Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চিড়িয়াখানার হরিণ ও ময়ূর বেচে আয় ১ কোটি ৩৪ লাখ

করোনাকালে প্রাণীর প্রজনন বেড়েছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় জাতীয় চিড়িয়াখানায় হরিণ, বক, ময়ূরসহ অন্যান্য প্রাণীর প্রজনন বেড়েছে। প্রাণীদের স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে হরিণ ও ময়ূর বিক্রি শুরু করে। ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ মাসে এক কোটি ১০ লাখ টাকা হরিণ ও ২৪ লাখ টাকার ময়ূর বিক্রি করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। প্রকৃতিতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে একাধিক প্রজাতির বক। প্রথমে হরিণের দাম হাঁকা হয় এক লাখ ৪০ হাজার টাকা। পরে তা এক লাখ করা হয়। সবমিলিয়ে খামারি ও রিসোর্ট মালিকদের কাছে দেড় শতাধিক হরিণ ও ৭০টি ময়ূর বিক্রি করা হয়। তবে এবার হরিণ-ময়ূর বাইরে বিক্রি না করে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন চিড়িয়াখানার সঙ্গে বিনিময়ের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. মো. আব্দুল লতিফ বলেন, চিড়িয়াখানা তো প্রজনন কেন্দ্র নয়। বিক্রি করাও আমাদের লক্ষ্য নয়। হরিণের সংখ্যা অতিরিক্ত হয়ে গিয়েছিল। সংস্থানের ব্যবস্থা, ব্যবস্থাপনা, খাদ্যের বাজেট সবকিছু মিলিয়ে অতিরিক্ত যেগুলো, তা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে বিক্রি করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, হরিণ ও ময়ূর কেনার প্রচুর আবেদন পাচ্ছি। তবে ময়ূর বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। স্টকের ওপর নির্ভর করে আগামীতে হয়তো আবার বিক্রি করার চিন্তা-ভাবনা করব। এখন যা ময়ূর আছে, সেগুলো চিড়িয়াখানায় লাগবে। প্রজনন বাড়লে তখন হয়তো বিক্রি করব। হরিণ বিক্রি করছি, প্রচুর সাড়াও পাচ্ছি।
বিক্রির পর মালিকরা প্রাণীগুলোর চিকিৎসা বা রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত সেবা সংশ্লিষ্ট এলাকার থানা অফিসারদের কাছ থেকে পাবেন জানিয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক বলেন, যখন কোনো খামারি বা রিসোর্টের মালিকের কাছে হরিণ বিক্রি করি, সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানা অফিসার, জেলা অফিসারকে জানানো হয়। যারা নিয়ে যান তাদেরও বলে দেয়া হয় যে, সংশ্লিষ্ট উপজেলা অথবা জেলা অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন।
হরিণ-ময়ূর বিনিময়ের চিন্তা : ২০২১ সালের ৫ মাস এবং ২০২০ সালের ৮ মাস বন্ধ ছিল মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা। অনুকূল পরিবেশ, যত্ন আর ভালো ব্যবস্থাপনায় রেকর্ড প্রজনন হয়েছে বিভিন্ন প্রাণীর। অতিরিক্ত প্রাণী বিভিন্ন চিড়িয়াখানার সঙ্গে বিনিময়ের চিন্তা করছে কর্তৃপক্ষ। জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক আব্দুল লতিফ বলেন, অন্তত পাঁচ-সাতটি প্রাণীর খাঁচা ভরে গেছে। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রয়েছে। এগুলো বিনিময়ের চেষ্টা করছি।
জানা যায়, জাতীয় চিড়িয়াখানায় ১৩৫ প্রজাতির সর্বমোট ৩ হাজার ১৫০টি প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ধারণক্ষমতার বেশি রয়েছে অনেক প্রাণী। ধারণক্ষমতা ৭টির থাকলেও চিড়িয়াখানায় জলহস্তীর সংখ্যা ১৪টি। ইমু পাখির ধারণক্ষমতা ২০ থেকে ২২টি হলেও বর্তমানে রয়েছে ৫০টির বেশি। একইভাবে জেব্রা, জিরাফ, ইম্পালা ঘোড়া আছে ধারণক্ষমতার বেশি। অতিরিক্ত প্রাণী দেশে বা বিদেশের অন্যান্য চিড়িয়াখানা, সাফারি পার্কে স্থানান্তর বা বিনিময় করার কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ।
জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশের বিভিন্ন চিড়িয়াখানার সঙ্গে আলোচনা করে নিজেদের মধ্যে বন্যপ্রাণি বিনিময় করা হবে। সম্ভব হলে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেও বিনিময় নিয়ে আলোচনার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চিড়িয়াখানার হরিণ ময়ূর বিক্রি হচ্ছে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ