মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কার্বন ডাই-অক্সাইডের পর সবচেয়ে ক্ষতিকর গ্রিনহাউজ গ্যাস মিথেন। বায়ুমন্ডলে এ গ্যাসের মাত্রা ক্রমে বেড়েই চলেছে। মিথেনের আধিক্য জ্বালানি হিসেবে গ্যাসটিকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। ফলে নানা উৎস থেকে মিথেন গ্যাস নিঃসরণ বাড়ছে, যা পরিবেশের জন্য ভয়ংকর হুমকি বয়ে আনছে। স¤প্রতি মার্কিন সরকারের তথ্যে বলা হয়, টানা দ্বিতীয় বছরের মতো ২০২১ সালে বায়ুমন্ডলে মিথেন গ্যাস রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যাটমোসফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে মিথেন গ্যাস ১৭ পিপিবি (পার্টস পার বিলিয়ন) বেড়েছে। ১৯৮৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত গত বছর মিথেনের পিপিবি সর্বোচ্চ ছিল। এর আগে সর্বোচ্চ পিপিবি ছিল ২০২০ সালে। ওই বছর মিথেনের মাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ৩ পিপিবি। জীবাশ্ম জ্বালনি পোড়ালে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ হয়। বিষাক্ত এ গ্যাসের স্থায়িত্ব বায়ুমÐলে দীর্ঘ হলেও মিথেনের স্থায়িত্ব তুলনামূলক কম। এ সত্তে¡ও অন্যান্য গ্রিনহাউজ গ্যাসের মতোই মিথেন ক্ষতিকর। পরিবেশবিদদের মতে, আবহাওয়া পরিবর্তনে মিথেন গ্যাসের প্রভাবও রয়েছে। এছাড়া কার্বন ডাই-অক্সাইডের তুলনায় মিথেন গ্যাস উষ্ণতা ধরে রাখতে ২৫ গুণ শক্তিশালী। আবহাওয়া সংকটের অন্যতম এক স্বল্পমেয়াদি প্রধান প্রভাবক হিসেবে মিথেনের নাম বলা যায় প্রথম সারিতে রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বায়ুমন্ডলে মিথেনের মাত্রা কমানো সম্ভব হলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমানো যেতে পারে। তবে বায়ুমন্ডলে রেকর্ড পরিমাণ মিথেন গ্যাস বৃদ্ধি থেকে ধারণা করা হচ্ছে, তেল ও গ্যাস কুপ খনন কার্যক্রমে মিথেন গ্যাস ছড়িয়ে পড়ছে। এ বিষয়ে এনওএএর প্রশাসক রিক স্পিনরাড বলেন, আমাদের তথ্য বলছে, খুব দ্রæতগতিতে বৈশ্বিক গ্যাস নিঃসরণ বেড়ে চলছে। এ তথ্য অনস্বীকার্য ও উদ্বেগজনক। বিভিন্ন উৎস থেকে মিথেন গ্যাস নিঃসরণ হয়। জলাভ‚মিতে জৈব পদার্থ ক্ষয় থেকে শুরু করে গরুর ঢেকুর থেকেও বায়ুমন্ডলে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। এনওএএ বলছে, এক-তৃতীয়াংশ মিথেন নিঃসরণের জন্য দায়ী জীবাশ্ম জ্বলানি। তেল ও গ্যাস ক‚প খননের সময় প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে স¤প্রতি জাতিসংঘ একটি আবহাওয়া প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক তাপমাত্রার উচ্চবৃদ্ধি ঠেকাতে এক-তৃতীয়াংশ মিথেন নিঃসরণ কমাতে হবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মিথেন নিঃসরণ কমালে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমানো সম্ভব। রিক স্পিনরাড বলেন, স্বল্পমেয়াদে আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করতে মিথেন গ্যাসের নিঃসরণ ঠেকানো আমাদের জন্য হাতিয়ারস্বরূপ। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের হারও কমবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুমন্ডলে মিথেন গ্যাস বৃদ্ধির হার আশঙ্কাজনক। মিথেন গ্যাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটিজ ক্লাইমেট ল ইনস্টিটিউটের পরিচালক কেসি সিগেল বলেন, যেসব সংস্থা মিথেন নিঃসরণ করে বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করছে, তাদের আয় থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ মিথেন ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ব্যয় করা দরকার। সত্যিকার অর্থে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি কমাতে হবে। বৈশ্বিকভাবে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে মিথেন গ্যাসের নিঃসরণ কমানো অন্যতম একটি উদ্যোগ। তা না হলে বিপর্যস্ত পথ ধরে এক অপরিচিত পৃথিবীর দিকে আমরা অগ্রসর হব। এনওএএ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।