মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের প্রক্রিয়া কঠোর করার দাবি তুলে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অনেকেই এবারের নির্বাচনে এ ইস্যুকে তুরুপের তাস হিসেবেও বিবেচনা করছেন। ট্রাম্প বৈধ অভিবাসন কমানোর কথা বলছেন। নথি বা কাগজপত্র নেই এমন অভিবাসীদের দ্রুত দেশে পাঠানোর পাশাপাশি রিপাবলিকান এই প্রার্থী অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান করার পক্ষে। নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প বলেছিলেন- আমেরিকার মাটিতে থাকা ১ কোটি ১০ লাখের বেশি নথিবিহীন অভিবাসীকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হবে। তিনি মুসলমানদের আমেরিকায় ঢোকা বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেন। এক পর্যায়ে এ বক্তব্য থেকে সরে যাওয়ার কথা বললেও অভিবাসন নিয়ে নীতি বদলাননি তিনি। ট্রাম্প আমেরিকা ও মেক্সিকো সীমান্তে দু হাজার মাইলের বেশি দীর্ঘ দুর্ভেদ্য দেয়াল তুলে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
পররাষ্ট্র নীতি : ওবামা প্রশাসনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী থাকাকালে হিলারিকে কট্টরপন্থি হিসেবেই বিবেচনা করা হত। তিনি ইরাকে আমেরিকান যুদ্ধের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। যদিও এখন তিনি বলছেন- আগের ওই অবস্থানের জন্য তিনি অনুশোচনা করেন। ওবামা প্রশাসনের যারা লিবিয়ায় মার্কিন বিমান হামলা চালানোর পক্ষে ছিলেন হিলারি তাদের মধ্যেও একজন। নির্বাচনী প্রচারে সিরিয়ায় জেহাদিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমেরিকার বিস্তৃত ভূমিকা নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে আছে- বিমান চলাচল নিষিদ্ধ এলাকা জারি ও সিরীয় বিদ্রোহীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়া। সিরিয়ায় স্থল সৈন্য মোতায়েনেরও বিপক্ষে তিনি।
শরণার্থী : মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো থেকে শরণার্থী নেয়া আমেরিকার জন্য বড় ধরনের নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করছে বলে মত ট্রাম্পের। এজন্য যতক্ষণ পর্যন্ত না কঠোর বাছাই প্রক্রিয়া চালু হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত শরণার্থী গ্রহণ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে হবে। রিপাবলিকান এ প্রার্থীর ভাষ্য, যুদ্ধের সহিংসতা থেকে জীবন বাঁচাতে যারা শরণার্থী হচ্ছে তাদের জন্য নিরাপদ এলাকা তৈরির দায়িত্ব মধ্যপ্রাচ্যেরই অন্য দেশগুলোর। অন্যদিকে হিলারি আমেরিকায় সিরীয় শরণার্থীর সংখ্যা বছরে ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৬৫ হাজারে উন্নীত করতে চান। নির্বাচনী সমাবেশগুলোতে হিলারি বলেছেন- সহিংসতা এবং দমনপীড়ন থেকে পালানো মানুষদের স্বাগত জানানো আমেরিকার ইতিহাসের অংশ। তিনি সেই ধারা অব্যাহত রাখতে চান।
জলবায়ু পরিবর্তন : হিলারি মনে করেন জলবায়ু পরিবর্তন আমেরিকার নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকির কারণ; এজন্য জ্বালানি শিল্পে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পক্ষপাতি তিনি। আলাস্কায় তেলের জন্য অতিরিক্ত খনন এবং কানাডা থেকে তেল আনার পাইপলাইন নির্মাণেরও ঘোর বিরোধী এ ডেমোক্রেট। তবে তেল অনুসন্ধানে খনন বন্ধ রাখতে পরিবেশবাদীদের দাবির সঙ্গে একমত নন তিনি। পরিবেশ নিয়ে পরিষ্কার কোনো অবস্থান নেই ট্রাম্পের। বিভিন্ন ভাষণ এবং টেলিভিশন বিতর্কে তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য পরিবেশের দোহাই দেয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন। ট্রাম্প পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার পক্ষে থাকলেও কমাতে চান এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশান এজেন্সির তহবিল। মানুষের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে এই ধারণাকেও ভুয়া মনে করেন রিপাবলিকান এই প্রার্থী।
গর্ভপাত : গর্ভপাত বিষয়ে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানদের অবস্থান আগের মতই- দুই মেরুতে। ২০ সপ্তাহ পর গর্ভপাত ঘটানো যাবে না এমন নিয়ম চালুর বিরোধী হিলারি। পাশাপাশি গর্ভপাত ঘটানো নারীর ওপর বিধিনিষেধ আরোপেরও বিপক্ষে তিনি। যুদ্ধের সময় ধর্ষণের শিকার নারীদের গর্ভপাতের ব্যবস্থা করছে যেসব বেসরকারি সংস্থা, তাদের কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে অনুদান দেয়ারও পক্ষে হিলারি। সম্প্রতি প্ল্যানড পেরেন্টহুড নামে নারীদের স্বাস্থ্যসেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠানের অর্থসাহায্য কাটছাঁট করারও সমালোচনা করেছেন সাবেক এই সিনেটর। অন্যদিকে মার্চ মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প গর্ভপাত অবৈধ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে যেসব নারী গর্ভপাত ঘটান তাদের শাস্তি দিতে আইনও করতে চান তিনি। ট্রাম্পের এ বক্তব্য তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও কর ব্যবস্থা : এবারের নির্বাচনের অন্যতম আলোচিত ইস্যু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ। ডেমোক্রেট পার্টির বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে হিলারিও মার্কিন জনগণের জন্য সহজলভ্য অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে নতুন আইন করতে চান। হিলারির ভাষ্য, কোনো মার্কিনিকে অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়ার আগে অবশ্যই তার অতীত ইতিহাস বিবেচনায় নিতে হবে। এছাড়া আগ্নেয়াস্ত্রের অনুমোদনের ক্ষেত্রে আরও কঠোর হওয়ার প্রতিশ্রুতি আছে তার নির্বাচনী ইশতেহারে। বলেছেন- হোয়াইট হাউজে গেলে বিপদের মুখে থাকা সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী খানিকটা বদলে দেবেন তিনি। এই দ্বিতীয় সংশোধনীতেই যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের অস্ত্র রাখার অধিকার দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ট্রাম্প দ্বিতীয় সংশোধনী বদলে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের ঘোর বিরোধী, বরং সবার জন্য অস্ত্রের অধিকারকে আরও বিস্তৃত করে তুলতে চায় তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক বিভিন্ন হামলায় হতাহতের ব্যাপারে তার ভাষ্য- অস্ত্রধারী জনগণ দুর্বৃত্তদের সহজে ঠেকাতে পারত এবং প্রাণহানির পরিমাণও কমত। ট্রাম্প-হিলারির মধ্যে বিতর্ক চলছে কর ব্যবস্থা নিয়েও। দুজনই বর্তমান প্রক্রিয়ার সংস্কার চান। হিলারি চান বছরে ৫ মিলিয়নের উপর আয় করছে এমন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির উপর অতিরিক্ত আরও ৪ শতাংশ ট্যাক্স যোগ করতে। বিবিসি, ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।