চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
কোরআন তেলাওয়াত মানুষের আত্মার খোরাক, অন্তরের আলো এবং সরল পথের দিশারী। যখনই আপনি আপনার অন্তরের শক্তি হারিয়ে ফেলবেন, ঘাটতি অনুভব করবেন তখনই কোরআনের দিকে ফিরে আসুন আসল শান্তির খোঁজ পাবেন। কোরআন ব্যাখ্যা দিয়েছে কিভাবে আপনি আপনার ঈমানের রিচার্জ করবেন। আল্লাহ তায়লা বলেন, আর যখন কোন সূরা অবতীর্ণ হয়, তখন তাদের কেউ কেউ বলে, এ সূরা তোমাদের মধ্যেকার ঈমান কতটা বৃদ্ধি করলো? অতএব যারা ঈমানদার, এ সূরা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করেছে এবং তারা আনন্দিত হয়েছে। (সূরা তওবাহ: ১২৪)।
স্বেচ্ছায় রোযা রাখার অভ্যাস করুন : রোযা তাকওয়া অর্জনের অন্যতম উপায়। কেননা রোযা খুব কম মানুষ, লোক দেখানোর জন্য রাখে। আত্মার পরিশুদ্ধতার জন্যে রোযা রাখা জরুরি। রোযা রাখার দ্বারা শয়তানের চক্রান্ত আর খারাপ ইচ্ছা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তৈরি হয়। এছাড়া রোযা রাখার দ্বারা আল্লাহর সাথে আলাদা সম্পর্ক তৈরি হয়। রোযা রাখার দ্বারা যেহেতু আল্লাহর সাথে আলাদা সম্পর্ক তৈরি হয় এবং গুনাহ থেকে বিরত থাকা যায় তাই রোযা ঈমান বৃদ্ধির অন্যতম নিয়ামক।
সর্বদা আল্লাহর জিকির করা : জিকির বলতে মূলত সর্বদা আল্লাহর কথা অন্তরে স্মরণ রাখা বোঝায়। এখন সেটা হতে পারে সুবহানাল্লাহ কিংবা আলহামদুলিল্লাহ বলার দ্বারাও। আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। (সূরা আর রা’দ: ২৮)। জিকির করার দ্বারা আপনার অন্তরে সর্বদা আল্লাহর নাম জপতে থাকবে আর যার অন্তরে আল্লাহর নাম থাকবে তার ঈমান বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
এছাড়া দৈনিক আপনি নিচের জিকির গুলো করতে পারেন, সুবহানাল্লাহ- প্রতিদিন ১০০ বার। সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী- প্রতিদিন ১০০ বার। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, সুবহানআল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর- সবগুলো ১০০ বার করে। সকাল-বিকাল দুরুদ পাঠ।
সর্বদা মৃত্যুর কথা স্মরণ : প্রত্যেক মানুষ মৃত্যুর স্বাদ নিবে।
এক্ষেত্রে কে ধনী বা কে গরিব, কে বৃদ্ধ বা কে তরুণ এসব বিবেচনা করা হবে না প্রত্যেকেই মৃত্যুবরণ করবে। যখন আমরা নিয়মিত এই মৃত্যুর কথা স্মরণ করবো তখন আমাদের অন্তর সর্বদা নেক আমল করার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠবে। জান্নাত লাভের আকাঙ্ক্ষা আমাদের অন্তরে আসবে। আর সর্বদা মৃত্যুর কথা স্মরণ করার দ্বারা আমাদের ঈমানও বৃদ্ধি পাবে।
আলেমের সহবত এবং ইসলামী জ্ঞান অর্জন করা : আলেমের সাথে সম্পর্ক, তাদের সাথে ইসলামী আলোচনা এবং ইসলামী জ্ঞান অর্জনের দ্বারা ঈমান বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ বলেন, যারা জানে এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে? চিন্তা-ভাবনা কেবল তারাই করে, যারা বুদ্ধিমান। (সূরা যুমার: ৯)।
আল্লাহর নিকট দোয়া করা : রাসূল সা. বলেছেন, দোয়া হলো মুমিনের হাতিয়ার। ঈমান হ্রাস পেয়েছে এরূপ ঘটলে যেমন আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে তেমনি সর্ব অবস্থায় আল্লাহর নিকট দোয়া করতে হবে। বেশ কিছু সময় দোয়া কবুল হয় যথা: যখন আপনি মজলুম থাকবেন। আযান এবং ইকামতের মধ্যবর্তী সময়। আযানের সময়। অসুস্থতার সময়। তাহাজ্জুদ নামাজের সময়। রমজান মাসে বিশেষভাবে শবে কদরের রাত্রে। মুসাফির অবস্থায়। সিজদাহরত অবস্থায়। শুক্রবার আসর নামাজের পর। সন্তানের জন্য পিতা-মাতার।
শেষ কথা : সর্বদা ঈমানী কথা বলা তথা ইসলামী আলোচনার দ্বারা ঈমান বৃদ্ধি পায়। উপরে উল্লেখিত উপায় ছাড়া আরও অনেকগুলো আমলের দ্বারা ঈমান বৃদ্ধি পায় যা এখানে উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।