Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট

প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন ভোটারদের মধ্যে ৪৮ শতাংশের সমর্থন পেয়েছেন। অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ ট্রাম্পকে চেনেন একজন ধনকুবের হিসেবে। এবার বিশ্ববাসী তাকে চিনবে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে। খবরে বলা হয়, রাজনীতির ময়দানে কাঁড়িকাঁড়ি টাকা, ম্যানহাটনে বিলিয়ন ডলারের সম্পদ এবং নিজের পকেটের টাকা খরচ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা করেছেন। প্রচারণা তহবিল সংগ্রহের জন্য তিনি সেভাবে ডোনারদের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন না বা ডোনাররাও সেভাবে এগিয়ে আসেনি। কিন্তু লোকটি নিম্নআয়ের মানুষ এবং শ্বেতাঙ্গ শ্রমিক ভোটারদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয়। তিনি হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু রাজনীতিতে তাকে একজন বহিরাগত হিসেবেই দেখা হয়। অনেক আমেরিকানই মনে করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প হলো বহু বছরের গুমোট অবস্থা থেকে বেরিয়ে নির্মল বাতাসে বুক ভরে নিঃশ্বাস নেয়ার অবসর। তবে অন্যরা মনে করছেন, বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য তিনি খুব বিপজ্জনক লোক। যাই হোক, আজকের এই ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্ক শহরতলী থেকে কীভাবে ক্ষমতাধর বিলিয়নেয়ার রিয়েল এস্টেট টাইকুন হিসেবে উঠে এলেন এবং রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন ছিনিয়ে নিলেন শুধু তাই নয় সব সমলোচনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে হোয়াইট হাউজে চার বছরের জন্য জায়গা করে নিয়েছেন।
রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির একেবারে কেন্দ্রে আবির্ভূত হবেন, এমনটা কেউ ভাবেনি। অভিবাসী, মুসলিম ও নারীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে নিজের দলেই সমালোচিত ছিলেন তিনি। দেশটিতে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন দেখিয়ে নির্বাচনী দৌড়ে জয় ছিনিয়ে নেবেন তিনি, এমনটা অনেকেই ভাবতে পারেননি। এমনকি নিজ দলের অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনী লড়াইয়ে সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছেন তিনি। নিউইয়র্কের রিয়েল এস্টেট টাইকুন ফ্রেডরিক ট্রাম্পের পাঁচ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ ডোনাল্ড। ১৯৪৬ সালের ১৪ জুন কুইন্সে তার জন্ম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী যুক্তরাষ্ট্রে শিশুজন্ম হার বেড়ে গিয়েছিল। ট্রাম্পও ছিলেন সেই বেবি বুম-এর প্রজন্ম। রিয়েল এস্টেট ছিল তার রক্তে। বাবা ফ্রেডরিক স্থানীয় কুইন্স, স্ট্যাটান আইল্যান্ড আর ব্রুকলিন এলাকায় সাধারণ মধ্যবিত্তদের জন্য অ্যাপার্টমেন্ট বানাতেন। অভিবাসী বিরোধী হলেও ট্রাম্পের মা কিন্তু স্কটিশ বংশোদ্ভূত। ছুটিতে নিউইয়র্ক বেড়াতে এসে ফ্রেডরিকের সঙ্গে পরিচয়। তারপর বিয়ে করে আমেরিকাতেই থিতু হন। স্কুলে বেয়াড়াপনা, সহপাঠীদের সাথে খারাপ আচরণ এবং যাকে তাকে মারধর করার ধারাবাহিক অভিযোগ আসতে থাকে বাবার কাছে। এর মধ্যে একদিন বিছানায় টিপচাকু পান বাবা। তখন ১৩ বছর বয়সী ট্রাম্পকে পাঠানো হয় মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে। অবশ্য চেহারার কারণে প্রতিবেশী ও সহপাঠীদের অনেকে তাকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করতে ছাড়তো না।
নিউইয়র্কের মিলিটারি একাডেমি তখন কড়া নিয়মকানুনের একটি বোর্ডিং স্কুল। কিন্তু সেখানে উদীয়মান অ্যাথলেট ও ছাত্রনেতা হিসেবে নজর কাড়েন ট্রাম্প। তার নেতৃত্বে স্কুলের বেসবল টিম তখন অঙ্গরাজ্যের সেরাদের কাতারে। ১৯৬৪ সালে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন। এর মধ্যে সিনেমায় ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তাও করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ভর্তি হন ফোর্ডহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং এর দুই বছর পর ট্রান্সফার হন পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির হোয়ারটন স্কুল অব ফিন্যান্সে। ১৯৬৮ সালে সেখান থেকেই অর্থনীতিতে ডিগ্রি নেন। কলেজে থাকার সময় পড়াশোনার অজুহাতে একবছর এবং পরে আরও এক বছর মেডিকেল লিভ নিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধে যাওয়া এড়ান ট্রাম্প। সিএনএন, রয়টার্স, ডোনাল্ড ট্রাম্প ডটকম ও বায়োগ্রাফি ডটকম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ