছে আনচেলত্তির। ২০০৫ সালের ঐতিহাসিক সেই ফাইনালে প্রথমার্ধে ৩-০ গোলে এগিয়ে ছিল এসি মিলান, দলটির কোচ তখন আনচেলত্তি। দ্বিতীয়ার্ধে ফুটবল ইতিহাসের সেরা প্রত্যাবর্তনের গল্পগুলোর একটি লিখে ৩-৩ গোলে সমতা টেনেছিল লিভারপুল। এরপর টাইব্রেকারে জিতে ট্রফি উঁচিয়ে ধরে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটি। এই মৌসুমে অবশ্য নকআউট পর্বের প্রতিটি ধাপে দারুণ সব ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখে প্যারিসের ফাইনালের টিকেট কেটেছে রিয়াল।
শেষ ষোলোয় তাদের সামনে ছিল তারকায় ঠাঁসা পিএসজি। দুই লেগ মিলিয়ে অনেকখানি সময় পিছিয়ে থাকলেও ফিরতি লেগে করিম বেনজেমার ১৭ মিনিটের দারুণ হ্যাটট্রিকে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। এরপর দুই ইংলিশ ক্লাব চেলসি ও ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে দলটি রচনা করে ঘুরে দাঁড়ানোর আরও দুটি দারুণ গল্প। সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ছিল পেপ গুয়ার্দিওলার সিটির বিপক্ষে রিয়ালের অবিশ্বাস্য জয়। সেমি-ফাইনালের দুই লেগের লড়াইয়ে ১৭৯ মিনিট পর্যন্ত ৫-৩ গোলে এগিয়ে থেকে ফাইনালের সুবাস পাচ্ছিল সিটি। সবাই যেখানে শেষ ধরে নিয়েছিল, সেখান থেকেই যেন শুরু করে রিয়াল। দুই মিনিটে দুই গোল দিয়ে সমতা টানার পর শেষ পর্যন্ত ৬-৫ গোলের অগ্রগামিতায় ফাইনালে জায়গা করে মাদ্রিদের ক্লাবটি।
রিয়াল ও লিভারপুলের আজকের ফাইনালটিকে ধরা হচ্ছে ২০১৮ সালের কিয়েভের ফাইনালের পুনর্মঞ্চায়ন হিসেবে। স্প্যানিশ ক্লাবটির কাছে সেবার ৩-১ গোলে হেরেছিল ক্লপের দল। রিয়ালের কোচ ছিলেন তখন জিনেদিন জিদান। প্রতিশোধের নেশায় এবার ফলটাকে উল্টে দেওয়ার স্বপ্নে বিভোর মোহামেদ সালাহ ও তার সতীর্থরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।