Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জবাব চাইল ফিলিপাইন

ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৬ এএম

গত মার্চের শুরুর দিকে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের সময় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাবশত ভারতীয় একটি মিসাইল উৎক্ষেপণের ঘটনা ঘটে। পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ার পর দেশটির সেনাবাহিনী তা ধ্বংস করে। এ ঘটনার কয়েকদিন পরই এ বিষয়ে ভারতের কাছে জানতে চায় ফিলিপাইন। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ফিলিপাইন ব্যাখ্যা চেয়েছে, কারণ ভারতের তৈরি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য ভারতের সাথে তাদের চুক্তি রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিপাইনে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত শম্ভু এস কুমারানকে এ জন্য তলব করা হয়েছিল। ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ফিলিপাইনকে জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার সাথে কোনো প্রযুক্তিগত সমস্যা ছিল না এবং এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তিনি আরো বলেন, তদন্ত শেষ হলে ফিলিপাইনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তথ্য জানানো হবে।
পাকিস্তানের আকাশসীমায় দুর্ঘটনাক্রমে ঢুকে পড়া ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র বলে দাবি করা হচ্ছে। ঘটনার বিষয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যে বিবৃতি দিয়েছিল সেখানে কোথাও ব্রহ্মোস মিসাইলের উল্লেখ করা হয়নি। আর এ বিষয়টি নিয়েই চিন্তিত ফিলিপাইন।
চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য ভারতের সাথে চুক্তি করে ফিলিপাইন। এই ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) এবং রাশিয়ার এনপিও মেশিনেস্ট্রোনিয়া যৌথভাবে তৈরি করেছে। ফিলিপাইনের সাথে চুক্তিটি ৩৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের, যা ভারতের জন্য একটি বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি।
ভারতীয় রাষ্ট্রদূত শম্ভু এস কুমারান বলেন, আমি এটাকে কৌতূহল বলব, উদ্বেগ নয়। আমি ফিলিপাইনের প্রতিরক্ষা সচিবের সাথে কথা বলেছি এবং তাকে বিস্তারিত বলেছি যে, কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল না এবং তদন্ত চলছে। পাকিস্তানের বিমানবাহিনী বলছে মিসাইলটি পতনের আগে পাকিস্তানের আকাশসীমায় শব্দের গতির তিনগুণ গতিতে ১২ হাজার মিটার (৪০ হাজার ফিট) উচ্চতা দিয়ে ১২৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায় : ৯ মার্চ ২০২২ তারিখে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রমের সময় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাবশত একটি মিসাইল উৎক্ষেপণের ঘটনা ঘটে। ভারত সরকার এই বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে দেখছে এবং এই ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের আদেশ দিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য হিন্দুর একটি প্রতিবেদন অনুসারে রাষ্ট্রদূত কুমারান ‘ফিলিপাইন : ইন্ডিয়াস নিউ ইন্দো-প্যাসিফিক পার্টনার’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে বলেন, প্রশ্ন করা হয়েছিল এবং আমরা এটির উত্তর দিয়েছি। যতদূর আমরা বোঝাতে পারি বুঝিয়েছি এটা কোনো প্রযুক্তিগত সমস্যা ছিল না। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং তথ্য পাওয়া গেলে আমরা নিশ্চিত করব। তিনি আরো বলেন, ভারতের এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে, যে কারণে ভারত এই ব্যবস্থার ব্যাপক ব্যবহার করে। তিনি আরো জানান, ফিলিপাইনের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তি হয় গত বছরের মার্চে, দ্বিতীয়টি নভেম্বরে এবং চূড়ান্ত চুক্তি হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে।
কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি ভারতীয় পার্লামেন্টে বিষয়টি উত্থাপন করে বলেছেন, আমরা ভাগ্যবান যে ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি, ওই এলাকার ওপর দিয়ে অনেক বিমান উড়ছিল। তিনি প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে পারমাণবিক ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সামরিক কমান্ডারদের পর্যায়ে তা স্থায়ী হওয়া উচিত। অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল টুইটারে লিখেছেন, ক্ষেপণাস্ত্রের ত্রুটির পর, ব্রাহ্মোসের ক্রেতা ফিলিপাইন ভারতীয় কূটনীতিককে ডেকেছিল। আমি নিশ্চিত যে কূটনীতিক সঠিক চিত্রটা তুলে ধরেছেন।
ফিলিপাইনের কাছে মিসাইল বিক্রি ইস্যু চীনের সাথে কোনো সমস্যা তৈরি করতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি রাষ্ট্রদূত কুমারান ফিলিপাইনের বিবৃতি উদ্ধৃত করেন এবং এটাকে আত্মরক্ষার প্ল্যাটফর্ম হিসাবে দেখান। ভারতীয় বিমান বাহিনীর দুই অফিসারের নেতৃত্বে ঘটনাটির তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্তে তারা এটিকে প্রযুক্তিগত সমস্যা বলে মনে করছেন না, বরং মানবিক কোনো ত্রুটি থেকেই ঘটনাটি ঘটেছে। সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জবাব চাইল ফিলিপাইন

৯ এপ্রিল, ২০২২
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ