Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রাম্প যাই বলুন, অভিবাসীদের ‘নিভৃত আবাস’ হয়েই থাকবে শিকাগো : মেয়র

প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক
মার্কিন গণতন্ত্রের সমালোচনা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে এর ভালো দিকও। অঙ্গরাজ্যগুলোর হাতে থাকা ক্ষমতাকে ব্যবহার করে তারা নিতে পারেন অনেক স্বাধীন সিদ্ধান্ত। আর সেই ক্ষমতাকে ব্যবহার করেই ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির তোয়াক্কা না করে সব অভিবাসীর জন্য দরজা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিকাগো। মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো খবরটি নিশ্চিত করেছে।
পলিটিকো জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় তহবিল বন্ধের হুমকিকে তোয়াক্কা না করে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য স্যাংকচুয়ারি সিটিগুলোর মতোই শিকাগোকেও অনথিভুক্ত অভিবাসীদের জন্য ‘নিভৃত আবাস’ হিসেবে রাখতে চায় শহরটির কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অনানুষ্ঠানিকভাবে জয় পাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে স্যাংকচুয়ারি সিটিতে কেন্দ্রীয় তহবিল বন্ধের ঘোষণা থাকায় এ নিয়ে জোরেশোরে তৎপরতা শুরু করেছে তারা। ট্রাম্প সম্প্রতি ৩০ লাখ অভিবাসীকে দেশছাড়া করার ঘোষণা দিলেও তারা দমে যায়নি।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে স্যাংকচুয়্যারি সিটির (নিভৃত আবাসের শহর) সংখ্যা ৩৭টি। এসব শহরের স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন ব্যক্তির অভিবাসন স্ট্যাটাস জানাতে বাধ্য নন। অর্থাৎ এ শহরগুলো অভিবাসীদের জন্য অভয়াশ্রম বা নিভৃত আশ্রয় হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে অনিবন্ধিত অভিবাসীর সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখের মতো। এদের একটা বড় অংশ এসেছে মেক্সিকো থেকে। এই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে অগ্রাধিকার পেয়েছিল। ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে যুক্তরাষ্ট্রে যেসব স্যাংকচুয়ারি সিটি রয়েছে সেগুলো কেন্দ্রীয় তহবিল সরবরাহ বন্ধ করে দেবেন। গত মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত হওয়ার পর স্যাংকচুয়ারি সিটিগুলোতে কেন্দ্রীয় তহবিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়।
এই প্রেক্ষাপটে স্যাংকচুয়ারি সিটিগুলো তাদের অবস্থান থেকে সরে আসবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। তবে মঙ্গলবারের নির্বাচনের পর নিউ ইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলস, সিয়াটল, ফিলাডেলফিয়া ও সান ফ্রান্সিসকোর মতো স্যাংকচুয়ারি সিটিগুলো জানিয়ে দিয়েছে অভিবাসী প্রশ্নে তারা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসবে না। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্য শহরগুলোর পাশাপাশি শিকাগো কর্তৃপক্ষও চাইছে তাদের স্যাংকচুয়্যারি স্ট্যাটাস বজায় রাখতে। রোববার শিকাগোর মেয়র রাহম ইমানুয়েলের কার্যালয় থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমি শিকাগোর সব পরিবারকে আশ্বস্ত করছি যে, এটি একটি স্যাংকচুয়্যারি সিটি থাকবে। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই শিকাগো অভিবাসীদের শহর। আমরা সবসময় সব বিশ্বাস ও গোষ্ঠীর মানুষকে স্বাগত জানিয়ে থাকি। প্রশাসন পাল্টালেও আমাদের মূল্যবোধ ও প্রতিশ্রুতির বদল ঘটবে না।’
পলিটিকোর প্রতিবেদনে বলা হয়, মেয়র রাহম ইমানুয়েলসহ শিকাগোর নির্বাচিত কর্মকর্তারা কিভাবে শিকাগো শহর স্যাকচুয়্যারি স্ট্যাটাস বজায় রাখবে তা নিয়ে আলোচনা করবেন। ধারণা করা হচ্ছে, তহবিল নিয়ে পূর্ব সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য ট্রাম্পকে চাপ দিতে রিপাবলিকান গভর্নর ব্রুস রাওনারকে আহ্বান জানাবেন শিকাগোর অল্ডারম্যান (মেয়রের পরবর্তী জন) ড্যানি সলিস। রোববার পলিটিকো ইলিনয়কে দেয়া সাক্ষাৎকারে ড্যানি বলেন, ‘দেশজুড়ে এবং শিকাগো ও ইলিনয়ের তরুণ-তরুণীরা এ ব্যাপারে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে।’
ড্যানি সলিস আরো বলেন, ‘কিছু লোক আছে যাদের সঙ্গে আমার মতপার্থক্য রয়েছে, কিন্তু তারপরও আমি তাদের শ্রদ্ধা করি। তারা হলেনÑ পল রায়ান, রেইঞ্চ প্রিয়েবাস। আমি আশা করি, ট্রাম্পের ওপর তাদের অনেক প্রভাব থাকবে।’
রোববার সিবিএস টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানিয়েছেন, অপরাধের রেকর্ড থাকা ২০ থেকে ৩০ লাখ অভিবাসীকে বিতাড়িত করবে তার প্রশাসন। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যেটা করতে যাচ্ছি তা হলো যেসব লোকের ক্রিমিনাল রেকর্ড রয়েছে, যারা অপরাধী চক্রের সদস্য, মাদক কারবারি, এদের সংখ্যা প্রচুর, সম্ভবত ২০ লাখ, ৩০ লাখও হতে পারে, আমরা তাদের দেশ থেকে বের করে দেবো অথবা কারারুদ্ধ করব।’
সূত্র : ওয়েবসাইট।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাম্প যাই বলুন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ