Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৭০ জন শিশুকে কারাগারে নয় বাবা-মায়ের জিম্মায় পাঠালেন বিচারক

সুনামগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০২২, ৪:৪১ পিএম

কারাগারে নয়, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আর ফুল হাতে দিয়ে ৭০ জন অভিযুক্ত শিশু কে বাবা মায়ের কাছে ফেরৎ পাঠালেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে ৯ শর্তে ৫০ মামলায় এসব শিশুদের বাবা-মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়।

একসঙ্গে অর্ধশত মামলার রায় দিতে গিয়ে এমন নজির স্থাপন করলেন সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জাকির হোসেন।

জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে এমন রায় বলেও জানান আদালত, এই রায়ে শিশুদের জীবনে সংশোধনের সুযোগ তৈরী হওয়ায় খুশি আইনজীবী ও অভিভাবকরাও। দুপুরে আদালত প্রত্যেকের হাতে জাতিয় পতাকা তোলে দিয়ে বলেন এই পতাকা বুকে ধারণ করতে হবে, দেশকে সাজাবে তোমরা। দীর্ঘদিন এই মামলাগুলো চলে আসায় পড়াশোনাসহ সুন্দর ভবিষ্যতের পথ থেকে ছিটকে পরছিলো শিশুরা।

জানা যায়, কোমলমতি এসব শিশুদেরকে পরিবারের অন্যদের সাথে মামলায় জড়ানো হয়েছিল, মারামারি এবং ছোট খাট কিছু চুরির অভিযোগ আনা হয়েছিল। ক্ষুদ্র একটি অভিযোগ এসব শিশুদের আদালতে হাজিরা দিতে হত। এর ফলে শিশুদের ভবিষ্যত এক অনিশ্চিয়তার মধ্যে নিপতিত হয়। তাদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হয় স্বাভাবিক জীবনে শিশুদের বেড়ে ওঠা হুমকির সম্মুখীন হয়।

শিশুদের ৯ শর্তগুলো হলো- নিয়মিত পড়াশুনার পাশাপাশি প্রতিদিন কিছু ভালো কাজ করা এবং ডায়েরিতে তা লিখে রাখা, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা, সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা, মা-বাবাসহ গুরুজনদের আদেশ মেনে চলা এবং বাবা-মায়ের সেবাযত্ন ও কাজে সাহায্য করা, নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা এবং নামাজ আদায় করা, প্রত্যেককে কমপক্ষে ২০টি করে গাছ লাগানো এবং গাছের পরিচর্যা করা, অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করা, মাদক থেকে দূরে থাকাসহ ভবিষ্যতে কোনো অপরাধের সঙ্গে নিজেকে না জড়ানো।

এসব শর্ত পালন হচ্ছে কিনা তা আগামী এক বছর একজন প্রবেশন কর্মকর্তা পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর আদালতকে অবহিত করবেন।

সুনমাগঞ্জ জেলার প্রবেশন কর্মকর্তা শফিউর রহমান বলেন, ক্ষুদ্র অভিযোগে এসব শিশুদের আদালতে হাজিরা দিতে হতো। শিশুদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিতে এসব মামলা নিষ্পত্তি করে পরিবারের সান্নিধ্যে এসব কোমলমতি শিশুরা স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠবে এবং সুন্দর জীবন গঠনের সুযোগ পাবে।

এব্যাপারে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু আদালতের পিপি হাসান মাহবুব সাদী বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে শিশুরা তাদের আপন ঠিকানা ফিরে পেয়েছে। এর আগেও কয়েকটি মামলায় ১৩৩ জন শিশুকে প্রবেশনের মাধ্যমে পরিবারের জিম্মায় পাঠিয়েছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ