মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতে গত মঙ্গলবার ১০০০ ও ৫০০ রুপির নোট বাতিল করা হয়েছে। এ নিয়ে কলকাতাভিত্তিক আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন এখানে প্রকাশ করা হলো। প্রেমাংশু চৌধুরীর প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে নাজেহাল দেশ। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষ হয়েছে কি হয়নি। রাজধানীর সংসদ মার্গে রিজার্ভ ব্যাংকের দফতরের পাশে পিটিআই ভবনের নিচের এটিএমগুলোতে লম্বা লাইন পড়ে গেল। শুরু হয়ে গেল ঠেলাঠেলি, ধাক্কাধাক্কি। শুধু দিল্লি নয়, গোটা ভারতের ছবিটা প্রায় এই রকমই।
এবং ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিলের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরে আমজনতার এমন নাজেহাল দশা দিনকয়েক চলবে বলে মেনে নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। খোদ প্রধানমন্ত্রীই সে কথা বলেছেন। পরে রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর উর্জিত পটেল বাজারের নগদের অভাব হবে না বলে দাবি করলেও কেন্দ্রের অর্থ বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাস তার পাশে বসেই বলেছেন, আগামী ১৫ দিন সাধারণ মানুষকে খানিকটা ভুগতে হবে। বেশি অসুবিধায় পড়বেন কারা? অবশ্যই দিন-আনা দিন-খাওয়া মানুষরা। অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য, বাজারে এখন সবচেয়ে বেশি চলে ৫০০ রুপির নোট। সেই নোট বাতিল হয়ে যাওয়ায় এবং তার বদলে যথেষ্ট ১০০ রুপির নোটের জোগান না-থাকায় গৃহস্থরা হয় তাদের কাজ দেবেন না, না হয় আগামী ক’দিন টাকা মেটাবেন না। চা-বাগান বা আবাসনের মতো জায়গায়, যেখানে দৈনিক মজুরিতে অনেকে কাজ করেন, সেখানে বেতন মেটানোর ক্ষেত্রেও অনিশ্চয়তা তৈরি হল। কারণ, এই দুই ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় টাকা আগাম তুলে রাখা হয়, এবং তা মূলত ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোটে। চা-বাগানে শ্রমিকদের খাদ্যশস্য জোগানেও সমস্যা হবে বলে বহু বাগানের ম্যানেজারেরা যেমন আশঙ্কা করছেন, তেমনই আবাসন শিল্পে শ্রমিকদের দৈনন্দিন খাওয়ার খরচ মেটানো নিয়ে চিন্তায় প্রোমোটারেররা।
বস্তুত, হাঁড়ি চড়াতেও সমস্যায় পড়বেন নিচু আয়ের মানুষরা। কারণ, টাকার অভাবে খুচরো বাজারের বিক্রেতারা কাঁচামাল তুলতে পারবেন না। যেটুকু তুলবেন তারও খানিকটা ধারে বেচতে বাধ্য হবেন। ফলে জিনিসপত্রের দাম চড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বিপাকে পড়বেন চাষিরাও। কারণ, সবে ধান কাটা হয়েছে। আগামী ক’দিন তা বিক্রি করা কঠিন হবে। পাশাপাশি চলছে গম ও রবি ফসল বোনার কাজ। তার জন্য সার এবং বীজ কেনাও ধাক্কা খাবে। মধ্যবিত্তের সমস্যাও কিছু কম নয়। অনেকের বাড়িতেই এখন খুব বেশি ১০০ টাকার নোট থাকে না। কিন্তু আগামী দু’দিন এটিএম থেকে টাকা তোলারও আর কোনো উপায় নেই। রিজার্ভ ব্যাংক কাল থেকেই নতুন ৫০০ টাকা ও ২০০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়া হবে বলে ঘোষণা করলেও তা সাধারণ মানুষের হাতে আসতে বেশ কয়েকদিন লেগে যাবে। দেশের বাজারে এখন ১৬৫০ কোটি ৫০০ টাকার নোট রয়েছে। ১০০০ টাকার নোট রয়েছে ৬৭০ কোটি। এত নোট রাতারাতি বদলে দেওয়া কার্যত অসম্ভব। তাছাড়া, এটিএমগুলোতে প্রযুক্তিগত বদল আনতে হবে বলে জানিয়েছেন নীতি আয়োগের সদস্য, অর্থনীতিবিদ বিবেক দেবরায়। কারণ, নতুন ৫০০ ও ২০০০ নোটের মাপ আলাদা হবে। তাছাড়া, রিজার্ভ ব্যাংক তো বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কর্তৃপক্ষের হাতে নতুন টাকা তুলে দিয়ে খালাস! দেশের সর্বত্র, বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সেই নোট পৌঁছে দেয়া বিপুল ঝক্কির এবং সময়সাপেক্ষ কাজ, বললেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্তা। মোদি মঙ্গলবার তার বক্তৃতায় বলেছেন, দেশ থেকে কালো টাকা ও জাল নোট উধাও করার জন্য এটুকু ভোগান্তি দেশবাসী সহ্য করবেন বলেই আমার বিশ্বাস। এখন প্রশ্ন হলো, তার পদক্ষেপে এই দুই লক্ষ্য পূরণ হবে কি? কালো টাকা রুখতে তৈরি এসআইটি-র চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম বি শাহ-র মতে, এর ফলে কালো টাকায় সম্পত্তি কেনা বন্ধ হবে। এইচডিএফসি-র চেয়ারম্যান দীপক পারেখের মতে, এ বার যারা বিরাট পরিমাণে নগদ জমা করবেন, আয়কর দফতরের পক্ষে তাদের চিহ্নিত করে নজরদারি করা সহজ হয়ে যাবে। এই মুহূর্তে সব থেকে বেশি কালো টাকার লেনদেন হয় আবাসন ক্ষেত্রে এবং জমির কেনাবেচায়। পারেখের মতে, মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে জমির এবং ফ্ল্যাট-বাড়ির দাম কমতে পারে। এবিপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।