পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শখ করে ২০১৯ সালে এক জোড়া ময়ূর কিনেছিলেন শাহ আলী। সেই এক জোড়া ময়ূর থেকে তিনি বাণিজ্যিক খামার গড়ে তুলেছেন। ময়ূর বিক্রিতেই সুদিন ফিরেছে পরিবারের। বর্তমানে খামারে রয়েছে শতাধিক ময়ূর। স্বপ্ন খামার আরও বড় করার। কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বাবরকান্দি গ্রামের শাহ আলীর নাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে শাহ আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দর্শনার্থীদের ভিড় ময়ূরের খামারের সামনে। মনের আনন্দে উড়ছে ময়ূর। শাহ আলী বলেন, ঢাকার মিরপুরে আমার বাবার গরুর খামার ছিল। ছোট বেলা থেকে আমি কিছু পাখি লালন পালন করি। হঠাৎ একদিন পাখি বিক্রি করতে গিয়ে চোখ পড়ে ময়ূরের দিকে। পরে পাখি বিক্রির টাকা আর কিছু ঋণ নিয়ে ১ লাখ ৬৫ টাকা দিয়ে দুটি ময়ূর কিনে লালন পালন শুরু করি।
প্রায় ৩ মাস পর ময়ূর ডিম পাড়া শুরু করে। প্রথমে ২৪টি ডিম দেয়। সেখান থেকে ১৭টি বাচ্চা হয়। পরবর্তীতে ময়ূরগুলো নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে আসি। ব্যবসার উদ্দেশ্যে দুটি টিনসেড ঘর তৈরি করে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে আরও পাঁচটি ময়ূর কিনি। এর মধ্যে ৪টি নারী ও ১টি পুরুষ ছিল। সাতটি ময়ূর ১৪০টি ডিম দেয়। বাচ্চা ফোটে ১২৮টি। ২০২০ সালের শেষ দিকে এসে খামারের ময়ূর বিক্রি শুরু করেন।
শাহ আলীর খামার থেকে শৌখিন লোকজন ময়ূর কিনেন। এক জোড়া ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। গত দুই বছরে তিনি ২০ লাখ টাকার ময়ূর বিক্রি করেছেন। এতে তার মুনাফা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। তিনি জানান, বর্তমানে তার খামারে ১০৫টি ময়ূর রয়েছে। এর বাজারমূল্য ৩০ লাখ টাকা। এগুলোর মধ্যে কিছু আছে ছোট এবং বেশ কয়েকটি ডিম দেবে। আসছে জুন-জুলাইয়ে বিক্রি শুরু করবেন।
শাহ আলী বলেন, ময়ূর লালন-পালন খুবই সহজ। কেউ ভুল করে আগে খামারের পরিকল্পনা করবেন না। শুরুতে দুই-এক জোড়া পালন করে যদি মনে করেন পারবেন, তাহলে খামার করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত। মুরগীর খাবার ও নরম শাক জাতীয় খাবারই ময়ূর খায়।
তিনি বলেন, আগে একাই ময়ূর লালন পালন করতেন। বর্তমানে একজন নারীকর্মী রেখেছেন। ময়ূর পালনে নারীকর্মীর বেতনসহ মাসে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। খামারের প্রথম কেনা বড় দুটি ময়ূর ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। ময়ূর যখন-তখন বিক্রি করা যায় না। মানুষের পছন্দ হলে কিনবে। যারা বেকার এবং চাকরি খোঁজেন তারা চাইলে শখের বসে ময়ূর পালন করতে পারেন। আমি যেহেতু লাভবান হয়েছি, তারাও হবেন।
বাবরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুল শিক্ষক মো. জাকির হোসেন বলেন, শাহ আলী ছোট বেলা থেকে খুব পরিশ্রমী। পশু-পাখি লালন-পালন করা তার শখ। শুধু হোমনা উপজেলায় নয় এই শাহ আলীর ময়ূরের খামারের কারণে আমাদের গ্রামটি এখন জেলাসহ সারাদেশে পরিচিতি পেয়েছে।
উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা একেএম বাহারুল ইসলাম বলেন, বনবিভাগ থেকে ময়ূরের খামারের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। আমরা নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখছি এবং যত ধরনের সহযোগিতা লাগছে আমরা করে যাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।