নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
টার্ন ও বাড়তি বাউন্সে পরাস্ত হলেন শ্রীলঙ্কার প্রভিন জয়াবিক্রমা। দশ নম্বরে নামা এই ব্যাটারের গ্লাভস ছুঁয়ে বল গেল উইকেটের পেছনে। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় বল লুফে নিলেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। তাতেই ইনিংসে ৫ উইকেট পূরণ হয়ে গেল সাকিব আল হাসানের। প্রায় চার বছর পর টেস্টে এই স্বাদ নিলেন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার। ৪০.১ ওভারে ৫ উইকেট নিতে সাকিব দেন ৯৬ রান।
গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচের চতুর্থ দিনের চা বিরতির পর সাকিবের ৫ উইকেট পূরণ হয়। জয়াবিক্রমাকে সাজঘরে পাঠানোর কয়েক ওভার আগে নিরোশান ডিকভেলাকে বিদায় করেন এই বাঁহাতি স্পিনার। তিনিও লিটনের গ্লাভসবন্দি হয়ে মাঠ ছাড়েন। এর আগে দ্বিতীয় দিনে কুসল মেন্ডিস এবং তৃতীয় দিনে দিমুথ করুনারত্নে ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে আউট করেছিলেন সাকিব। এর মধ্যে লঙ্কান অধিনায়ক করুনারত্নের স্টাম্প উড়িয়ে দেওয়া ডেলিভারিটি ছিল তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা।
সেই ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে জ্যামাইকায় ৩৩ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। দেশের মাটিতে খেলা টেস্টে সাকিবের ৫ উইকেট নেওয়ার ঘটনা আরও আগের। ২০১৭ সালের আগস্টে মিরপুরেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক প্রথম জয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল তার। ব্যাট হাতে মোট ৮৯ রানের পাশাপাশি জোড়া ৫ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ৬৮ রানে ৫ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে জিতেছিলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।
এরপর টেস্টে ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন এই প্রথম। তবে ম্যাচের হিসেবে অপেক্ষাটা দীর্ঘ নয় খুব একটা। এক বছর কেটে গেছে নিষেধাজ্ঞায়, চোট-বিশ্রাম-ছুটি মিলিয়ে আরও কিছু টেস্টে তিনি ছিলেন মাঠের বাইরে। মাঝের এই সময়টায় খেলেছেন ৭ টেস্ট। এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই সিরিজ দিয়েই তিনি টেস্টে ফিরেছেন ৬ মাস পর। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটেও দারুণ বোলিং করেন। তবে সেবার উইকেট পান ৩টি। অফ স্পিনার নাঈম হাসান সেখানে নেন ৬ উইকেট। অবশেষে মিরপুরে গতকাল শেষ হলো সাকিবের অপেক্ষার।
সাদা পোশাকের ক্রিকেটে এই নিয়ে ১৯তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেটে শিকার করলেন সাকিব। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। ১০ বার ৫ উইকেট নিয়ে দুইয়ে তাইজুল ইসলাম। ৮ বার নিয়ে তিনে মেহেদী হাসান মিরাজ এবং ৭ বার তা করে দেখিয়ে চারে মোহাম্মদ রফিক। দেশের মাটিতে নিলেন ১৫তম বারের মতো, বাকি পাঁচবার নিয়েছেন বিদেশের মাটিতে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি তার তৃতীয় ৫ উইকেট। বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে ৫ উইকেট শিকারে টেস্ট ইতিহাসে আগে থেকেই ছিলেন তিনি তিনে। এবার দুইয়ে থাকা ড্যানিয়েল ভেটোরির সঙ্গে ব্যবধান কমালেন আরেকটু। ১১৩ টেস্টে ২০ বার ৫ উইকেট ভেটোরির। সাকিবের ১৯ বার হয়ে গেল ৬১ টেস্টে। ৯৩ টেস্টে ৩৪ বার ৫ উইকেট নিয়ে বাঁহাতি স্পিনারদের শীর্ষে বাংলাদেশের বর্তমান স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ।
টেস্টে সর্বোচ্চসংখ্যক বার ৫ উইকেট নেওয়া বোলারদের তালিকায় সাকিব মাঝামাঝি অবস্থানে। তার চেয়ে বেশিবার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ২৫ জন বোলার। অবিশ্বাস্যভাবে ৬৭ বার ৫ উইকেট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন। দুইয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি শেন ওয়ার্ন ৩৭ বার নিয়েছেন ৫ উইকেট। তালিকাটা পেসার ও স্পিনার মিলিয়ে। তবে শুধু স্পিনারদের হিসাব করলে সাকিব উঠে আসবেন শীর্ষ দশে। রিচি বেনো, আবদুল কাদির, ভগবৎ চন্দ্রশেখর, সাকলায়েন মুশতাক, বিল ও’রিলির মতো কিংবদন্তিদের চেয়েও টেস্টে বেশি সংখ্যকবার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক অফ স্পিনার ল্যান্স গিবসকে পেছনে ফেলে স্পিনারদের এ তালিকায় সাকিব উঠে এসেছেন ১০ নম্বরে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।