মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
প্রায় এক মাস হতে চলল রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের। যা শেষ হওয়ার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। যুদ্ধের ফলশ্রুতি হিসেবে বিশ্ব জুড়ে তেলের দাম আকাশছোঁয়া। ভারতের মতো দেশে প্রায় প্রতি দিনই মহার্ঘ হচ্ছে তেল।
এদিকে ভারত যাতে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি না করে সেই নিয়ে রক্তচক্ষু দেখিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়া। আমেরিকা ইতিমধ্যেই রাশিয়ার থেকে তেল, গ্যাস ও কয়লা আমদানি নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। ব্রিটেন এই বছরের শেষের মধ্যে রাশিয়ার তেলের উপর নির্ভরতা পুরোপুরি কমিয়ে দেবে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যেই রাশিয়ার গ্যাস আমদানি প্রায় তিনের দুই ভাগ কমিয়ে এনেছে।
তবে এটাও ঠিক যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের গ্যাস আমদানির প্রায় ৪০ শতাংশ রাশিয়া থেকে হয়। যারা রাশিয়ার থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি করছে, তাদেরকে একঘরে করা এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ভারতের বক্তব্য ফেলে দেওয়ার মতো নয়। যদি রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল কেনা যায়, তাহলে কেন সেই সুবিধা নেবে না ভারত? বোঝাই যাচ্ছে, রাশিয়াকে অর্থনীতিক অবরোধের চেষ্টা চলছে এক দিক থেকে। কিন্তু প্রশ্ন হল, রাশিয়ার উপর সারা বিশ্ব কতটা নির্ভরশীল তেল ও গ্যাসের ব্যাপারে?
তেল উৎপাদনের দিক থেকে আমেরিকা এবং সউদী আরবের পরেই রয়েছে রাশিয়া। যেই ৫ বিলিয়ন অশোধিত তেল রাশিয়া উৎপাদন করে, তার অর্ধেকের বেশি যায় ইউরোপে। ব্রিটেনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনের প্রায় ৮ শতাংশ তেল আসে রাশিয়া থেকে। খাস আমেরিকার ৩ শতাংশ তেলের জোগান আসে রাশিয়া থেকে। সউদী আরবের নেতৃত্বাধীন ওপেক এখনও পর্যন্ত কোন ইঙ্গিত দেয়নি যে তারা তেলের উৎপাদন বাড়াবে। আমেরিকা ভেনেজুয়েলা নিয়েও চেষ্টাচরিত্র করছে তেলের উৎপাদনের ক্ষেত্রে। কিন্তু বাস্তব হল যে ভেনেজুয়েলা তার বেশিরভাগ উৎপাদিত তেল বিক্রি করে চীনকে, যারা আবার রাশিয়ার বন্ধু স্থানীয়।
যদি গ্যাসের ক্ষেত্রে রাশিয়ার বিকল্প কী রয়েছে দেখা হয়, তাহলে কাতার, আলজেরিয়া অথবা নাইজেরিয়ার নাম উঠে আসবে। তবে রাতারাতি গ্যাসের উৎপাদন বাড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। আমেরিকা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে যে বছরের শেষে তারা ১৫ বিলিয়ন কিউবিক মিটার লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) জোগান দেবে ইউরোপকে। আমেরিকার লক্ষ্য হল ২০৩০ পর্যন্ত ইউরোপকে বার্ষিক ৫০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস জোগান দেওয়া। তবে পরিকাঠামোর দিক থেকে সেটা কতটা সম্ভব, সেটা অবশ্যই বড় প্রশ্ন।
তাই তেল হোক কিংবা গ্যাস, রাতারাতি রাশিয়া নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠা সহজ কথা নয়। দ্বিতীয়ত রাশিয়া রপ্তানির ক্ষেত্রে রুবেলের ব্যবহারের কথা বলেছে, যা আমেরিকার মতো পশ্চিমী দেশকে একটু চাপে ফেলবে তো বটেই। রাশিয়া থেকে আমদানির নিষেধাজ্ঞা উল্টো দিকে সব দেশের অর্থনীতিকে পরোক্ষ ভাবে সমস্যায় ফেলছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়া থেকে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি, সমস্যা নেহাৎ কম নয়। তাই পশ্চিমী দুনিয়ার তথা আমেরিকার কথায় সায় দিয়ে এগিয়ে যাওয়া বাস্তবিক নয়। ঠিক এই সত্যিটা জেনেই রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন আগ্রাসনে এখন নিয়োজিত রয়েছেন। তবে তেল ও গ্যাস নিয়ে সামনের দিনে পরিস্থিতি জটিল হবে, এই নিয়ে কোন দ্বিধা নেই বললেই চলে। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।