গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থা সবচেয়ে ভালো। দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার সার্বিক উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়েই আমরা বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করি। তবে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সতর্ক।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষ সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এখন বিদেশি ঋণের পরিমাণ জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। অথচ আমাদের সমসাময়িক প্রতিবেশী দেশগুলোর বেশিরভাগেরই বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ জিডিপির ৮০-৯০ শতাংশের বেশি। এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম বিদেশি ঋণ আমাদের। সেজন্যই বিদেশি ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের আরও বেশি ঋণ দিতে আগ্রহী। তবে আমরা বুঝেশুনেই ঋণ নেবো। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক তো আসলে অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের সামগ্রিক অবস্থা অত্যন্ত স্থিতিশীল। বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধিদলের সদস্যরাও জানিয়েছে, বাংলাদেশ এখন আর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ না। বাংলাদেশ এখন উদীয়মান শক্তিশালী দেশ হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। অনেক বিষয়ে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বিভিন্ন বিষয়ে অংশগ্রহণমূলক ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখিয়েছে। স্পেসিফিক কয়েকটি বিষয়েও আমাদের লোকাল গভর্নমেন্ট সাপোর্ট প্রোগ্রাম (এলজিএসপি) আছে, সেখানে তারা আরেকটু বড় আঙ্গিকে বিনিয়োগ করতে চায়।
তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরের উন্নয়নের ব্যাপারে আর কী কী করা যায়, সে বিষয়েও প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা বলেছি। যেন মানুষ মাইগ্রেট না করে বা কম করে সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তারা সম্ভাব্য সবক্ষেত্রে আমাদের অর্থায়নের আশ্বাস দিয়েছে। তিনি বলেন, বৈঠকে দেশের স্যানিটেশন এবং ওয়াটার সাপ্লাইয়ের মতো বিষয়গুলো নিয়েও কথা হয়েছে। গ্রামীণ কমিউনিকেশন ডেভলপমেন্ট, ব্রীজ, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আজকের বৈঠকের প্রেক্ষাপটে প্রতিনিধিদল তাদের সদরদপ্তরে কিছু প্রস্তাব পাঠাবে। বর্তমানে সংস্থাটির ২ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলারের মতো অর্থায়নের কাজ চলমান। আমাদের বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে প্রতিনিধিদল অনেক ইতিবাচক।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কাজ করায় আমাদের তুলনায় তাদের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। বাংলাদেশের প্রকল্প নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা বেশি থাকতে পারে, কিন্তু তাদের অভিজ্ঞতা বৈশ্বিক পরিসরে। এক্ষেত্রে আমাদের কিছু দুর্বলতা রয়েছে। পজিটিভ ইমপ্লিমেন্টেশন কিভাবে দ্রুত করা যায় সেজন্য আমরা যৌথভাবে কাজ করছি। আমরা সেসব খাতেই অর্থায়ন করবো যেখানে বিনিয়োগের ফলে অর্থনীতির গ্রোথ হবে। নইলে আমরা তাদের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের টাকা দিতে পারবো না। ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে টাকা নেওয়া ও দেওয়া কোনোটাই ঠিক হবে না। তবে বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থা অনেক ভালো। ফলে টাকা পরিশোধ না করতে পারার কোনো কারণ নেই। শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত বিচার-বিশ্লেষণ করে বিদেশি বিনিয়োগ নেয়।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে আরও কী পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে চায় এমন প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এরইমধ্যে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প তারা অর্থায়ন করছে। সেটি আমরা অনুমোদন দিয়েছি। ৫০০ মিলিয়ন ডলারের আরও একটি প্রকল্পও অনুমোদন করেছি। তারা আরও প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৯ হাজার কোটি) বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের চেষ্টা করছে।
পদ্মা সেতু নিয়ে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না অপর একটি প্রশ্নের মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। শিগগির পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে। খোদ বিশ্বব্যাংকই এখন স্বীকার করছে যে, বাংলাদেশ বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে। বৈঠক স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।