Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এভারেস্টের আবর্জনায় তৈরি হবে শিল্পকর্ম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৪ এএম

এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে জমে থাকা আবর্জনা সাফ করার অন্য রকম উদ্যোগ নিয়েছিল নেপাল সরকার। এ বার সেই আবর্জনাকে অন্যত্র সরিয়ে এনে তাকে শিল্পরূপ দেওয়া হবে, এবং তার জাদুঘর বানানো হবে। এই শিল্পকলা পর্যটক এবং একই সঙ্গে স্থানীয়দেরও সচেতন করবে বলে মত উদ্যোক্তাদের। বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে এখন প্রতি বছর পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গের আরোহণে হাজার হাজার মানুষ হাজির হন বেস ক্যাম্পে। তাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিক, ছেঁড়া তাঁবু, চটি, অক্সিজেন সিলিন্ডারের মতো বহু কিছুই পড়ে থাকে এভারেস্টের গোড়ায়। বছরের পর বছর জমতে জমতে সেখানে আবর্জনার পাহাড় তৈরি হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। এর আগে এই আবর্জনার অনেকটাই পুড়িয়ে দেওয়া হত। তাতে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে বলেই, এ বার সেগুলোকে নীচে নামিয়ে এনে তাকে শিল্পরূপ দেওয়ার উদ্যোগ। কবে থেকে এভারেস্টের পাদদেশে এই ভাবে আবর্জনা জমতে শুরু করল? পর্বতাভিযান গবেষক এবং চিকিৎসক রূপক ভট্টাচার্য বলছেন, যখন থেকে এভারেস্ট অভিযানের বাণিজ্যিকীকরণ শুরু হয়েছে তবে থেকেই আবর্জনার পরিমাণ বাড়ছে। ‘‘নয়ের দশকের গোড়ার দিকে নিউজিল্যান্ডের কোম্পানি ‘হল অ্যান্ড বল অ্যাডভেঞ্চার কনসালট্যান্টস’ বিপুল অর্থের বিনিময়ে এভারেস্ট শৃঙ্গে অভিযাত্রীদের নিয়ে যাওয়া শুরু করে। এর পর থেকেই হু হু করে অভিযাত্রীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। আর আবর্জনার পরিমাণও বাড়তে থাকে পাল্লা দিয়ে’’, বলছেন তিনি। ২০১০ সালে সফল ভাবে এভারেস্ট শৃঙ্গ আরোহণ করেন বসন্ত সিংহরায়। বেস ক্যাম্পের আবর্জনা পরিষ্কার করার সুষ্ঠু বন্দোবস্ত তিনি অবশ্য দেখেছিলেন তখন। তার কথায়, ‘‘লুকলা থেকে এভারেস্ট বেস ক্যাম্প পর্যন্ত জায়গায় জায়গায় আবর্জনা ফেলার পাত্র রাখা আছে। ফলে এ দিক ও দিক ময়লা ফেলার প্রয়োজন নেই। বেস ক্যাম্প থেকেও শেরপারা নিয়মিত আবর্জনা নীচে নিয়ে যেতেন। যে সমস্ত আবর্জনা বায়োডিগ্রেডেবল, সেগুলো রাখার জন্যও আলাদা পাত্র ছিল। আলুর খোসা বা এমন কিছু জিনিস পাখিরা খেত। ফলে সেগুলো নিয়ে আলাদা করে ভাবতে হয়নি। যেগুলো বায়োডিগ্রেডেবল নয়, সমস্যা সেগুলো নিয়েই।’’ এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে জমা আবর্জনা রিসাইকেল করে তার শিল্পরূপ দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে ‘সাগরমাতা নেক্সট’ নামের সংস্থা। সংস্থার প্রধান টমি গুস্তাফসন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আবর্জনা জ্বালিয়ে না দিয়ে, পরিবেশ বান্ধব করে কী ভাবে তাকে ব্যবহার করা যায়, তার প্রশিক্ষণও দেবে এই উদ্যোগ। ‘‘আমাদের আশা, মানুষ এখন থেকে জঞ্জাল-সমস্যা মেটানোর কথা অন্য ভাবে ভাববেন’’, জানালেন টমি। ঠিক কী ধরনের অবর্জনা জমেছে এভারেস্টের গোড়ায়? রূপক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘ছেঁড়া তাঁবু, হাজার হাজার মিটার দড়ি, ভাঙা মই, প্লাস্টিকের প্যাকেট, আর তার সঙ্গে অক্সিজেনের প্রচুর খালি সিলিন্ডার। সিলিন্ডারগুলো নামিয়ে আনা দরকার। কারণ ওগুলো আবার ব্যবহার করা যায়।’’ এভারেস্ট থেকে কুড়িয়ে আনা এই সব চটি, তাঁবুর টুকরো জুড়ে সিয়াংবোচে নামের এলাকায় তৈরি হয়েছে এই জাদুঘর। এ সব টুকরো দিয়ে বানানো হচ্ছে পাখি বা অন্য প্রাণীর অবয়ব। কী ভাবে আবর্জনা সরানো হচ্ছে এভারেস্ট থেকে? ‘ইকো হিমাল গ্রুপ’ নামের এক সংগঠন এই সাফাইয়ের কাজে যুক্ত। সংগঠনের সদস্য ফিনজো শেরপা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘ক্যারি মি ব্যাক’ নামে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ‘‘প্রত্যেক অভিযাত্রী এবং গাইডকে অনুরোধ করা হচ্ছে, তারা যেন ফেরার সময় ১ কিলোগ্রামের একটি আবর্জনার বস্তা লুকলা বিমানবন্দর পর্যন্ত সঙ্গে নিয়ে যান। পর্যটক এবং অভিযাত্রীদের সাহায্য পাওয়া গেলে কাজটা সহজ হবে।’’ এবিপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এভারেস্টের আবর্জনায় তৈরি হবে শিল্পকর্ম
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ