Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিমুলিয়া বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি সংকট: আসন্ন ঈদে যাত্রীচাপ সামাল দিতে কতটা প্রস্তুত?

লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০২২, ১২:৪১ পিএম

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রবেশদ্বার মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া মাদারীপুরের বাম লাবাজার নৌ-পথে নাব্যতা সংকট, ফেরি সংকটসহ নানা সমস্যা বিরাজ করছে। ফলে আসন্ন ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহনের চাপে গত দুই বছরের ন্যায় ঘাটে এবারও বিপর্যয় নেমে আসার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে ঘাট কর্তৃপক্ষ দাবি করছে- যাত্রী চাপ সামাল দিতে ঈদের আগে ফেরি বাড়ানো হবে। ফলে গতবারের মত এবার আর ভোগান্তি থাকবে না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছর বর্ষা মৌসুমে পদ্মা সেতুর পিলারে একাধিকবার ফেরির ধাক্কা লাগে। এরপর দুর্ঘটনা এড়াতে গত বছর ১৮ আগস্ট থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ৪৭ দিন পর গত ৫ অক্টোবর সীমিত আকারে ফেরি চলাচল শুরু হয়। তবে তীব্র স্রোতের কারণে ছয় দিন চলার পর আবারও ফেরি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর গত ৮ নভেম্বর থেকে পুনরায় ফেরি চালু হয়েছে। বেগম রোকেয়া, কুঞ্জলতা, কদম ও সুফিয়া কামাল নামের চারটি ফেরি শুধু হালকা যানবাহন পারাপার করছে। ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বিকল্প রুট হিসেবে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে যানবাহন নিয়ে পারাপার হয়েছেন অধিকাংশ চালকরা। পূর্ব ঘোষণা থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলগামী ২১ জেলায় যাতায়াতকারী অসংখ্য ছোট যানবাহন প্রতিদিন ঘাটে আসছে। ফেরি সংকটের কারনে প্রতিদিন দুর্ভোগে পড়ছে এই পথে যাতায়াত কারি লাখো মানুষ।
ঢাকাগামী যাত্রী সুরুজ মিয়া বলেন, আমি ঢাকায় একটি ফ্যাক্টরিতে কাজ করি। জরুরি কাজ থাকায় ২ দিন আগে দেশের বাড়ি বরিশাল গিয়েছিলাম। আগামীকাল কাজে যোগ দেব। ঈদের দুই দিন আগে ছুটি হবে, তখন বাড়িতে যাব ঈদ করতে। গত বছরের কথা চিন্তা করে এবার পরিবার নিয়ে যেতে ভয় করছে।
খুলনা থেকে আসা ঢাকাগামী যাত্রী জাহিদ প্রধাণ বলেন, ঢাকা যাচ্ছি ঈদের আগে আর আশা হবে না বাড়িতে। গতবার বাড়ি যেতে ১৫ ঘণ্টা সময় লেগেছে। চারিদিকে খালি মানুষ দেখেছি। এবার ফেরির সংখ্যাও কম আল্লাহ জানে এবার কী হয়। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে এ সমস্যা যাবে না।
মাদারীপুর শিবচরগামী যাত্রী ফাতেমা বেগম জানান, বাবা অসুস্থ তাই পরিবার নিয়ে সাভার থেকে সাহরীর পরে রওনা দিছি ঘাটে এসে বাচ্চাদের নিয়ে ফেরির জন্য সিরিয়ালের আছি, রোজার দিন প্রচন্ড রৌদ্রের তাপ খুব কষ্ট হচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে কে- টাইপের তিনটি শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি রুটে দুটি ফেরিসহ দুই রুটে মোট পাঁচটি ফেরি চলাচল করছে। নাব্যতা সংকটের পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ছয় মাসের অধিক সময় ধরে ভোর ৫টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ছোট যানবাহন নিয়ে ফেরি চলাচল করছে। সন্ধ্যার পর শিমুলিয়া থেকে শরীয়তপুরের মাঝিকান্দি ফেরিঘাটে দুটি ফেরি চলাচল করলেও অল্পসংখ্যক ভারী যানবাহন পারাপার করতে দেওয়া হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) মো. ফয়সাল আহমেদ দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ঈদে বাড়তি চাপ কমাতে আরও ফেরি বাড়ানো হবে বলে যানা গেছে। বর্তমানে দুই রুটে ৫ টি ফেরি চলাচল করছে।
উলেখ্য:গত বছর ঈদুল ফিতরের সময় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ঘরমুখী মানুষের চাপ ছিল অতিরিক্ত। পদ্মায় তীব্র স্রোত থাকায় বন্ধ ছিল লঞ্চ ও স্পিডবোট। পারাপারের একমাত্র ভরসা ছিল শুধু ১২টি ফেরি। সে সময় দেখা গেছে যাত্রীদের চাপে যানবাহনের পরিবর্তে শুধু যাত্রী নিয়ে পারাপার হয়েছে ফেরিগুলো। গত বছরের ১২ মে ফেরি পর হতে গিয়ে তীব্র রোদ, গরম ও প্রচণ্ড ভিড়ে অক্সিজেনের অভাবে মারা মায় পাঁচ যাত্রী। অসুস্থ হয়ে পড়েন আরও অন্তত ২০ জন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ