পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সমাজ অত্যন্ত সংকীর্ণ। কিন্তু আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন এবং যে রাষ্ট্র গঠন করলেন সেখানে নারীদের জন্য আলাদা সুযোগ ও আসন রেখেছিলেন। তিনি যেমন নারীদের এগিয়ে রেখেছিলেন, সেখান থেকেই নারীরা এখনও এগিয়ে। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ শীর্ষে।
নারী হিসেবে নিজের পথচলার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ আমার পরিবারের সবাইকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি এবং আমার বোন প্রবাসে থাকায় ভাগ্যক্রমে সেদিন বেচে যাই। এরপর থেকে আমার পথচলা মসৃন ছিল না। আমাকে বহুবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমার উপর গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলার মতো ঘটনাও ঘটেছে। তবুও আমি থেমে থাকিনি। বাংলাদেশের নারীরা আজ অনেক এগিয়ে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী, সংসদের স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ে থেকে নারীরা নেতৃত্ব দিচ্ছে। নারী শুধু নারী নয়। নারীরা মায়ের জাতি।
গতকাল আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে দুবাই এক্সপোতে আয়োজিত ‘রিডিফাইনিং দ্যা ফিউচার ফর উইমেন’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। দুবাই এক্সিবিশন সেন্টারের সাউথ হলে এ আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল ওমেনস ডে ফোরাম : ব্রেক দ্যা বিচ।
নারীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে নারীদের শিক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। গ্রাজুয়েশন পর্যন্ত বিনামূল্যে পড়াশোনার সুযোগ তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে তাদের চাকরির জন্য সব সুযোগ সুবিধা রয়েছে। সরকারি চাকরিতে নারীদের সরব অংশগ্রহণ রয়েছে। আমার পিতা সেই সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন। আমার পিতা আমার অনুপ্রেরণা। এখন নারীরা শুধু ঘরবন্দি না, পুলিশ, সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে সরকারি- বেসরকারি চাকরিতে নারীদের সমান অংশগ্রহণ রয়েছে। নারীদের স্বাস্থ্য সেবা ও খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রম চালু রয়েছে। আমরা সব জায়গায় কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছি ।
তিনি বলেন, মায়ের মমতা নিয়ে দেশ পরিচালনা করলে অবশ্যই জনগণের সমর্থন পাওয়া যায়। এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নারীরা শুধুমাত্র নারীই নন, একইসঙ্গে তারা মা। আপনি যদি মায়ের মমতা নিয়ে দেশ পরিচালনা করেন তাহলে জনগণ অবশ্যই আপনাকে সমর্থন দেবে। শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সমর্থন ও আস্থা অর্জন করতে পেরেছি, যা আমার মূল শক্তি।
সরকার পরিচালনায় এবং রাজনীতিতে পুরুষ সহকর্মীদের ভূমিকার প্রশংসা করে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি অবশ্যই তাদের প্রশংসা করি। তারা আমাকে সহযোগিতা করেছেন।
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমাদের জাতীয় সংসদের স্পিকার, সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা সবাই নারী। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতাগ্রহণের আগে সামরিক শাসকদের সময় নারীদের অবমূল্যায়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রায় ২১ বছর পর সামরিক শাসকরা দেশ পরিচালন করে। তখন নারীদের কোথাও কোন অবস্থান ছিল না। আমি নারীদের জন্য সব সেক্টর উন্মুক্ত করে দেই।
১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর স্নাতক পর্যন্ত নারীদের বিনামূলে শিক্ষা নিশ্চিত করা, বিচার বিভাগ, পুলিশসহ বিভিন্ন সেক্টরে চাকরির সুযোগ, বিশেষ করে উচ্চতর পদগুলোতে নারীদের চাকরি সুযোগসহ নারীর ক্ষমতায়ন ও বৈষম্য দূর করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিজের ‘মেন্টর’ হিসেবে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী চিন্তা ও বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেশ এবং দেশের সমস্যাকে জানতাম। আমি আমার বাবার কাছ থেকে শিখেছি। আমার বাবা আমার মেন্টর। শুধু তাই নয়, আমি তার কাছ থেকে শিখেছি দেশের মানুষকে কীভাবে ভালোবাসাতে, গরিব মানুষ এবং দেশের জন্য কাজ করতে হয়।
এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের ক‚টনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আনোয়ার বিন মোহাম্মদ গারগাশ, দেশটির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমি, জাতিসংঘের পপুলেশন ফান্ড (ইউএনএফপিএ) নির্বাহী পরিচালক নাতালিয়া কানেম, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো- আইওয়েলা, কার্টটিয়ার ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাইলি ভিগনেরন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কন্যা, অটিজম ও স্নায়ু-বিকাশজনিত সমস্যা বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা প্রমুখ। পরে প্রধানমন্ত্রী দুবাই এক্সপো-২০২০ এর বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।