নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
গৌহাটি-শিলং সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের ১২তম আসর আয়োজনে চরম অব্যবস্থাপনা ছিলো ভারতীয় অলিম্পিক কমিটির। এর সঙ্গে যোগ হয়েছিলো বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) কর্মকর্তাদের অসহযোগিতাও। আর এ কারণেই অনেকটা নাজেহাল অবস্থয় পড়তে হয়েছে গেমস কাভার করতে আসা প্রায় অর্ধশত বাংলাদেশী সাংবাদিককে।
গৌহাটি শহর থেকে আধাঘণ্টার পথ। শহরতলী বলতে যা বুঝায় তাও নয়। শহরের উপকণ্ঠে এক সমৃদ্ধ ক্রীড়া কমপ্লেক্স। নাম সারুসাজাল ক্রীড়া কমপ্লেক্স। এখানে কাছাকাছি বেশ ক’টি ভেন্যু। ইনডোর গেমস, সাঁতার এবং ফিল্ড অ্যান্ড ট্র্যাক আয়োজনের ভালো সুবিধা। যেখানে ফুটবলেরও আয়োজন হয়। তবে এখানকার অনেক কিছুই গেমসকে সামনে রেখে করা হয়েছে। নতুন স্থাপনা হলেও এখনো অনেক কিছুই অগোছালো। এই কমপ্লেক্সে ইন্দিরা গান্ধী অ্যাথলেটিক্স স্টেডিয়ামই প্রধান। এই স্টেডিয়ামেই স্থাপন হয়েছে এসএ গেমসের মূল মিডিয়া প্রেস সেন্টার (এমপিসি)। কিন্তু কমপ্লেক্সের আশপাশে হোটেল বা দোকান জাতীয় কিছুই নেই। ফলে গেমস কাভার করতে আসা বিদেশী সাংবাদিকদের ২০/২৫ কিলোমিটার দূর থেকে প্রধান মিডিয়া সেন্টারে আসতে হয়েছে। সাংবাদিকরা এখানেই এক ঝটকায় পেয়েছেন সব ইভেন্টের প্রতিদিনের তাজা খবরা-খবর। যেখানে অণির্বান ভৌমিক, শুভন দাশ, শাহজালাল আনসারী, আক্সক্ষাকা রাজপুত, ক্রিস্টি কালিতা, মনিষা বেগম ও রুকসানা বেগমের মতো প্রাণোচ্ছ¡ল অনেক স্বেচ্ছাসেবকরা হাসিমুখে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু গেমসের প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশী সাংবাদিকরা নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন। ভারতের দু’রাজ্যের দুই শহরে গেমস হলেও গৌহাটিতে ছিলো অধিকাংশ খেলা। আসরের ২৩ ডিসিপ্লিনের মধ্যে ১৭টির খেলা হয় এখানে। বাকি ছয়টি শিলংয়ে। স্বাভাবিকভাবে মিডিয়াকর্মীদের ভীড় ছিলো গৌহাটিতেই। কিন্তু আয়োজকদের নানা অব্যবস্থাপনার কারণে পেশাগত দায়িত্বপালন করতে সাংবাদিকদের পোহাতে হয়েছে প্রচÐ দুর্ভোগ। গেমসের শুরু থেকেই গৌহাটির বিভিন্ন ভেন্যুতে ইন্টারনেট সমস্যা ছিলো প্রকট। অবশ্য ধীরে ধীরে এই সমস্যা কেটেছে। তবে বেশী সমস্যা হয়েছে মোবাইল সিম সংগ্রহ করতে। সূত্রে জানা গেছে, গেমসের টেলিকম পার্টনার বিএসএনএল প্রায় পাঁচ শতাধিক সিম দিয়েছিলো বাংলাদেশ দলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের সুবিধার্থে যা প্রদান করার কথা ছিলো দলের সব সদস্য ও সাংবাদিকদের মাঝে। কিন্তু বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা পেলেও কোন সাংবাদিককে মোবাইল সিম দেয়নি দলের সঙ্গে আসা বিওএ’র দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। তারপরও বাংলাদেশী সাংবাদিকরা স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নিয়ে সিম কিনতে পারলেও তা ব্যবহার করতে ঝামেলায় পড়েছে। কারণ সিম কেনার ৪৮ ঘণ্টা পর তা সচল হয়েছে। তবে অধিকাংশ সংবাদকর্মী সিম ক্রয় করেও সচল না হওয়ায় তা ব্যবহার করতে পারেননি।
এসএ গেমসের ১২তম আসরে অতিথি ও পর্যবেক্ষক হয়ে বিওএ’র বিশাল বহর এখন আসামের গৌহাটি ও মেঘালয়ের শিলং শহরে অবস্থান করছে। এই বহরে রয়েছেন অনেক অখ্যাত ক্রীড়া সংগঠকও। যাদের গেমসের সঙ্গে তেমন গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নেই। অথচ তারা ঘুরে বেড়িয়েছেন গৌহাটি থেকে শিলংয়ের নানা জায়গায়। ইচ্ছে মতো শপিং করেছেন। ছবির পর ছবি তুলে সময় কাটিয়েছেন। আনন্দে মাতোয়ারা এই সব ক্রীড়া সংগঠকদের কার্যকলাপে মনে হয়েছে যেন তারা পিকনিক করতে এসেছেন গৌহাটি ও শিলংয়ে। গেমসের মহিলা ভলিবলে বাংলাদেশ খেলেনি। অথচ বাংলাদেশ ভলিবল ফেডারেশনের মহিলা কমিটির সভাপতি জান্নাত আরা ও সহ-সভাপতি নয়না চৌধুরীকে দেখা গেছে গৌহাটি ও শিলংয়ের বিভিন্ন ভেন্যুতে। কাজ না থাকলেও বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছেন তারা।
আর একদিন পরই গৌহাটিতে পর্দা নামবে এই গেমসের। অথচ অভিযোগ রয়েছে ১২দিন ব্যাপী এ আসরে বাংলাদেশ দলের বেশ কিছু ডিসিপ্লিনের খেলোয়াড়দের সঙ্গে দেখা করা তো দূরের কথা যোগাযোগও করেননি বিওএ’র কোন কর্মকর্তা। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে সাংবাদিকরা নিজেদের তাগিদে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও অনেকেই স্বদেশী মিডিয়াকর্মীদের এড়িয়ে চলেছেন। গেমস উপলক্ষ্যে গঠিত বিওএ’র মিডিয়া কমিটির কোন সদস্যই সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। ফলে বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের ফলাফল জানতে দর্ভোগ পোহাতে হয়েছে সব সাংবাদিককেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।