নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ঘরোয়া ক্রিকেটে স্পিনারদের ছড়াছড়ি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশ যখন খেলতে নামে, তখন স্পিনারদের বোলিং আক্রমণের মূল চালিকাশক্তি বিবেচনা করা হয়। বিশেষকরে উপমহাদেশীয় দল হিসেবে ‘স্পিনে ভালো’ এমন একটা তকমা লেগে আছে বাংলাদেশ দলেও। কিন্তু সেই অহংয়ে লেগেছে বড়সড়ো চোট। প্রতিপক্ষ দলে উঁচু মানের স্পিনার থাকলে লেজেগোবরে অবস্থা হয়ে যায় টাইগার ব্যাটারদের। সেটা দেশের মাটিতে হোক কিংবা দেশের বাইরে। যার প্রমাণ আরও একবার বাজেভাবে মিলল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ হওয়া টেস্ট সিরিজে।
তাহলে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, দেশে এত স্পিনার থাকা সত্ত্বেও কেন বারবার খাবি খায় বাংলাদেশ? গতকাল পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টে ৩৩২ রানে বিধ্বস্ত হওয়ার পর অধিনায়ক মুমিনুল হক দিলেন সরল স্বীকারোক্তি। তার উত্তর অবশ্য বিস্ময় জাগানোর মতো। মুমিনুল বললেন, দুই-একজন ছাড়া বাংলাদেশের বাকিরা স্পিন ভালো খেলে না। এই বাঁহাতি ব্যাটার যোগ করলেন, ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের স্পিনারদের মধ্যে পার্থক্যও অনেক।
মুমিনুলের মতে, উঁচু মানের স্পিনের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটারদের দুর্বলতা আগে থেকেই রয়েছে। কোন বল কীভাবে খেলতে হবে সেটা অধিকাংশের অজানা, ‘এটা তো আগে থেকেই, সবাই জানে। উঁচু মানের স্পিনের বিপক্ষে আমরা খুব বেশি ভালো খেলোয়াড় না, আমার কাছে মনে হয়। শুনতে খারাপ লাগবে। আমরা দুই-একজন ছাড়া কেউ ভালো স্পিন খেলে না। হয়তো কোনদিক দিয়ে কীভাবে খেলতে হবে সেটা আমরা বুঝি না। এসব জায়গায় আমাদের অনেক উন্নতি করতে হবে।’
প্রোটিয়াদের মাটিতে দুই টেস্টের সিরিজে মোট ৪০ উইকেটের মধ্যে স্পিনারদের কাছে ২৯ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ডারবানে প্রথম টেস্টে ১৪টি, পোর্ট এলিজাবেথে দ্বিতীয় টেস্টে ১৫টি। বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজ নেন ১৬ উইকেট। টানা দুই ম্যাচে ইনিংসে ৭ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব দেখান তিনি। সাত বছর পর এই সংস্করণে খেলতে নামা অফ স্পিনার সাইমন হার্মার দখল করেন ১৩ উইকেট। অতীতে ঘরের মাঠে টেস্টে আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের স্পিনারদের বিপক্ষেও হুড়মুড় করে গুঁড়িয়ে যাওয়ার রেকর্ড আছে বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের স্পিনারদের উপমহাদেশের বাইরে সফল হতে না পারার পেছনে উইকেটের দায় দিলেন মুমিনুল। পাশাপাশি টেকনিক্যাল ঘাটতির কথাও উল্লেখ করলেন তিনি, ‘আমাদের দেশে দেশে যে উইকেট আর এখানকার যে উইকেট, তা কিন্তু আলাদা। বিশেষ করে, উপমহাদেশের বাইরে (উইকেট আলাদা)। সাইড স্পিন বলে একটা কথা আছে, যেটা আমাদের দেশে খুব কাজে দেয়। তো এই সাইড স্পিনটা আমাদের উপমহাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এসব জায়গায় সাইড স্পিন অতটা কাজে দেয় না, ওভারস্পিন খুব কাজে দেয়। আমাদের দেশের খেলোয়াড়রা এখানে এসে ওভারস্পিন করবে, সেটা এক-দুই দিনে (সম্ভব না)। টেকনিকও চেঞ্জ করতে হয়। সেক্ষেত্রে তার আগের টেকনিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর সত্যি বলতে, ঘরোয়া ক্রিকেটের স্পিনার ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্পিনারের মধ্যে অনেক পার্থক্য।’
মহারাজ, হার্মারদের বিপক্ষে দলের এমন বেহাল দশা মেনে নিতে পারছেন না টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও। তার মতে ব্যাটিংয়ে ভোগান্তির পাশাপাশি বাংলাদেশের স্পিনাররাও প্রোটিয়া স্পিনারদের মানের কাছাকাছি বল করতে পারেননি, ‘এখানে এসে আমরা স্পিন সামলাতে পারলাম না, এটাই আমার বেশি দুঃখ। আমরা মনে করি, স্পিনে আমরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলি। আমাদের স্পিনাররা যে ওদের ব্যাটসম্যানদের অনেক ভুগিয়েছে, তাও না। হ্যাঁ, তাইজুল (ইসলাম) ৫ উইকেট নিয়েছে, মিরাজ ভালো বোলিং করেছে। মহারাজ কিংবা হার্মার যতটা ভোগাল আমাদের ব্যাটসম্যানদের, আমাদের স্পিনাররা কিন্তু ওদের ব্যাটসম্যানদের ততটা ভোগাতে পারেনি।’
গত কয়েক মাস ধরে পেসারদের পারফরম্যান্সের গ্রাফ উন্নতির দিকে। তবে এই সিরিজে তাদের থেকেও সেরাটা না পাওয়ার হতাশা মাহমুদের, ‘ওদের পেসারদের কথা যদি বলি, ওরা একটা লাইন ও লেংথে সুশৃঙ্খল ছিল। আমাদেরও পরিকল্পনা ছিল কিন্তু বাস্তবায়নে যথেষ্ট ঘাটতি ছিল। আমাদের পেসাররা যেটা হয়েছে, এই টেস্টেও আগের টেস্টেও, প্রথম দুই ঘণ্টায় যেভাবে বোলিং করার কথা ওরা সেভাবে করতে পারেনি। সেখানেই ম্যাচ অনেক দূরে সরে গেছে। যদি নতুন বলে আমরা দুইটা উইকেট নিতে পারতাম, তাহলে খেলাটা ভিন্নরকম হতে পারতে। ছোট ছোট এই ভুলগুলো দুই টেস্টে আমাদের ভুগিয়েছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।