পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তরমুজ রসালো ফল। রমজান মাসে রোজাদারদের পছন্দের ফলের তালিকায় অন্যতম। কিন্তু মধ্যস্বত্ত¡ভোগী, চাঁদাবাজ ও অধিক মুনাফালোভী কিছু ব্যবসায়ীর কারণে রাজধানীর বেশির ভাগ রোজাদার ইফতারে তরমুজ রাখতে পারছেন না। কারণ রসালো ফলটির দামে যেন আগুন লেগেছে। মোকাম থেকে পিস হিসেবে কিনে আনা হচ্ছে তরমুজ। কিন্তু সেই তরমুজ ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে কেজি দরে। এতে দামের মধ্যে এমনিতেই বিস্তর ফারাক হয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী বা পটুয়াখালির কৃষকের জমিতে যে তরমুজ কেনা হচ্ছে ১০০ টাকায়। সেই তরমুজ রাজধানী ঢাকায় ভোক্তাদের কাছে আসতেই দাম হয়ে যাচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। ফলে রোজাদার সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে এক সময়ের সহজলভ্য গ্রীষ্মকালীন এ ফল। অবশ্য দাম বেশির কারণে এ ফলের বিক্রি কমে গেছে। ফলে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, কারওয়ান বাজার ও পুরান ঢাকার আড়তে দেখা যায় হাজার হাজার তরমুজ জড়ো করে রাখা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকায় যারা তরমুজ কিনছেন তাদের কয়েকগুণ বেশি দাম দিয়েই নিতে হচ্ছে তরমুজের স্বাদ। অথচ এ বাড়তি দামের সুফল গ্রামের প্রান্তিক চাষিদের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। হাড়ভাঙা শ্রম দেওয়া তৃণমূলের তরমুজ চাষিদের রক্ত শুষে খাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। মৌসুমের আগে ও শুরুতে যে দাম মাথায় নিয়ে বাজারে এসেছিল তরমুজ, এখন ভরা মৌসুমে সেই দামই আছে। রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে ৩০০ টাকার নিচে ছোট একটি তরমুজও কেনা যাচ্ছে না। গরিবের এ মৌসুমি ফলটিও তাই এখন কেবল বড়লোকের ইফতারের প্লেটেই শোভা বাড়াচ্ছে। সমাজের বড় অংশে থাকা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ দাম দর করেই হাপিত্যেশ করছেন।
পবিত্র এ রমজান মাসে কাঠফাটা রোদ-গরমে রোজাদারের প্রাণ যায়যায় অবস্থা। সারাদিন সিয়াম সাধনার পর ইফতারে রসালো এ ফল পাতে রাখতে চাইছেন কমবেশি সবাই। কিন্তু দামের কারণে সাধ ও সাধ্যের মিশেল করতে ব্যর্থ হচ্ছেন অধিকাংশ মানুষই। ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হরহামেশাই তরমুজ নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়ছেন অনেকে। বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রায় দিনই অভিযান চালাচ্ছে তরমুজের বাজারে।
গতকাল রাজধানীর শনিরআখড়া বাজারে তরমুজ কিনতে আসা মধ্যবয়সী সেলিম উল্লাহ পাটোয়ারি বলেন, এ তো ৩ থেকে ৪ বছর আগেও পিস হিসেবে তরমুজ কিনেছেন। কিন্তু নতুন নিয়ম কীভাবে হলো কেউ বলতে পারছেন না। কেজি হিসেবে কিনতে গেলে ৫০০ টাকার নিচে কোনো ভালো তরমুজ নেই। ছোট একটি তরমুজ কিনলেও ৩০০ টাকা লাগছে। কিন্তু ছোট তরমুজ বেশিরভাগই কাঁচা। তাই মাঝারি বা তরমুজ কেনা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর বাজারগুলোতে বরগুনা, গলাচিপা ও পটুয়াখালী থেকে ট্রাকে করে তরমুজ নিয়ে আসেন এবং কমিশনে বিক্রি করেন। প্রতিটি পাইকারি তরমুজের আড়তে একই কায়দায় তরমুজ বিক্রি হচ্ছে।
গলাচিপার একাধিক তরমুজ চাষী জানান, তারা প্রতি পিছ তরমুজ একশ থেকে ৩শ টাকা বিক্রি করে থাকেন। তাকে বাটকারায় মাপলে দেখা যায় একশ টাকার তরমুজ ৪ থেকে ৫ কেজি, এবং তিনশ টাকার তরমুজ ১০ কেজি থেকে ১২ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। অথচ রাজধানী ঢাকায় প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে তরমুজের দাম নিয়ে অরাজকতা প্রশ্নে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পরিচালক হাসান-আল-মারুফ বলেন, পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রির কথা শোনা গেলেও বাস্তবে তারা এর কোনো প্রমাণ পাচ্ছেন না। তারা নিয়মিতভাবে মহানগরের তরমুজের আড়ত ও খুচরা দোকানগুলোয় অভিযান পরিচালনা করছেন। সেখানে ব্যবসায়ীরা যেই পাকা চালান দেখাচ্ছেন তাতে পিস হিসেবে কোনো তরমুজের কেনাবেচা নেই। থাকছে মণ বা কেজি হিসেবে। এজন্য পিস না কেজি সেই প্রশ্নে তাদের করার কিছু নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।