নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : অজিঙ্কে রাহানেকে যখন মঈন আলি সরাসরি বোল্ড করেন ভারতের স্কোর তখন ৪ উইকটে ৭১। দিনের খেলা তখনও বাকি নূন্যতম ২৫ ওভার। নাটকীয় কিছুর প্রত্যশায় ইংল্যান্ডও বোলিং করল একটু তড়িঘড়ি করেই। কিন্তু পঞ্চম উইকেটে ১৪.২ ওভারের জুটিতে ইংলিশদের সেই আশা ধূসর করে দিল বিরাট কোহলি ও রভিচন্দ্রন আশ্বিনের ব্যাট। ২১ বলের ব্যবধানে আশ্বিন ও ঋদ্ধিমান শাহা ফেরার পরও ইংলিশদের হাতে সময় ছিল ১০ ওভার। কিন্তু নাটকীয় তেমন কিছুই হতে দিলেন না অপর প্রান্তে ভারতের আস্থার প্রতীক হয়ে থাকা বিরাট কোহলি। ফলে প্রত্যাশিত ড্রয়েই নিষ্পত্তি হল রাজকোট টেস্টের ভাগ্য।
এর আগে দিনের আলো ছিল পুরোটাই অ্যালিস্টার কুকের উপর। অসাধারণ ব্যাটিংয়ে তুলে নিয়েছেন ভারতের মাটিতে নিজের পঞ্চম সেঞ্চুরি। ফলে ভারতে কোনো বিদেশী খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ সংখ্যক শতকের মালিক এখন কুকই। ইংলিশ অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ ১২টি শতকের মালিকও এখন কুক। সাকুল্যে টেস্ট সেঞ্চুরির সংখ্যায় স্যার ডন ব্রাডম্যানকে ছাড়িয়ে ইংল্যান্ড অধিনায়কের শতক এখন ৩০টি। স্বাগতিক বোলারদের বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অভিসিক্ত হাসিব হামিদের সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন কুক। ৮২ রানের ইনিংস খেলে ভবিষ্যতে ইংলিশ ক্রিকেটের একজন হওয়ারই জানান দেন হাসিব। রুট দ্রæতই ফিরলে বেন স্টোকসকে নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতির পর আরো পৌনে এক ঘণ্টার মতো ব্যাট চালিয়ে যান কুক। ব্যাক্তিগত ১৩০ রানে আউট হওয়ার পরই ইনিংস ঘোষণা করেন। স্কোরবোর্ডে তখন মাত্র ৩ উইকেটে ২৬০। ভারতের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩১০ রানের।
¤øান ব্যাটিং উইকেটে শেষ বিকেলে এটুক উত্তাপই বা আশা করেছিল কজন। যে স্পিন ভাবা হচ্ছিল ইংলিশদের সবচেয়ে বড় ভয়ের কারণ, সেখানে ইংলিশ স্পিনাররাই ছড়ালেন আতঙ্ক। দুই ইনিংসে মঈন-রশিদরা ৩৩.৩০ গড়ে যেখানে তুলে নেন ১৩ উইকেট, সেখানে আশ্বিন-মিশ্রদের অর্জন ৫৭.৮৮ গড়ে মাত্র ৯টি। ভারত অধিনায়ক শেষ বিকেলে দেয়াল হয়ে না দাঁড়ালে ৫ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের চিত্রনাট্যটা হয়তো ভিন্নভাবেই লিখতে হতো। শেষ পর্যন্ত ৫২.৩ ওভারের লড়াইয়ে ৬ উইকটে ১৭২ রান সংগ্রহ করে ভারত। চার বছর পর ভারতের মাটিতে কোনো টেস্ট দেখল ড্রয়ের মুখ।ইংল্যান্ড : ৫৩৭ (স্টোকস ১২৮, রুট ১২৪, মঈন ১১৭; জাদেজা ৩/৮৬) ও ২৬০/৩ (কুক ১৩০, হামিদ ৮২; মিশ্র ২/৬০)।
ভারত : ৪৮৮ (বিজয় ১২৬, পুজারা ১২৪, আশ্বিন ৭০; রশিদ ৪/১১৪) ও ১৭২/৬ কোহলি ৪৯*; রশিদ ৩/৬৪)।
ফল : ম্যাচ ড্র। ম্যাচসেরা : মঈন আলি (ইংল্যান্ড)।
কুকের রেকর্ডময় শতক
* টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি ছিল অ্যালিস্টার কুকেক ৩০তম সেঞ্চুরি। ছাড়িয়ে গেলেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের সেঞ্চুরি সংখ্যা। একসময় ব্র্যাডম্যানের সেঞ্চুরিই ছিল সর্বোচ্চ। সেঞ্চুরি সংখ্যায় তার পর অনেকেই ছাড়িয়ে গেছেন তাকে। কিন্তু এই প্রথম ছাড়াতে পারলেন চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ইংল্যান্ডের কেউ!
* ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হিসেবেও সবচেয়ে বেশি শতক এখন এককভাবে কুকের। টস করা টেস্টে কুকের এটি ১২তম সেঞ্চুরি। ছাড়িয়ে গেছেন তার সাবেক কোচ মেন্টর গ্রাহাম গুচের ১১টির রেকর্ড। অধিনায়ক হিসেবে ১০টি সেঞ্চুরি করেছিলেন পিটার মে। মাইকেল ভন ও অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস ৯টি করে।
* ভারতের মাটিতে পাঁচটি শতক হয়ে গেল কুকের। ভারতের বাইরের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ভারতে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড এটিই। চারটি করে শতক নিয়ে এতদিন কুক ছিলেন দুই ক্যারিবিয়ান গ্রেট স্যার এভারটন উইকস, ক্লাইভ লয়েড ও দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলার পাশে।
* শুধু ভারতে নয়, এশিয়ার মাটিতেই এখন বাইরের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির কীর্তি এককভাবে কুকের। ভারতে পাঁচটি ছাড়াও দু’টি শতক করেছেন বাংলাদেশে, একটি করে শ্রীলঙ্কা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সব মিলিয়ে ৯টি। এশিয়ায় আটটি শতক করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান গ্রেট জ্যাক ক্যালিস। তার স্বদেশি আমলার আছে এখন পর্যন্ত সাতটি। সাবেক অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডারের ছয়টি।
* টেস্টের তৃতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির ক্ষেত্রে কুক স্পর্শ করলেন কুমার সাঙ্গাকারার রেকর্ড। তৃতীয় ইনিংসে দু’জনেরই এখন সেঞ্চুরি ১২টি করে। ১০টি করে আছে ক্যালিস, শচিন টেন্ডুলকার ও ম্যাথু হেইডেনের। আমলা ও বোর্ডারের আছে ৯টি করে।
* সেঞ্চুরির পথে এবছর হাজার রানের মাইলফলকও পেরিয়েছেন কুক। এই বছরে হাজার রান করা তিন ব্যাটসম্যানই ইংল্যান্ডের। কুকের আগে করেছেন জো রুট ও জনি বেয়ারস্টো। এই নিয়ে ক্যারিয়ারে পাঁচবার এক পঞ্জিকাবর্ষে হাজার রান করলেন কুক। স্পর্শ করলেন সাঙ্গাকারা, হেইডেন, ক্যালিস, ব্রায়ান লারা ও রিকি পন্টিংকে। তাদের চেয়ে বেশিবার করেছেন কেবল টেন্ডুলকার, ক্যারিয়ারে ছয়বার।
* মাত্র চতুর্থ বিদেশী ব্যাটসম্যান হিসেবে ভারতের মাটিতে হাজার রানের কীর্তিও গড়েছেন কুক। তার আগে করতে পেরেছিলেন কেবল ক্লাইভ লয়েড, গর্ডন গ্রিনিজ ও হেইডেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।