মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নতুন দিল্লির জাহাঙ্গীর পুরীতে এক সকালে বাসিন্দারা তাদের দোকান এবং স্টল ধ্বংসকারী বুলডোজারের শব্দে জেগে উঠেছিল। ২৪ বছর বয়সী বাসিন্দা সাবিনা বিবি তার বাড়ির কাছে একটি বুলডোজার দেখতে পেয়ে তার ধ্বংসযজ্ঞ কেমন ছিল তা পরীক্ষা করতে বেরিয়েছিলেন। দেখেন তার পান এবং সিগারেট বিক্রির ছোট স্টলটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। আয়ের একমাত্র উৎস শেষ হয়ে গেছে। সাবিনা বলেন, দোকান ভেঙ্গে ফেলার আগে অন্তত আমাদের জিনিসপত্র সংগ্রহ করার জন্য সতর্ক করার দরকার ছিল, যা হয়নি। কোনো পূর্ব বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়নি। বিজেপি তাই অনেকের মতে, বুলডোজারের রাজনীতি বা বুলডোজার রাজ হিসাবে সমালোচিত। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় দোকান এবং বাড়িতে বুলডোজারের ব্যবহার এখন সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রকাশ্য বৈষম্যের প্রতীক হয়ে উঠছে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে যোগী আদিত্যনাথের প্রথম কার্যকালের সময়, বুলডোজারগুলো ব্যাপকভাবে তথাকথিত অবৈধ বাড়ি এবং ব্যবসা গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। আদিত্যনাথ দ্রুত বিখ্যাত হন বুলডোজার বাবা।এই বছর মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাটে তার প্রতিপক্ষরাও তার পদাঙ্ক অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যখন এই রাজ্যগুলিতে একই রকম ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। ২০ এপ্রিল জাহাঙ্গীরপুরীতে ধ্বংস অভিযান, যেসময় একটি মসজিদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সুপ্রিমকোর্টের স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও প্রায় তিনঘন্টা ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত ছিল। হিন্দু দেবতা হনুমানের জন্ম উদযাপন, হনুমান জয়ন্তী সমাবেশের সময় ১৬ এপ্রিল সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ফলে যে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়েছিল, তা অনেক পরিবারকে আয়হীন বেকারে পরিণত করে। ১২ এপ্রিল হিন্দু দেবতা রামের জন্ম উদযাপনে রাম নবমী সমাবেশে যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয় তার দুদিন পরে, মধ্যপ্রদেশের খারগোন অঞ্চলে একটি ধ্বংস অভিযান চালানো হয়েছিল। গত মঙ্গলবার নাগরিক কর্তৃপক্ষ আবার গুজরাটের হিম্মতনগর শহরে একটি ধ্বংস অভিযান শুরু করেছে, যেখানে এই মাসের শুরুতে রাম নবমী উদযাপনের সময় একটি সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ শুরু হয়।এর আগে রাম নবমী উদযাপনের সময় খম্ভত শহরে সহিংসতার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের মালিকানাধীন বিল্ডিং অপসারণের জন্য প্রশাসন বুলডোজার ব্যবহার করে বিল্ডিং ভাঙ্গার অভিযান চালিয়েছিল। তিনঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে জাহাঙ্গীরপুরী এবং গুজরাটের বেশ কয়েকটি দোকান বুলডোজার দ্বারা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত লোকেরা এখন ভিক্ষা করছে। এর আগে খারগোনে, প্রশাসন প্রায় ১৬টি বাড়ি এবং ২৯টি দোকান ভেঙে দিয়েছে। ২৪ শে এপ্রিল, আম আদমি পার্টি (এএপি) বিজেপির বুলডোজার রাজনীতির বিরুদ্ধে নয়াদিল্লিতে পদযাত্রা করেছে এবং জনগণকে বিজেপির গুন্ডামী এবং দুর্নীতি থেকে ভীতি ও হুমকি না পেতে বলেছে। ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় ইফতারের প্রায় দশ মিনিট বাকি ছিল, যখন জাহাঙ্গীরপুরীর একটি মসজিদে হিন্দু জনতা হামলা চালায়। “তারা জয় শ্রীরাম সেøাগান দিচ্ছিল। তারা মসজিদের দেয়াল ও জানালা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে জানান সাবিনা। সাবিনা বলেন, মুসলিম বাসিন্দারা মসজিদের ক্ষতি সাধন থেকে জনতাকে বাধা দিতে বের হলে নারী-পুরুষকে বেদম মারধর করা হয়। এমন কি কর্তৃপক্ষও তাদের সঙ্গে আছে। তখন অন্তত ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের বেশির ভাগই মুসলিম পুরুষ। পরে বিজেপি সহিংসতায় ্রঅবৈধ অভিবাসীদেরগ্ধ ভূমিকার তদন্তের দাবি করে অভিযোগ করে যে, বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা মুসলিম অভিবাসীরা সহিংসতা শুরু করেছিল। সাবিনা বলেন, আমার স্বামী ভয় পেয়ে সেদিন পালিয়ে গিয়েছিল। আমি জানি না তিনি কোথায় আছেন। পুলিশ তাদের কোন দোষ ছাড়াই পুরুষদের গ্রেফতার করেছে, বলেও জানান সাবিনা। সাবিনার প্রশ্ন, একজন মুসলিমকে কেন প্রতিরোধ করা উচিত? এমনকি আমাদের পিটিয়ে মেরে ফেলা হলেও, আমাদের জবাবে একটি শব্দও বলা উচিত নয় কেন? আক্রমণ শেষ হওয়ার পরে, আসন্ন ধ্বংসের গুজব ছড়াতে শুরু করে তারা। বাড়ির বাইরে খাবারের স্টল থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ টাকা আয় করেন সাবিনা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান আকার প্যাটেল বলেছেন যে, ২০১৪ সাল থেকে ভারতীয় মুসলমানদের লক্ষ্য করে এমন আইন ও নীতি রয়েছে। কাশ্মীর থেকে গণতন্ত্র অপসারণ হোক বা কারাগারে থাকা কাশ্মীরিদের হেবিয়াসকর্পাস প্রত্যাখ্যান, মিডিয়া নীতি ২০২০-এর মাধ্যমে কাশ্মীরিদের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অস্বীকার করা, জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের মুসলমানদের নামাজে বাধা, তাদের কাছ থেকে নামাজের জন্য বরাদ্দ জায়গা কেড়ে নেওয়া হয়। সেটা হিজাব নিষিদ্ধ হোক বা গরুর মাংস নিষিদ্ধ হোক, যে কারণেই হোক বলে প্যাটেল মকতুব বলেছেন। ন্যাশনাল হেরাল্ড অব ইন্ডিয়া, মুসলিম টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।