মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আপনি যদি এখনো করোনাভাইরাস মহামারির চক্রে ঘুরপাক খেতে থাকেন, আপনার জন্য দুঃখিত, কিন্তু আরো একটি ভাইরাসও জেঁকে বসবার উপক্রম করছে। এবারেরটির নাম মাংকিপক্স এবং এরইমধ্যে পৃথিবীর ১২টি দেশে ৮০ জনের দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে নয়টি ইউরোপিয়ান দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া।
অনেক দেশ করোনাভাইরাস মহামারির সময় আরোপ করা নানা ধরনের বিধি নিষেধ শিথিল করতে শুরু করেছে। মানুষজনের মধ্যেও যেন এক ধরনের স্বস্তির ছাপ পড়তে শুরু করেছে। এটা পরিষ্কার যে মাংকিপক্স কোভিডের মতো নয় এবং খুব শীঘ্রই এর কারণে লকডাউন ঘোষণা হতে পারে বিষয়টা এমন না হলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এর আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক। তবে মাংকিপক্সের এই প্রাদুর্ভাব অস্বাভাবিক এবং অভূতপূর্ব। যা এই অসুখে বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানীদের বিস্মিত করে তুলেছে।
এতদিন পর্যন্ত মাংকিপক্সের আচরণ অনুমান করা সহজ ছিল। নাম শুনে বানরের কথা মনে হলেও আসছে মাংকিপক্স ভাইরাসটি পাওয়া যায় ইঁদুরের শরীরে। ভাইরাসটির প্রাকৃতিক আবাসভূমি পশ্চিম আফ্রিকা এবং রেইনফরেস্টে বাস করে এমন কেউ হয়ত আক্রান্ত ইঁদুরের সংক্রমণে এলে অসুখটি ছড়ায়। আক্রান্তদের ত্বকে বসন্তের মতো দেখা দেয়। ফোস্কার মতো তৈরি হয়ে ফেটে যায় এবং চামড়া উঠতে থাকে।
কিন্তু মাংকিপক্স এখন যেসব দেশে পাওয়া যাচ্ছে সেখানে এটি থাকার কথা নয়। এর প্রাদুর্ভাব এখনো স্বল্প পরিসরেই রয়েছে। ভাইরাসটি খুব অল্পতেই সংক্রমিত করতে পারছে না। দীর্ঘক্ষণের সংস্পর্শ দরকার হচ্ছে। বিশ্বে এর আগে অল্প কিছু সংক্রমণ পাওয়া গেছে তবে যাদের শরীরে এটি পাওয়া গেছে তারা সবাই ভাইরাসটির প্রাকৃতিক আবাসভূমি যেসব দেশে সেখানে ভ্রমণে গিয়েছিলেন। কিন্তু এবার যে প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে তাত প্রথমবারের মতো এমন সব মানুষের দেহে এটি পাওয়া গেছে যাদের সাথে পশ্চিম অথবা মধ্য আফ্রিকার কোন যোগাযোগও নেই। ফলে কিভাবে তারা আক্রান্ত হয়েছেন সেটি এখনো পরিষ্কার নয়।
এর আগে যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের কিছু জায়গায় এর সংক্রমণ পাওয়া গেছে। যাদের সবার সাথে প্রাকৃতিক আবাসভূমিতে ভ্রমণের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু এবার বিষয়টি তেমন নয়। প্রথমবারের মতো এমন আক্রান্ত এমন ব্যক্তি পাওয়া যাচ্ছে যাদের সাথে যাদের সাথে মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার সাথে কোন যোগাযোগ নেই। তারা কিভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন সেটি এখনো পরিষ্কার নয়। এটি যৌন সংসর্গের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে। বেশিরভাগ আক্রান্তের যৌনাঙ্গ এবং এর আশপাশে ঘায়ের মতো পাওয়া যাচ্ছে। আক্রান্তদের অনেকেই সমকামী ও উভকামী কম বয়স্ক পুরুষ।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামারি বিজ্ঞান বিষয় ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক স্যার পিটার হরবি বলছেন, "আমরা খুব নতুন এক ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। যা খুব বিস্ময় এবং উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো।" তিনি বলছেন, আমরা দ্বিতীয় এক কোভিড মহামারিতে পড়তে যাচ্ছি ব্যাপারটা এমন না। তবে ভাইরাসটি জেঁকে বসার আগেই দ্রুত পদক্ষেপ নেবার কথা বলছেন তিনি। এটা এমন কিছু যা আমাদের এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ, বলছেন স্যার হরবি। মাংকিপক্স আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিয়েছেন ডা. হিউ অ্যাডলার। তিনি বলছেন, "এর যে আচরণ আমরা এখন দেখছি তা আগে দেখা যায়নি। যা আশ্চর্য হওয়ার মতো।"
এখনো পর্যন্ত এটুকু জানা যাচ্ছে যে এই প্রাদুর্ভাব ব্যতিক্রমী কিন্তু কেন সেটি জানা যাচ্ছে না। দুটো বিকল্পের কথা ভাবা হচ্ছে। হতে পারে ভাইরাসটি পরিবর্তিত হয়েছে। অথবা ভাইরাসটি বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য সঠিক সময়ে উৎকৃষ্ট পরিবেশ পেয়েছে। তবে মাংকিপক্স কোভিডের মতো এত দ্রুত মিউটেড বা ধরন পরিবর্তন করে না। দুই হাজার আঠারো ও ২০১৯ সালে যে কয়েকটি সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছিল তার সাথে এর সম্পর্ক রয়েছে। যদিও নিশ্চিত করে কিছুই এত তাড়াতাড়ি বলা যাচ্ছে না।
তবে এখনো পর্যন্ত এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে ভাইরাসটি ধরন পরিবর্তন করেছে। তবে বড় ধরনের প্রাদুর্ভাবের জন্য সবসময় ভাইরাসের ধরন পরিবর্তন হতে হবে এমন নয়। যেমনটা দেখা গেছে ইবোলা এবং জিকা ভাইরাসের সংক্রমণে। লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের অধ্যাপক অ্যাডাম কুচারস্কি বলছেন, "আমাদের সব সময় ধারনা ছিল ইবোলা খুব দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেটা কিন্তু হয়নি।" সমকামী ও উভকামী কম বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে মাংকিপক্স কেন বেশি পাওয়া যাচ্ছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।