Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ঈদের ভীড়কে পুজি করে দক্ষিণাঞ্চলমুখি সড়ক নৌ ও আকাশ পথে সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিযোগীতা

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৩ এপ্রিল, ২০২২, ২:৫২ পিএম

ঈদ উল ফিতরের ভীড়কে পুজি করে রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক, নৌ ও আকাশ পথে বেসরকারী পরিবহন প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিযোগীতা শুরু করেছে। তবে এ ক্ষেত্রে নজিরবিহীন নৈরাজ্য চলছে আকাশ পরিবহন সেক্টরে। সরকারী নুন্যতম নজরদারীর অভাব সহ সীমাহীন উদাশীনতায় এখন ঢাকাÑবরিশাল ৬১ এ্যারোনটিক্যাল মাইলের আকাশ পথের ভাড়া দেড় হাজার কিলোমিটারের ঢাকাÑব্যাংককের প্রায় দেড়গুন। নৌ ও সড়ক পথেও নৈরাজ্য চললেও এসব কিছু দেখার কেউ আছে বলে মনে করছেন না যাত্রী সাধারন। এমনকি সড়ক, নৌ ও আকাশ পথে রাষ্ট্রীয় পরিবহন বানিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর নজিরবিহীন উদাশীনতা ও ব্যার্থতার কারণেও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যাত্রীদের পকেট কাটছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
করেনা মহামারীর দু বছরের ক্রান্তিকাল কাটিয়ে এবার নিকট জনের সাথে ঈদ করতে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ দক্ষিণাঞ্চলে ফিরছে। এ সুযোগকে পুজি করেই বেসরকারী পরিবহন প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। মাস তিনেক আগে ডিজেলের ২৩% মূল্য বৃদ্ধির সুযোগে বেসরকারী নৌযানের ডেকে প্রায় ৪০% এবং কেবিনে ২৫Ñ৩০% যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। এখন ঈদকে সামনে রেখে যে যেমন খুশি ভাড়া আদায় করছে। এক বছর আগে ঢাকাÑবরিশাল রুটে ডেক শ্রেণীতে ২শ টাকার স্থলে এখন কোন কোন নৌযানে ৪শ টাকাও আদায় করছে। প্রথম শ্রেণীর একক শয্যার ৯শ টাকার কেবিন এখন দেড় হাজার টাকা, দ্বৈত শয্যার ১৮শ থেকে ২ হাজার টাকার কেবিনে ২ হাজার ৮শ টাকা আদায় করা হচ্ছে। বেসরকারী নৌযানগুলোতে নানা মানের ভিআইপি কক্ষের ভাড়া ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। ঈদ উপলক্ষে ঢাকাÑবরিশালÑঢাকা নৌপথে প্রায় ২৭টি সরকারী-বেসরকারী নৌযানে যাত্রী পরিবহনের লক্ষে প্রস্তুত রয়েছে। এমনকি ভীড় সামাল দিতে বেসরকারী নৌযানগুলো ঈদের আগের ৩ দিন ও পড়ের অন্তত ৪ দিন ডবল ট্রিপেও যাত্রী পরিবহনের প্রস্তুতি নিলেও রাষ্ট্রীয় বিআইডব্লিউটিসি ঘরমুখি যাত্রীদের জন্য স্বাভাবিক সময়ের সিডিউলও রক্ষা করতে পারেছে না।
সড়ক পথেও বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও উত্তরাঞ্চল এবং পশ্চিমের খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন রুটে যাত্রী পরিবহনের লক্ষে বেসরকারী পরিবহন প্রতিষ্ঠানগুলো খেয়াল খুশিমত ভাড়া বৃদ্ধি করেই প্রস্তুতি চুড়ান্ত করেছে।
তবে চরম নৈরাজ্য চলছে আকাশ পথে। ঈদকে পুজি করে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থাও ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। ঢাকাÑবরিশাল সেক্টরে বর্তমানে বেসরকারী ইউএস বাংলার দুটি ছাড়াও রাষ্ট্রীয় বিমান বাংলাদেশ ও নভো এয়ারের আরো দুটি করে ফ্লাইট চলছে। ঈদকে সামনে রেখে ইউএস বাংলা ফ্লাইট না বাড়ালেও ৪ হাজার টাকার স্থলে ১০ হাজার ৮শ টাকায়ও টিকেট বিক্রী করছে। অপর বেসরকারী এয়ারলাইন্স নভো এয়ার একটির পরিবর্তে দুটি করে ফ্লাইট চালাবে ২৪ এপ্রিল থেকে ১ মে পর্যন্ত। তবে ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে ৪ হাজার ৮শ থেকে ৮ হাজার ৪শ টাকা।
আর এ অবস্থায় জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তার নিয়মিত ফ্লাইটের অতিরিক্ত ২৯ এপ্রিল ও ১ মে এবং ঈদের পড়ে ৬ ও ৭ মে দুটি করে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনের ঘোষনা দিয়েছে সরকারী এ আকাশ পরিবহন সংস্থা। কিন্তু সেখানেও ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে স্বাভাবিক সাড়ে ৩ হাজার টাকার স্থলে সাড়ে ৬ হাজার টাকা থেকে ৭ হাজার ৪শ টাকা। ফলে আসন্ন ঈদে নিকটজনের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে সাধারন মানুষের দূর্ভোগের কোন সীমা থাকছে না। বেসরকারী সংস্থাগুলোর সাথে সমান তালেই সরকারী এয়ারলাইন্সও ঈদের ভীড়কে পুজি করে ভাড়া বৃদ্ধি করেছে।
বিষয়টি নিয়ে বেসরকারী দুটি এয়ারলাইন্সের স্থানীয় অফিসের মত বিমান-এর বরিশাল বিক্রয় অফিসের ব্যাবস্থাপকও কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি। তার মতে, ‘এসব বিষয়ে বিমান-এর সদর দপ্তরই সব কিছু বলতে পারবেন’। তবে বেসরকারী একটি এয়ারলাইন্স-এর জনৈক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘যাত্রীদের মধ্যে যখন টিকেটের চাহিদা বেশী থাকে তখনই আকাশ পথে ভাড়াও বাড়ে’।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ