Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সপ্তাহে মাত্র ১০টি ভিসা ইস্যু করছে দূতাবাস

রোজায় সউদীগামী কর্মীদের ভোগান্তি বাড়ছে দেড় মাস ধরে ভিজিট ভিসা বন্ধ থাকায় মেয়াদ মেডিক্যালের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে

শামসুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

মাহে রমজানে ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো থেকে পাসপোর্ট জমা নেয়ার সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। এতে সউদী গমনেচ্ছু কর্মীদের ভোগান্তি চরমে পৌছেছে। যথা সময়ে ভিসা না পাওয়ায় অনেক কর্মীর মেডিকেলের মেয়াদ শেষ এবং বিমানের টিকিট বাতিল কতে হচ্ছে। এ ছাড়া বিগত দেড় মাস যাবত সউদীগামী ভিজিট ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকায় হাজার হাজার সউদীগামী যাত্রী চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সউদী ভিসা সার্ভিস সেন্টারগুলোতে প্রতি দিন ধরনা দিয়েও কোনো সাড়া পাচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজানের আগেও সউদী দূতাবাস থেকে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে সপ্তাহে প্রত্যেক এজেন্সিকে ত্রিশটি পাসপোর্টে স্ট্যাম্পিং করা হতো। এর আগে সপ্তাহে চল্লিশ পঞ্চাশটি পাসপোর্টেও স্ট্যাম্পিং করা হতো। সউদী-বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সর্ম্পক অত্যান্ত চমৎকার হওয়ায় করোনা পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল হলে অন্যান্য দেশ থেকে কর্মী না নিলেও দেশটি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় বিশ লাখ বাংলাদেশি কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছেন।

এদিকে, সউদী দূতাবাস থেকে ভিসা পেতে বিলম্ব হওয়ায় অনেক সউদীগামী কর্মীর মেডিকেলের মেয়াদ শেষ হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় মেডিকেল করতে অতিরিক্ত দশ হাজার টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে। এতে অভিবাসন ব্যয় বাড়ছে। তারা ছাড়া ভিসা পেতে বিলম্ব হওয়ায় সউদী নিয়োগকর্তারা ওকালা বাতিল করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। এদিকে, ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাসে ফ্যামিলি ভিসা, রেসিডেন্স ভিসা, বিজনেস ভিসা ও স্টুডেন্ট ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকায় হাজার হাজার সউদীগামী যাত্রী চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। রমজানে সউদীতে বসবাসকারী বাংলাদেশি পরিবারের কাছে তাদের আত্মীয় স্বজনরা দেশটি যাওয়ার জন্য দেশের ৩৬টি সউদী ভিসা কনসালটেন্সি সেন্টারে ধরনা দিয়ে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। যথা সময়ে দেশটিতে যেতে না পেরে নানা জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট যাত্রীরা। একাধিক সউদী ভিসা সার্ভিস সেন্টারের স্বত্বাধিকারী গতকাল বুধবার ইনকিলাবকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

না প্রকাশ না করার শর্তে সউদী ভিসা সার্ভিস সেন্টারের একজন স্বত্বাধিকারী বলেন, বিগত দেড় মাস যাবত ভিজিট ভিসা ইস্যু কার্যক্রম কোনো কারণ ছাড়াই বন্ধ থাকায় হাজার হাজার যাত্রী সউদী সরকারের যথাযথ ট্যাক্স পরিশোধ করেও দেশটিতে যেতে পারছে না। এর মধ্যে অনেকেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হবার পথে। তিনি বলেন, ভিসা সার্ভিস সেন্টারের কাগজপত্র আপগ্রেড করে দূতাবাসে জমা দেয়ার জন্য গত ১৩ মার্চ সার্কুলার প্রকাশ করা হয়। ৩৬টি ভিসা সার্ভিস সেন্টার স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সউদী দূতাবাসে জমা দেয়ার পরেও কেন ভিজিট ভিসা চালু করা হচ্ছে না তা’ বোধগম্য নয়। সউদী দূতাবাসে এজেন্সির আপগ্রেড কাগজপত্র জমা দেয়া হলেও দূতাবাস কাউন্টার থেকে কখও গ্রাহক কপিতে স্বাক্ষর দেয়া হয় না। এতে বার বার পাসপোর্ট জমা দিতে গেলেই প্রতিষ্ঠানের আপগ্রেড কাগজপত্র চাওয়া হয়। বায়রার একজন সদস্য গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, সউদী দূতাবাস বর্তমানে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ রিক্রুটিং এজেন্সির পুরুষ পাসপোর্ট জমা নিচ্ছে না। যাদের জমা নিচ্ছে তাদের নিকট থেকে চলতি সপ্তাহে রমজানুল মোবারক উপলক্ষে মাত্র দশটি করে পাসপোর্ট নিচ্ছে। শত শত রিক্রুটিং এজেন্সি দূতাবাসে পুরুষ পাসপোর্ট জমা দিতে না পারায় হাজার হাজার কর্মীও মেডিকেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। অনেকের ওকালাও বাতিল হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অনেক সউদী কোম্পানী বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য দেশ থেকে কর্মী নেয়ার চেষ্টা করবে। তিনি সউদীর শ্রমবাজার ধরে রাখতে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ দিকে, মঙ্গলবার আল নাজরান ভিসা কনসালটেন্সির মাধ্যমে দূতাবাস থেকে এক বছরের জন্য রিয়া আক্তার নামে (পিপি নং এ ও ২৭৮০৩৬৭) এক মহিলা যাত্রীর ফ্যামিলি ভিজিট ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। কিন্ত অন্যান্য ভিসা সার্ভিস সেন্টারের প্রতিনিধিরা প্রতিদিন দূতাবাসে ভিজিট ভিসার স্ট্যাম্পিং করার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েও পাসপোর্ট জমা দিতে না পেরে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে। আই এম ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ইনাম আব্দুল্লাহ মহসিন গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, দুই বার এজেন্সির আপগ্রেড কাগজপত্র দূতাবাসে জমা দিয়েও পাসপোর্ট জমা দিতে পারছি না। তিনি বলেন, রোজার আগেও ত্রিশটি পাসপোর্ট দূতাবাসে জমা নেয়া হতো। বর্তমানে মাত্র দশটি পাসপোর্ট নেয়া হচ্ছে। তা’অনেকেই পাসপোর্ট দূতাবাসে জমা দিতে পারছে না। তিনি বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের পাসপোর্ট দূতাবাসে জমা দিতে পারিনি। ফলে দশ বারো জনের মেডিকেলের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, করোনা মহামারির মাঝেও সউদী দূতাবাস অত্যান্ত পরিশ্রম করে বাংলাদেশি কর্মীদের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভিসা ইস্যু করে সুনাম অর্জন করেছে।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারির পরে মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সউদী আরবেই জনশক্তি রফতানিতে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকায় নিযুক্ত সউদী রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দাহিলান অতিসম্প্রতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সউদী দূতাবাস ১২ হাজার ৩০০ ভিসা দিয়েছে, যা এ পর্যন্ত এক দিনে দূতাবাসের ভিসা ইস্যুর নতুন রেকর্ড। আর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় সউদী দূতাবাস ৩৮ হাজার ভিসা ইস্যু করেছে। অবশ্য ২০২১ সালে ১ নভেম্বর এক দিনে সাড়ে ৮ হাজার ভিসা দেয়া হয়েছিল।


প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
গত ২৮ মার্চ সোমবার ‘দৈনিক ইনকিলাব’ পত্রিকায় ‘খুলনায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রমরমা আবাসন বাণিজ্য’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার কামরুল ইসলাম সিদ্দিকের পত্নি সাবেরা সিদ্দিক।

তিনি অভিযোগ করেছেন, কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার (মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার কামরুল ইসলাম সিদ্দিকের পত্নি সাবেরা সিদ্দিক) এবং তার কন্যা অ্যাডভোকেট তাসনিমা সিদ্দিকের (প্রকাশিতঃ তানিয়া সিদ্দিকের) ক্যারিয়ার ও ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এমন মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। একইসাথে তাদের সুনাম ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। তারা সংবাদটি প্রত্যাহারসহ প্রতিবাদলিপি পত্রিকার প্রিন্ট ও অনলাইন ভার্সনে প্রকাশেরও দাবি জানিয়েছেন।



 

Show all comments
  • দিত্ব অন্তর ৭ এপ্রিল, ২০২২, ৪:৪৮ এএম says : 0
    েআশা করি সরকার এই অচল অবস্থার সমাধান করবেন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী আরব


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ