পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719826147](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর উত্তরা ও আদাবর এলাকায় অভিযান চালিয়ে জেএমবি সারোয়ার-তামিম গ্রুপের জঙ্গি প্রশিক্ষক বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ ও অর্থ সমন্বয়কারীসহ পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২।
গত বুধবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। এসময় বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জামাদি, অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। আটককৃতরা হলেন- মাওলানা আব্দুল হাকিম ফরিদি ওরফে সুফিয়ান (৪০), রাজিবুল ইসলাম ওরফে রাজিব ওরফে আহমেদ (২৯), গাজী কামরুস সালাম সোহান ওরফে আবু আব্দুল্লাহ (২৭), মো. সোহেল রানা ওরফে খাদেম ওরফে মোয়াজ্জিম ওরফে সোহেল ওরফে শহীদুল্লাহ (২৩), এবং শেখ মো. আবু সালেহ ওরফে লিটন ওরফে উরাইয়া (৪২)।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় কাওরান বাজার রেলওয়ে মিডিয়া সেন্টারে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বুধবার রাত ৮টায় এয়ারপোর্ট-রেলস্টেশন এলাকা থেকে মাওলানা আব্দুল হাকিম ও রাজীবুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী আদাবরের মোহাম্মাদীয়া ক্যাফে থেকে কামরুল, সোহেল ও আবু সালেহকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, আটককৃতদের কাছ থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ১০টি ককটেল, পাঁচটি ডেটুনেটর, এক কয়েল তার, ১ কেজি সাদা পাউডার, ২০০ গ্রাম বারুদ, দেড় কেজি তারকাঁটা ও বল, দুটি সার্কিট বোর্ড ও ১৫টি ক্লিপ টাইপ সার্কিট উদ্ধার করা হয়।
প্রকৌশলী থেকে যেভাবে জঙ্গি
গাজীপুরের ইসলামী ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিকসে বিএসসি পাস করেন গাজী কামরুস সালাম সোহান ওরফে আবু আবদুল্লাহ। কিন্তু ২৭ বছর বয়সী এই যুবক প্রকৌশল হিসেবে পেশাগত কাজে জড়াননি। তিনি জড়িয়ে পড়েন জঙ্গি কর্মকা-ে। জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) ‘সরোয়ার-তামিম’ গ্রুপের সদস্য হিসেবে বিভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহ, নাশকতার কাজে ব্যবহারের জন্য বিস্ফোরক দ্রব্য তৈরি ও হামলাকারীদের প্রশিক্ষণও দিতেন সোহান। সম্প্রতি সারোয়ার জাহান, তামিম চৌধুরীসহ শীর্ষ নেতাদের মৃত্যু ও অনেকে আত্মগোপন করায় জেএমবিকে আবার সংঘবদ্ধ করার কাজ করছিলেন তিনি। তবে সোহানসহ জেএমবি ‘সরোয়ার-তামিম’ গ্রুপের পাঁচ সদস্যকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-২ (র্যাব)।
আইইউটিতে পড়ার সময় সোহান জঙ্গিবাদে ঝুঁকে পড়েন বলে জানান মুফতি মাহমুদ খান। তিনি বলেন, সোহানের জন্ম যশোর জেলায়। ২০০৭ সালে মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে আইইউটিতে ভর্তি হন। সেখানে পড়ার সময় কলেজবন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান সিফাতের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন। সিফাত আত্-তামকিন জঙ্গি সাইটের অ্যাডমিন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তিনি ৯ আগস্ট ঢাকায় র্যাব-৪-এর একটি অভিযানে আটক হন। সোহান আইইউটিতে পড়ার সময় হাতেমবাগে জসীম উদ্দিন রাহমানির মসজিদে যাতায়াত করতেন। সেখানে একই মতাদর্শের কয়েকজনের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। সিফাত তাকে জঙ্গিবাদ মদদপুষ্ট একটি সাইটে অন্তর্ভুক্তি এবং জেএমবির সারোয়ার জাহান শাইখ আবু ইব্রাহিম আল হানিফের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে সোহান চট্টগ্রামে ছোটখাটো অস্ত্র ও বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ নেন। এভাবে সোহান বিভিন্ন হামলা ও নাশকতার জন্য বিস্ফোরক তৈরি ও প্রশিক্ষণ দিতেন। এ ছাড়া তিনি জঙ্গি কর্মকা-ের জন্য অর্থ জোগাড় করতেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ২৮ লাখ টাকা আদান-প্রদানের বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন সোহান।
র্যাব আরো জানায়, অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটপাটের জন্য থানায় আক্রমণ করার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের। নির্দিষ্ট থানায় কি পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ আছে এবং কার কখন ডিউটি বদল হয়, তা জানার জন্য এজেন্টও নিয়োগ করা হয়েছিল। থানায় আক্রমণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল জেএমবির ‘সারোয়ার-তামিম’ গ্রুপের খুবই ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ঝিনাইদহের একটি মসজিদের মোয়াজ্জিন মো. সোহেল রানাকে (২৩)। সে খাদেম, মোয়াজ্জিন, সোহেল ও শহীদুল্লাহ নামেও সাংগঠনিকভাবে পরিচিত। গত বুধবার রাতে র্যাব-২ এর এক বিশেষ অভিযানে সোহেল রানাকে রাজধানীর আদাবরে মোহাম্মদিয়া ক্যাফে থেকে আটক করা হয়। এর আগে একই দিনে রাত ৮টায় এয়ারপোর্ট-রেলস্টেশন এলাকা থেকে মাওলানা আব্দুল হাকিম ও রাজীবুল ইসলামকে আটক করে র্যাব। তাদের দেয়া তথ্য অনুসারে, আদাবরের মোহাম্মাদিয়া ক্যাফে থেকে সোহেল রানা, গাজী কামরুস সালাম সোহান ও আবু সালেহকে আটক করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।