Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘বাগেরহাটে ইউপি চেয়ারম্যানের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ইউপি সদস্য’

বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০২২, ৬:০৫ পিএম

বাগেরহাটের মোরেলগজ উপজেলার হোগলাপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ওই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য দিপক কুমার মাঝি। অনেক সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্য ইতিমধ্যে এই বাহিনীর হামলায় আহত হয়েছেন। বাদ যাননি, ৩৫ বছর ধরে হোগলাপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নিরাঞ্জন বিহারী রায় ও তার পরিবার। দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে এসে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ইউপি সদস্য দিপক কুমার মাঝি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নিরাঞ্জন বিহারী রায়ের ছেলে শিবু রায়।

ইউপি সদস্য দিপক কুমার মাঝি বলেন, তিনি হোগলাপাশা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের দুই বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য। বিগত নির্বাচনে মো: ফরিদুল ইসলাম ফরিদ বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে হোগলাপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হয়েই তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে ( নৌকা) কাজ করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের দমন-পীড়ন শুরু করেন। এজন্য তিনি একটি সন্ত্রাসী বাহিনী ও কিশোর বাহিনী গড়ে তোলেন। বিরুদ্ধে নৌকার পক্ষে সমর্থন করা ব্যক্তিদের সাথে কারণ ছাড়াই ঝগড়ায় জড়িয়ে হাতের ইশারায় শতশত লোক এনে তাদের মারধর করানো হচ্ছে। এই হামলার স্বীকার বেশি হয়েছে সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা। অনেকের ঘরে আগুন দিয়ে কাঠ, ধান ও গরু পুড়িয়ে দিয়েছে এই বাহিনী। তাকেও একাধিক বার হত্যার চেষ্টা করেছে। এজন্য তার কাঠের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল। প্রতিবেশির ডাকচিকারে এলকাবাসি বের হয়ে আসার পর তিনি ঘর থেকে বের হন। এজন্য সেই মিশন ব্যর্থ হয়। তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে জানান।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নিরাঞ্জন বিহারী রায়ের ছেলে শিবু রায় জানান, তার পিতা ৩৫ বছর ধরে হোগলাপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। আওয়ামী লীগের দু:সময়ে তিনি দলের হাল ধরে ছিলেন। বিগত নির্বাচনে তিনি নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। এজন্য বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হওয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো: ফরিদুল ইসলাম ফরিদ তাকে নানা ভাবে অপমান করেছে। এমনকি তাকে পুড়িয়ে মারারও হুমকী দিয়েছে।

শিবু রায় অভিযোগ করে বলেন, গত ২৮ ফেব্রæয়ারী বিকালে তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের জনসভায় গেলে চেয়ারম্যানের লোকজন তাকে ডেকে পাশে নিয়ে একটি মটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। পরে পার্শবর্তি পিরোজপুর নিয়ে তাকে নির্মম ভাবে মারপিট করে। এক পর্যায়ে তিনি পানি চাইলে তাকে প্রশ্রাব দেয়া হয়েছে। তার মুখের ভিতর গাঁজা দেয়া হয়েছে। পরে তাকে আবারো মারপিট করে নদীর কাছে ফেলে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পিরোজপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নেয়া হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ্য হন।

হোগলাপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: ফরিদুল ইসলাম ফরিদ তার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কোন বাহিনী গঠন বা ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেনি। ইউপি সদস্য দিপক কুমার মাঝি তার নিজের ঘরে আগুন দিয়ে স্থানীয়দের মাঝে গ্রুপিং সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন।

এবিষয়ে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক পিপিএম বলেন, বিষয়টির খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাগেরহাট

১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ