মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রথামাফিক অভিনন্দন জানালেও আমেরিকান নির্বাচন নিয়ে প্রকাশ্যে চীন কোনো মন্তব্য করেনি। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও হয়তো আনন্দ করছেন। অনেকে মনে করেন, আমেরিকান নির্বাচন চীনের জন্য একটি উপহার। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো তিনিও ‘চীন শ্রেষ্ঠ’ দেখতে চান। ফলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় চীনকে অনেক দিক দিয়ে সুবিধা এনে দিয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ক্ষমতা গ্রহণ অনেকটা প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির মতো। ‘আমরা চাঁদে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’ তা বিশ্বে যাই ঘটুক না কেন। ঠিক যা চীন আশা করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে চীনের বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন, আফগানিস্তান আর ইরাকে আমেরিকান যুদ্ধের কারণে আমেরিকা যে বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে পারে, চীনের সেই বিশ্বাস নড়ে গেছে। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সঙ্কট আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বকে খাটো করে দিয়েছে। আর এই নির্বাচনে দুই প্রার্থীর নগ্ন বৈরিতা চীনকে এই ধারণা দিয়েছে যে, আমেরিকানরা নিজেদেরই পরিচালনা করতে পারে না।
চীনের অনেক নাগরিক বিশ্বাস করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী, স্পষ্ট কথার আর রাজনীতির বাইরের মানুষ। এসব বিষয় চীনের সরকারকে সুবিধাও করে দিয়েছে।
চীনকে এখন এমন একজন আমেরিকান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দর কষাকষি করতে হবে যার পুরনো কোনো ধারাবাহিকতা নেই, জানাশোনা কোনো টিম নেই আর চীনের বিষয়ে পরিষ্কার কোনো নীতি নেই। যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারের সময় বলেছেন, চীনারা আসছে, আমাদের চাকরি নিয়ে যাচ্ছে আর নিজেদের ভাগ্য গড়ছে। আবার তিনি এও বলেছেন, চীনের প্রতি আমার কোনো রাগ নেই, তারা চমৎকার। কিন্তু আমার ক্ষোভ আমাদের নিজেদের লোকজনের প্রতি, যারা আমাদের এখান থেকে তাদের সম্পদ নিয়ে যাওয়াটা মেনে নিয়েছে।
তবে গত চার দশক ধরেই আমেরিকার নির্বাচনী প্রচারণার সময় এ ধরনের মন্তব্য শুনছে চীন। এর আগেও বেশ কয়েকজন প্রেসিডেন্ট এসেছেন এবং গেছেন। কিন্তু ওভ্যাল অফিসে বসার কয়েক মাসের মধ্যে তাদের নীতি পাল্টে গেছে।
যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার বাজার রক্ষণশীল করে তোলেন, তা হয়তো চীনের ব্যবসার জন্য ক্ষতিকর হবে। কিন্তু নতুন প্রশাসনের সঙ্গে এ নিয়ে অনেকদিন ধরেই দরবার করতে পারবে চীন। মি. ট্রাম্পের সঙ্গে অর্থনৈতিক বিরোধের জন্য তৈরিও আছে চীন।
হয়তো মি. ট্রাম্পকে অর্থনৈতিক এই লড়াইয়ে সুবিধা দেবে চীন। বিনিময়ে তারা চাইবে, এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক খেলায় যেন কোনো বাধা তৈরি করা না হয়। আর এখানেই ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের জন্য বিশাল সুবিধার তৈরি করেছেন। কারণ নির্বাচনী প্রচারণার সময় এশিয়ার সহযোগী দেশগুলোর প্রতি আমেরিকার ভরসা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মি. ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন উপস্থিতির জন্য তাদের আরো বেশি অর্থ দেয়া উচিত।
অর্থনীতি নিয়ে বিরোধ, এশিয়া থেকে আমেরিকার নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখা বা চীনের সঙ্গে বড় দও কষাকষি হলে সেটি তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগরকে নাজুক করে তুলবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। তাহলে সেখানে আমেরিকার কর্তৃত্ব এমন সময় খর্ব করবে, যখন ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া আর থাইল্যান্ডের মতো দেশ নিজেদের কৌশল নিয়ে ভাবছে।
চীনের ভূ-রাজনৈতিক কৌশলবিদরা এখন আশা করতে পারেন, মি. ট্রাম্পের শাসনকাল তাদের এমন একটা সুযোগ এনে দেবে, যার ফলে তারা এশিয়ায় আমেরিকার প্রভাব খর্ব করে নিজেদের ক্ষমতার বিস্তার করতে পারবেন আর পুরো এশিয়ার চেহারাই বদলে দিতে পারবেন। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।