গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্টাফ রিপোর্টার : ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নাসিরনগরের হিন্দু স¤প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে ঢাবির শিক্ষার্থীরা। তারা এই অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে ৬ দফা দাবি জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন হিন্দু শিক্ষার্থীবৃন্দ, সাধারণ হিন্দু শিক্ষার্থীবৃন্দ, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, রমনা কালিমন্দির ও আনন্দমীয় আশ্রম পরিচালনা পরিষদসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের ব্যানারে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভে বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষও অংশ নেয়। সড়ক বন্ধ থাকায় শাহবাগে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় শাহবাগ মোড়ে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের কুশপুত্তলিকা পোড়ান আন্দোলকারীরা। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করার কারণে রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড় থেকে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে জানানো ছয় দফা দাবি জানানো হয়, দাবিগুলো হলোÑ এক. মন্ত্রী ছায়েদুল হকের দল ও পদ থেকে বহিষ্কার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। দুই. নাসিরনগরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা প্রদান। তিন. নাসিরনগরে হামলার মদদদাতাদের শাস্তি। চার. নাসিরনগরে নিখোঁজ ৬টি হিন্দুপরিবার যেখানেই থাকুক তাদের সসম্মানে ফিরিয়ে নিয়ে এসে পুনর্বাসন করা। পাঁচ. সংখ্যালঘু-বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা। ছয়. স্বাধীন সংখ্যালঘু কমিশন গঠন। বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন হিন্দু শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সনাতন বিদ্যার্থী সংসদসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিক্ষোভকারীরা প্রেসক্লাবের সামনেও মন্ত্রী ছায়েদুল হকের কুশপুত্তলিকা পোড়ান। এ সময় তাদের হাতে দেশত্যাগই কি আমাদের নিয়তি? রক্তের দামে কেনা দেশ ছাড়ব কেন?’ এ ধরনের বিভিন্ন ¯েøাগান লেখা ব্যানার দেখা যায়। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল- হিন্দু হয়ে জন্মানোই কি আমাদের অপরাধ, দেশত্যাগই কি আমাদের একমাত্র পথ?, হিন্দুজাতির অপমান মানি না, মানব না, নাসিরনগরে হামলা কেন জবাব চাই।
মানিক রক্ষিত নামের এক শিক্ষার্থী সমাবেশে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ও সনাতন ধর্মের মানুষদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু যে অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশে গড়ার কথা বলেছিলেন আজো তা হয়নি। এখনও সনাতন ধর্মের মানুষের ওপর নির্যাতন চলছে, এটা দুঃখজনক। সা¤প্রদায়িক হামলার নিন্দা জানিয়ে এই শিক্ষার্থী বলেন, হামলাকারীদের বিচার না হওয়ায় মৌলবাদী ও ধর্মান্ধ গোষ্ঠী ফের হামলা করার সাহস পাচ্ছে।
এদিকে শাহবাগ মোড় দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় ছুটির দিনেও প্রেসক্লাব থেকে মৎস্য ভবন হয়ে রূপসী বাংলার মোড়, কাঁটাবন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে যানজট সৃষ্টি হয়। অনেক বাস নির্ধারিত রুটে যেতে না পারায় রূপসী বাংলা মোড়, কাকরাইল মসজিদ, কাঁটাবন, নীলক্ষেত মোড় হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে চলাচল করছে। শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে, সাধারণ জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে, তারা যেন উঠে যায়।
উল্লেখ, ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগকে কেন্দ্রকরে গত ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরের প্রায় ১৫টি মন্দির ও শতাধিক হিন্দুবাড়িতে হামলা হয়। এর পাঁচদিন পর উপজেলা সদরে হিন্দু স¤প্রদায়ের পাঁচটি ঘর ও একটি মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।