নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
পুরো ম্যাচে খোলসে বন্দি থাকল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। বরাবরের মতো নিজেদের কৌশলে আস্থা রেখে রক্ষণ জমাট রেখে খেলল তারা। ম্যানচেস্টার সিটিকে আটকে রেখে কাক্সিক্ষত ফলও তারা প্রায় পেয়েই গিয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যদের। একের পর আক্রমণ করে সুবিধা করতে না পারা সিটিজেনরা দ্বিতীয়ার্ধে উদ্ধার পেল ফিল ফোডেন ও কেভিন ডি ব্রুইনের বোঝাপড়ায়। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠার পথে এগিয়ে গেল দলটি। ঘরের মাঠে আসরের শেষ আটের প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতেছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। ম্যাচের ৭০তম মিনিটে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যবধান গড়ে দেন তারকা বেলজিয়ান মিডফিল্ডার ডি ব্রুইন।
ইতিহাদ স্টেডিয়ামে দুই দল খেলেছে নিজস্ব ঘরানার ফুটবল। ম্যান সিটি শুরু থেকেই আক্রমণে মনোযোগী ছিল। আর অ্যাতলেতিকোর লক্ষ্য ছিল রক্ষণদেয়াল মজবুত রেখে পাল্টা আক্রমণে ওঠা। তবে গোল হওয়ার মতো তেমন মুহূর্ত আসেনি দুই তারকা কোচের কৌশলের লড়াইয়ে। গোলমুখে স্বাগতিকদের নেওয়া ১৫ শটের কেবল দুটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, সফরকারী অ্যাতলেতিকো গোটা ম্যাচে লক্ষ্যে তো দূরে থাক, কোনো শটই নিতে পারেনি গোলমুখে!
প্রথমার্ধে বলার মতো কোনো সুযোগ পায়নি কোনো দল। ম্যানসিটি আক্রমণে গেলেও অ্যাটলেটিকোকে বিপাকে ফেলার মতো কিছু পারছিল না। তাদের প্রচেষ্টাগুলো খেই হারিয়ে ফেলছিল বারবার। বিরতির পর ম্যাচের ৪৭তম মিনিটে প্রথম স্পষ্ট সুযোগ আসে সিটির সামনে। তবে ইল্কাই গুন্দোয়ানের শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন স্তেফান স্যাভিচ। আট মিনিট পর ডি ব্রুইনের ফ্রি-কিক ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক। ফলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি সিটির। নয় মিনিট পর সতীর্থের কর্নারে আইমেরিক লাপোর্তের হেড থাকেনি লক্ষ্যে। অবশেষে ৭০তম মিনিটে উল্লাসে মাতোয়ারা হয় গার্দিওলার দল। রিয়াদ মাহরেজের বদলি নামার দুই মিনিটের মধ্যে নিজের সামর্থ্যরে ঝলক দেখান তরুণ ইংলিশ মিডফিল্ডার ফোডেন। প্রতিপক্ষের তিন ডিফেন্ডারের ফাঁক দিয়ে তিনি পাস বাড়ান ডি-বক্সে। এরপর কোণাকুণি শটে বল জালে পাঠান ডি ব্রুইন।
শেষদিকে শারীরিক শক্তি প্রদর্শন নিয়ে ম্যাচে ছড়ায় উত্তেজনা। সিটির গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও এদারসন এবং অ্যাতলেতিকোর আনহেল কোরেয়া ও সিমে ভারসালিকোকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। আর কোনো গোল না হলে ডি ব্রুইনের লক্ষ্যভেদই হয়ে দাঁড়ায় পার্থক্যসূচক।
কোয়ার্টার ফাইনালের ফিরতি লেগ এখনও বাকি। তবে প্রথম লেগের পরেই কি বলে দেওয়া যায় লিভারপুল খেলবে সেমিফাইনালে? রীতিমতো বড় কোনো অঘটন না ঘটলে সেটাই হওয়ার কথা। প্রথমত, দাপুটে পারফরম্যান্স দেখিয়ে বেনফিকার মাঠ থেকে জয় নিয়ে ফিরেছে ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা। দ্বিতীয়ত, দুই দলের পরের ম্যাচটি হবে অলরেডদের চেনা আঙিনা অ্যানফিল্ডে। গতপরশু রাতে লিসবনে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকাকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে লিভারপুল। তাদের হয়ে একবার করে লক্ষ্যভেদ করেন ইব্রাহিম কোনাতে, সাদিও মানে ও লুইস দিয়াজ। স্বাগতিকদের পক্ষে ব্যবধান কমান দারউইন নুনিয়েজ।
বল দখলে এগিয়ে থাকার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণের বন্যা বইয়ে দেওয়া লিভারপুল গোলমুখে ১৭টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখে আটটি। প্রথমার্ধে তারা একচ্ছত্র আধিপত্য দেখালেও দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা ছন্দপতন হয়। সেসময় বেনফিকা ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিতও দিয়েছিল। কিন্তু শেষদিকে দিয়াজের গোলে আশাভঙ্গ হয় তাদের। গোলমুখে নয়টি শটের মধ্যে তিনটি লক্ষ্যে রেখেছিল দলটি।
ম্যাচের ১৭তম মিনিটেই এগিয়ে যায় সফরকারীরা। অ্যান্ড্রু রবার্টসনের কর্নারে ডি-বক্সের ভেতরে লাফিয়ে মাথা ছোঁয়ান কোনাতে। বল প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে চলে যায় জালে। লিভারপুলের জার্সিতে ফরাসি ডিফেন্ডার কোনাতের প্রথম গোল এটি। ৩৪তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সেনেগালের তারকা ফরোয়ার্ড মানে। ট্রেন্ট অ্যালেকজান্ডার-আর্নল্ডের ক্রসে হেড করে দিয়াজ বল ফেলেন ডি-বক্সে। গোলপোস্টের খুব কাছ থেকে পাওয়া সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেননি মানে। বিরতির আগে আরও গোল পেতে পারত লিভারপুল। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও নিশানা ভেদ করতে ব্যর্থ হন মোহামেদ সালাহ।
দ্বিতীয়ার্ধের চতুর্থ মিনিটে কোনাতে বল বিপদমুক্ত করতে গড়বড় করে ফেললে এক গোল শোধ করে বসে বেনফিকা। রাফা সিলভার পাস থেকে লিভারপুলের গোলরক্ষক অ্যালিসনকে পরাস্ত করেন নুনিয়েজ। ৬০তম মিনিটে স্কোরলাইন হতে পারত ২-২। তবে এভারতনের জোরালো শট ফিরিয়ে দেন অ্যালিসন। ছয় মিনিট পর নুনিয়েজ পেনাল্টির আবেদন তুললেও ভিএআরে সেটা টেকেনি। ৮৭তম মিনিটে লড়াই থেকে ছিটকে যায় বেনফিকা। নাবি কেইতার বাড়ানো পাসে গোলরক্ষককে কাটিয়ে দুরূহ কোণ থেকে বল জালে পাঠান কলম্বিয়ান স্ট্রাইকার দিয়াজ। তাতে উচ্ছ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে লিভারপুল। তাদের জয়ের ব্যবধান আরও বড় হতে পারত। যোগ করা সময়ে সরাসরি গোলরক্ষকের দিকে শট মেরে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন বদলি দিয়োগো জোতা।
আগামী ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগ। অ্যাটলেটিকোর হোম ভেন্যু ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোয় আতিথ্য নেবে সিটিজেনরা। একই রাতে লিভারপুল-বেনিফকার মধ্যকার অপর ম্যাচটি হবে অলরেডদের চেনা আঙিনা অ্যানফিল্ডে।
বেনফিকা ১-৩ লিভারপুল
ম্যানসিটি ১-০ অ্যাট.মাদ্রিদ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।