পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানী ঢাকাসহ এক সময় সারাদেশের ঈদ বাজারে ভারতের তৈরি পোশাকের চাহিদা বেশি ছিল। পরবর্তীতে যোগ হয় চীন, থাইল্যাণ্ড ও পাকিস্তানের কাপড়। এখন পাল্টে গেছে দৃশ্য। ঢাকার মার্কেটগুলো থেকে শুরু করে সারাদেশে ঈদ বাজারে দেশীয় কাপড়ের তৈরি পোশাকের কদর বেশি। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো যেন বাজার শাসন করছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার ঈদের গরমে রুচিশীল ও ট্রেন্ডি পোশাক, প্যাটার্নে আনা হয়েছে ভিন্নতা সেইসঙ্গে দেশি ঘরানার ফিউশন। ফলে ক্রেতারা বিদেশী পোশাকের চেয়ে দেশি তৈরি পোশাক বেশি পছন্দ করছেন।
সারাদেশের ঈদ বাজারজুড়ে বিক্রির শীর্ষে রয়েছে দেশে উৎপাদিত পোশাক। পাঞ্জাবি-পাজামা, শার্ট, টি-শার্ট ও শেরোয়ানি ও শিশু-কিশোর-কিশোরীদের সালোয়ার-কামিজ, ফ্রক, পাঞ্জাবি, শার্ট ও ফতুয়া। দেশীয় তারুণ্যনির্ভর ডিজাইনে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের কটন, লিনেন কটন, জর্জেট, সিল্ক, এন্ডি সিল্ক, এন্ডিকটন, ফ্রেঞ্চ ব্লু, রাস্ট কাপড় থেকে শুরু করে স্মার্ট ক্যাজুয়াল শার্ট, লং টপস, ফরমাল শার্ট, পলো শার্ট ও প্যান্ট বিদেশী পণ্যকে পিছনে ফেলে বিক্রির তালিকায় সামনে চলে এসেছে। দেশী পোশাক ছাড়াও বিভিন্ন রকম গহনা, জুতা, স্যান্ডেল, হোমটেক্সটাইল ও গিফট আইটেমও এবারের ঈদ বাজারে বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর নিউমার্কেট, বসুন্ধরা মার্কেট, যমুনা ফিউচার পার্কসহ বিভিন্ন মার্কেটে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে হরেক রকমের ও ডিজাইনের পোশাক। সব ধরনের ক্রেতার পছন্দ দেশি পোশাক। দেশী এসব পোশাক তৈরির কর্মযজ্ঞ সূচনা হয়েছিল আর প্রায় মাস ছয়েক আগে। তুলা বা রেশম দিয়ে সুতা তৈরি থেকে শুরু। তারপর তাতে রং মাখানো, কাপড় বোনা, নকশা আঁকা, কাপড় কাটা, সর্বশেষ নানা ডিজাইনের পোশাক তৈরি-বিশাল এই কর্মযজ্ঞ শেষে ক্রেতাদের হাতে পৌঁছাচ্ছে ঈদের পোশাক। প্রতিটি পর্যায়েই টাকার দ্রুত হাতবদলে প্রাণ পাচ্ছে দেশের অর্থনীতি। আর রোজার ঈদের কেনাকাটার সবচেয়ে বড় অংশজুড়ে রয়েছে পোশাক ও জুতা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুটি ক্ষেত্রেই দেশি পণ্য ও ফ্যাশনের কদর আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। কয়েক বছর আগেও শোনা যেত, বলিউডের কোনো নায়িকার নামে ঘটা করে বিক্রি হচ্ছে আকাশছোঁয়া দামের সব পোশাক। বড় বড় শপিং মলে এখনো সেই রকম পোশাক আসছে। তবে তেমন হাঁকডাক নেই। দেশীয় পোশাকের মান ও দাম সাশ্রয়ী হওয়াই এর মূল কারণ বলে বলে করেন ক্রেতারা। তবে এ বছর তুলনামূলকভাবে দাম বেশি বলেও মত তাদের। অন্যদিকে আমদানি করা পোশাকের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ক্রেতারা।
ক্রেতাদের মনে এখন স্থায়ী আসন গেড়েছে দেশি নানা ডিজাইনের, নানা ব্র্যান্ডের পোশাক। ভালো জুতা বলতে এখন আর ইটালি, চীন বা থাইল্যান্ডের জুতা বোঝায় না, জুতার বাজারেও জায়গা করে নিয়েছে দেশি অনেক ব্র্যান্ড। তবে নামি-দামি ব্র্যান্ডের বাইরে যে বাজার, তার আকার সবচেয়ে বড়। আর এ বাজারের সিংহভাগ জুড়েই রাজত্ব করছে দেশীয় পণ্য। বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কের মতো শপিংমল ছাড়াও রাজধানীসহ সারা দেশের স্থায়ী-অস্থায়ী সব বাজার, দোকান ছাড়িয়ে ফুটপাত পর্যন্ত এর বিস্তৃতি। ধারণা করা হয়, পুরো বছরে যে কেনাবেচা হয়, তার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ হয় ঈদ মৌসুমে। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তথ্য মতে, দু’বছর আগে, অর্থাৎ করোনাপূর্ব স্বাভাবিক সময়ের রোজার ঈদ বাজারে শুধু পোশাকের বাজারেই বিকিকিনি হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। সমিতির তথ্য মতে, এবারের ঈদ বাজারে পোশাক বেচাকেনা হতে পারে ৬০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
ঈদকে ঘিরে মানুষের যে উৎসব বাড়ে, তাতে দেশের অর্থনীতি গতিশীলতা পায়। বাংলাদেশ বিশ্বে তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। বিশ্ববাজার জয় করলেও বছর কয়েক আগেও দেশীয় বাজার ছিল ভারত-পাকিস্তান অথবা আশপাশের দেশগুলোর পোশাকের দখলে। কিন্তু এখন অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমানে বাজারে আধিপত্য দেশীয় পোশাকের। এ আধিপত্য যেমন পোশাক নকশা ও ফ্যাশনে, তেমনি পোশাকের উৎপাদন প্রক্রিয়ায়। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো যেমন বাজার শাসন করছে, তেমনি বাজারজুড়ে বিক্রি হচ্ছে দেশে উৎপাদিত পোশাক। দেশি ফ্যাশনের কদর যে বাড়ছে তা দেখা যায় দেশি সব ফ্যাশন হাউসের শোরুমে গেলে। রুচিসম্মত পোশাক নির্দিষ্ট দামে কিনতে সব বয়সী ক্রেতাই ভিড় করে সেখানে। পুরনো চেনাজানা শোরুম তো আছেই, নতুন ফ্যাশন হাউসগুলোও সহজেই নজর কাড়ে ক্রেতাদের।
তারুণ্যের ফ্যাশন সাথে নতুন ট্রেন্ডের পোশাকের ক্যানভাস এবার ঈদে আরো বর্ণিল ক্যাটস আইয়ের ঈদ আয়োজনে। সময়টা গরম হওয়ায় কাপড় ও রংয়ে পেয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। রুচিশীল ও ট্রেন্ডি পোশাক, প্যাটার্নে আনা হয়েছে ভিন্নতা সেইসঙ্গে দেশি ঘরানার ফিউশন। এবার থাকছে প্রিন্টেড স্মার্ট ক্যাজুয়াল শার্ট, লং টপস, ফরমাল শার্ট, পলো শার্ট ও প্যান্ট। রংয়ের ব্যবহারে এসেছে কোমলতা, আবার এর বিপরীত থাকছে রাতের ফেস্টিভ পোশাকে। ঈদের পাঞ্জাবি ও তরুণীদের টপে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন, থাকছে কাবলিরও বিশেষ কালেকশন।
রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, মেয়েদের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ওড়না ও বিভিন্ন ধরনের টপস এবার বিক্রির শীর্ষে। ছেলেদের আইটেমের ক্ষেত্রে এগিয়ে পাঞ্জাবি-পাজামা, শার্ট, টি-শার্ট ও শেরোয়ানি। শিশু-কিশোররা পছন্দ করছে সালোয়ার-কামিজ, ফ্রক, পাঞ্জাবি, শার্ট ও ফতুয়া। পোশাক ছাড়াও বিভিন্ন রকম গহনা, হোমটেক্সটাইল ও গিফট আইটেমও এবারের ঈদ আয়োজনকে পরিপূর্ণতা দিয়েছে। তারুণ্যনির্ভর এবারের ডিজাইনে বিভিন্ন ধরনের কটন, লিনেন কটন, জর্জেট, সিল্ক, এন্ডি সিল্ক, এন্ডিকটনসহ নতুন ধরনের উইভিং ডিজাইনের কাপড় দিয়ে পোশাকগুলো করা হয়েছে। এবারের ঈদে ফ্রেঞ্চ ব্লু, রাস্ট, মেরিগোল্ড, গ্রিন অ্যাশ, মিন্ট, রাশবেরি সরবেট, আল্টিমেট গ্রে, বাটারক্রিম, উইলো, ডেজার্ট মিস্টসহ বিভিন্ন ট্রেন্ডি কালার ব্যবহার করা হয়েছে দেশীয় বিভিন্ন পোশাকে।
এবারের ঈদটা যেহেতু এবার গ্রীষ্মে, তাই আরামদায়ক সুতি কাপড় রয়েছে পছন্দের শীর্ষে। সুতি, রিমি কটন, ফাইন কটন, লিনেনসহ নানারকম আরামদায়ক কাপড়ে এবার পোশাকগুলো নকশা করেছেন ডিজাইনাররা। ঈদের পাঞ্জাবির জন্যও এসব কাপড়ের অগ্রাধিকার দেখা গেছে। ঈদ ট্রেন্ডে দেশী মোটিফের সঙ্গে পশ্চিমা ধাঁচের ফ্যাশন যুক্ত করেছে অনেকেই। গরমের উপযোগী পেস্টাল শেডের পাশাপাশি উজ্জ্বল সব রঙের কালেকশন রয়েছে এবার ঈদ কালেকশনে।
দিন যত যাচ্ছে আড়ং, অঞ্জনস, ইনফিনিটি কিংবা সেইলরের মতো দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো তাদের স্বকীয়তা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে ঈদের বাজারে দেশী ব্র্যান্ডগুলোর ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এসব ব্র্যান্ডের পণ্য কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। তবে এবার ক্রেতাদের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে দাম ও মান নিয়ে। বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা ও অতিরিক্ত দাম আদায় করায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর জরিমানাও করেছে বেশ অনেক জায়গায়। অতিরিক্ত দামের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আড়ংয়ের চিফ অপারেটিং অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, আমাদের সেল প্রাইসিং সিস্টেম খুবই পরিচ্ছন্ন। আমাদের পণ্যের দাম নির্ধারণ হয় ওই পোশাকে কি ধরনের কাপড় ও কাজ যোগ হচ্ছে সেটার ওপর ভিত্তি করে। পরিপূর্ণ অটোমেটেড সিস্টেম অনুসরণ করতে হয় আমাদের। আমরা চাইলেও দাম কমাতে কিংবা বাড়াতে পারি না। ফলে আমাদের অতিরিক্ত দাম নেওয়ার সুযোগ নেই।
অন্যদিকে ঈদ বাজারে কম দামি লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, শাড়ি-এ তিনটি নিম্ন আয়ের মানুষের প্রধান পণ্য। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে মোট জনসংখ্যার ২৪.৩ শতাংশ মানুষ রয়েছেন দারিদ্র্যসীমার নিচে। সব মিলিয়ে ৫০ শতাংশ মানুষের এসব মৌলিক প্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া কেনার সামর্থ্য নেই। কম দামের শাড়ি, লুঙ্গি ও পাঞ্জাবির বাজার বিশাল আকারের। এসব পণ্য উৎপাদনকারী থেকে ক্রেতা পর্যন্ত পৌঁছাতে কমপক্ষে চার দফায় হাতবদল হয়ে দেশের অর্থনীতিতে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার অবদান রাখে। এসব শাড়ি, লুঙ্গি ও পাঞ্জাবির পুরোটাই তৈরি হয় দেশে। তবে বাংলাদেশে যেহেতু তুলা হয় না, তাই তুলা এবং অনেক ক্ষেত্রে সুতা আমদানি হয় বিদেশ থেকে। এর পাশাপাশি এগুলোর রং ও অন্যান্য রাসায়নিকও আমদানি হয়। দেশের কয়েকটি তাঁতঘন এলাকা থেকে ঈদ উপলক্ষে তৈরি শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা, পাঞ্জাবির কাপড়, মেয়েদের পোশাকের কাপড় ছড়িয়ে পড়ছে দেশজুড়ে।
দেশের তাঁতপ্রধান এলাকাগুলোতে রয়েছে বড় বড় কাপড়ের হাট। নরসিংদীর বাবুরহাট, টাঙ্গাইলের বাজিতপুর হাট, ঢাকার ডেমরার হাট, খুলনার ফুলতলা হাট, কুষ্টিয়ার কুমারখালী হাট, সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর ও সোহাগপুর হাট এবং বগুড়ার শাওয়াইল হাট জোগান দিচ্ছে দেশের তাঁতের কাপড়ের ৯০ শতাংশ পোশাক। দেশের জনসংখ্যার সাড়ে পাঁচ কোটি শিশু, যাদের বয়স ১৪ বছরের মধ্যে। এই শিশুদের জন্য যে বিপুল পরিমাণ পোশাক প্রয়োজন তার প্রায় পুরোটাই তৈরি হচ্ছে দেশে। এদের পোশাকের বড় অংশ দেশি পোশাক কারখানায় অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্যই তৈরি হয়। আবার একটা বড় অংশ আসে রফতানিমুখী পোশাক কারখানাগুলো থেকে। এসব পোশাক কারখানার অর্ডারের চেয়ে বেশি তৈরি করা পোশাক, রফতানি করতে না পারা স্টক লট ও রিজেকটেড পোশাকের মাধ্যমে দেশের শিশুদের পোশাকের বড় চাহিদা মেটে। ঢাকার ছোট-বড় সব মার্কেটে ছোটদের যেসব পোশাক বিক্রি হয়, তার উৎস কেরানীগঞ্জের পোশাক কারখানা অথবা রফতানিমুখী পোশাক কারখানা। শহরের মধ্য আয়ের মানুষের পোশাকের চাহিদা মিটছে দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর মাধ্যমে।
দেশে গড়ে ওঠা অনেক ফ্যাশন হাউসের বদৌলতে দেশের মানুষের রুচি পাল্টে দিয়েছে। বছর বছর এসব ফ্যাশন হাউসের বিক্রি বাড়ছে। সম্প্রসারিত হচ্ছে শাখা। এগুলোতে ছেলেদের পোশাকের মধ্যে পাঞ্জাবি বেশি বিক্রি হয়। আর প্যান্ট-শার্ট অথবা টি-শার্টের জন্য ছেলেদের ভরসা রফতানিমুখী পোশাক খাত আর দেশীয় কিছু ব্র্যান্ড। প্রতিবছর রফতানিমুখী পোশাক খাত থেকে শিশুদের পোশাকের মতো বিপুল পরিমাণ প্যান্ট, শার্ট ও টি-শার্ট স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয়। ঢাকার ইসলামপুরের পাইকারি কাপড় ব্যবসায়ীরা বলেন, একসময় ইসলামপুরের কাপড় ব্যবসার বড় অংশ আমদানিনির্ভর কাপড়ের ব্যবসা ছিল। এখন মেয়েদের কাপড় আমদানি হয় খুবই সামান্য। আর ছেলেদের জন্য কাপড় আমদানি আগের চেয়ে কমেছে। এখন অনেক দেশি টেক্সটাইল মিল ভালো কাপড় স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করছে। ঢাকাসহ সারা দেশের বাজারে নিম্ন মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ যে পোশাক কেনে, এর বড় অংশের জোগান আসে বুড়িগঙ্গার ওপারের কেরানীগঞ্জ থেকে। ওই উপজেলার আগানগর ও শুভাড্যা ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে পোশাক তৈরির বিশাল শিল্প। কেরানীগঞ্জ গার্মেন্ট মালিক ও দোকান মালিক সমিতির তথ্য মতে, ওই এলাকায় প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় কারখানা গড়ে উঠেছে। ওই সব কারখানায় কাজ করেন পাঁচ থেকে ছয় লাখ শ্রমিক। দেশের অভ্যন্তরীণ পোশাকের চাহিদার প্রায় ৫০ ভাগ মেটান তারা। ওই এলাকা বিখ্যাত ছেলেদের প্যান্ট তৈরির জন্য। ঢাকার বঙ্গবাজার, নিউমার্কেট, ঢাকা কলেজের সামনের পোশাকের মার্কেটের বেশির ভাগ প্যান্ট আসে কেরানীগঞ্জ থেকে।
শুধু ঢাকায় নয়, পুরো দেশেই যে জিন্স প্যান্ট ও গ্যাবার্ডিন কাপড়ের প্যান্ট বিক্রি হয়, এর প্রায় সবই তৈরি হয় কেরানীগঞ্জে। আর এখানে রফতানিমুখী পোশাক কারখানার অতিরিক্ত কাপড় থেকে বেশির ভাগ পোশাক তৈরি হয়। বিদেশি পণ্য বলতে দেশে ভারত থেকে কিছু মেয়েদের পোশাক আমদানি হয়। আবার চোরাই পথে প্রচুর পোশাক আসে। ভারত থেকে শাড়িও আসে। ঢাকার বড় বড় শপিং মলে বিদেশি পণ্য পাওয়া যায়। কিছু বিদেশি ব্র্যান্ডও এ দেশে তাদের পণ্য বিক্রি শুরু করেছে। তবে ঈদ বাজারে মোট বিক্রিতে তাদের অংশ নগণ্য।
মিরপুর বেনারসি পল্লীর দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে বেশির ভাগ শাড়ি তারা নিজেরাই তৈরি করেন। তবে কিছু দামি শাড়ি ভারত থেকে আমদানি করা হয়। আমদানির পরে এর ওপর নানা ধরনের কাজ করে মূল্য সংযোজন করা হয়। দেশের জুতার বাজারের বড় অংশের ক্রেতা মধ্য আয়ের মানুষ। তারা তাদের কেনা জুতাটি যাতে একটু বেশি দিন টেকে এ জন্য ব্র্যান্ডের জুতা কিনতেই পছন্দ করে। বাটা, এপেক্স, বে, জেনিসসহ বেশ কিছু কোম্পানির দখলে এই দেশীয় পণ্যের বাজার। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে অনেকগুলো ছোট-বড় জুতার ব্র্যান্ড আছে, যারা নিজেরা রফতানি করার পাশাপাশি দেশের বাজারে জুতা বিক্রি করছে।
দেশে তৈরি পোশাক ও অন্যান্য পণ্যের বিশাল বাজার ধরে রাখতে দামের সামজ্ঞস্য রাখার কোন বিকল্প নেই। কারণ এমনিতেই আমদানিকৃত পোশাক ও পণ্যের দাম অনেক বেশি। তাই এই বাজার সম্প্রসারণ তুলনামূলক সহজ। তবে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়ানোর প্রবণতায় অনেক ক্রেতাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা আকবর মিলন বলেন, চীন ও থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা পোশাক বেশ ব্যয়বহুল। দেশীয় পোশাক তুলনামূলকভাবে সস্তা। এভাবে বিভিন্ন মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতারাও বলেছেন একই কথা। তাই দেশীয় বাজার ধরে রাখতে মনিটরিংয়ে জোর দেয়ার দাবি ক্রেতাদের। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।