পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে। অবশেষে দেশে ফিরছেন সেই ২৮ নাবিক। টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে রোমানিয়া থেকে আজ বুধবার দুপুর নাগাদ এমভি সমৃদ্ধির নাবিকদের দেশে ফেরার কথা রয়েছে। প্রথমে যুদ্ধে আটকে পড়া এবং পরে ভয়ংকর রকেট হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া নাবিকদের দেশে ফেরার খবরে স্বস্তি ফিরে এসেছে তাদের স্বজনদের মাঝে। মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থা থেকে স্বদেশে ফেরার আনন্দে উদ্বেলিত বাংলার সমৃদ্ধির নাবিকেরাও। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রকেট হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন-বিএসসির এ জাহাজের নাবিকদের বরণ করে নিতে স্বজনেরা প্রস্তুত। বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকবেন বিএসসির কর্মকর্তারাও।
বিএসসির উপ-মহাব্যবস্থাপক (চার্টারিং, পরিকল্পনা) ক্যাপ্টেন মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ২৮ নাবিক দেশে ফিরছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ তারা ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবেন। রোমানিয়া দূতাবাসের উদ্যোগে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতেই ঢাকার উদ্দেশে বুখারিস্ট ত্যাগ করার কথা নাবিকদের। তবে রকেট হামলায় নিহত জাহাজটির তৃতীয় প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের কফিন এখনো ইউক্রেনের একটি হিমঘরে রয়েছে। পরবর্তীতে তার লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। যুদ্ধ কবলিত ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে ভয়ংকর রকেট হামলার শিকার হয়ে টানা ৪০ ঘণ্টা বন্দর নিকটবর্তী একটি বাংকারে অবস্থান করেন নাবিকেরা। ৩৯ ঘণ্টা বাংকারে অবস্থানের পর বাসযোগে তাদের মলদোভা হয়ে রোমানিয়া নেয়া হয়। রোববার সকালে রোমানিয়ার রাজধানী বুখারিস্টে পৌঁছেন তারা।
নাবিকদের মধ্যে রয়েছেন- জাহাজের মাস্টার জিএম নুর ই আলম। এডিশনাল মাস্টার এমডি মনসুরুল আমিন। এসিও সেলিম মিয়া, সেকেন্ড অফিসার রামাকৃষ্ণ বিশ্বাস, থার্ড অফিসার রুকনুজ্জামান রাজিব, ডিসি-১ ফারিয়াতুল জান্নান তুলি, ডিসি-২ ফয়সাল আহমেদ সেতু, চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. ওমর ফারুক, অতিরিক্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, সেকেন্ড অফিসার রবিউল আউয়াল, চতুর্থ ইঞ্জিনিয়ার সালমান সারোয়ার সামি, ইসি-১ ফারজানা ইসলাম মৌ, ইসি-২ মো. শেখ সাদি, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মো. মাসুদুর রহমান, বসুন জামাল হোসাইন, এবি-১ মো. হানিফ, এবি-২ মো. আমিনুল ইসলাম, এবি-৩ মহিন উদ্দিন, ওএস-১ হোসাইন মো. রাকিব, ওএস-২ সাজ্জাদ ইবনে আলম, ফিটার নাজমুল উদ্দিন, ইলেক্ট্রিশিয়ান মো. নজরুল ইসলাম, অয়েলার-১ সারোয়ার হোসাইন, অয়েলার-২ মাসুম বিল্লাহ, অয়েলার-৩ মো. হোসাইন, ফায়ারম্যান মো. আতিকুর রহমান, চীফ কুক মো. শফিকুর রহমান ও জিএস মো. সাইফুদ্দিন।
বিএসসির বক্তব্য
ইউক্রেনে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজ আটকে পড়ার ঘটনায় একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে উল্লেখ করে নিজেদের বক্তব্য দিয়েছে বিএসসি। বিএসসির উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) তারেক-উল-ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পূর্ব নির্ধারিত ভয়েজ অর্ডার অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রওনা হয় জাহাজটি। ২২ ফেব্রুয়ারি ওই বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়। পরদিন পাইলটের মাধ্যমে একত্রে ২১টি জাহাজ কনভয় আকারে ইনার অ্যাংকারেজে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই বন্দর থেকে সিরামিক ক্লে নিয়ে ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হলে লোডিং জাহাজ বাতিল করে বন্দর ছেড়ে আসার জন্য মাস্টারকে নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ পাইলট সরবরাহ না করা এবং পোর্ট অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়া সেইসাথে চ্যানেলে মাইন পুঁতে রাখার কারণে জাহাজটি আটকা পড়ে। আর এর মধ্যে ২ মার্চ মিসাইল আঘাত হানে জাহাজটিতে। এতে তৃতীয় প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান মারা যান। ঘটনার জন্য বিএসসির পক্ষ থেকে গভীর দুঃখ এবং নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। জাহাজটির নাবিকদের উদ্ধারে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়্যার জোন ঘোষণার আগেই জাহাজটি সেখানে যায়। যুদ্ধঝুঁকি এলাকা থেকে পরবর্তী বন্দরের জন্য পণ্য বোঝাই করা অর্থাৎ ইউক্রেন-ইতালি ভয়েজের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা (ইউএন, ন্যাটো, আইএমও) এবং ফ্ল্যাগ স্টেটের কোন নিষেধাজ্ঞা ছিলনা। এছাড়া উক্ত ভয়েজের জন্য বিধি মোতাবেক ইন্স্যুরেন্স কাভারেজ প্রাপ্তি এবং জাহাজের ক্যাপ্টেন কর্তৃক কোনরূপ বাধা বা আপত্তি উত্থাপিত না হওয়ার ফলে সার্টার পার্টি এগ্রিমেন্টের যুদ্ধ সংক্রান্ত ধারার বিধান মোতাবেক ভয়েজ অর্ডার বাতিল করার কোনরূপ রিজনেবল জাজমেন্ট তৈরি হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।