Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘ভুল তথ্য’ ছড়ানো রোধে আইন পাস রাশিয়ায়, সতর্ক পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০২২, ১২:২০ পিএম

‘ভুয়া সংবাদ’ নিয়ে সাম্প্রতিক আইন পাসের পর রাশিয়া প্রসঙ্গে সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করেছে পশ্চিমের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। ইতোমধ্যে পশ্চিমা প্রথম সারির কয়েকটি সংবাদমাধ্যম রাশিয়ায় সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশন স্থগিত করেছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

শনিবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি, কানাডাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিবিসি ও যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের রুশ কার্যালয়ের সাংবাদিকরা তাদের পেশাদার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন; মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন ও সিবিএস তাদের সম্প্রচার স্থগিত করেছে এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে অন্যান্য পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের রুশ শাখা তাদের প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের নাম উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকছে।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো রোধে নতুন আইন করছে রাশিয়া। শুক্রবার রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ দুমায় এই আইন পাস হয়েছে।
নতুন আইন অনুযায়ী, কোনো রুশ নাগরিক যদি ইউক্রেন অভিযান নিয়ে ভুয়া তথ্য ছড়ান, সেক্ষেত্রে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে এবং অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে সর্বোচ্চ ১৫ বছর কারাগারে কাটাতে হতে পারে।
এছাড়া, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে তদবির করছেন— এমন প্রমাণ যদি কোনো রুশ নাগরিকের বিরুদ্ধে পাওয়া যায়, তাহলে তাকে কারাবাসের সাজাভোগ বা জরিমানা দেওয়ার বিধানও রাখা হয়েছে নতুন এই আইনে।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জেরে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও তাদের মিত্ররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে টানা সমালোচনা করে যাচ্ছে, তার জবাব দিতেই মস্কো নতুন এই আইন প্রণয়ন করছে বলে মনে করছেন পশ্চিমের অধিকাংশ রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক। শুক্রবার থেকে রাশিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রক সংস্থা রোসকোমনাদজোর ফেসবুক ও টুইটারের মতো বৈশ্বিক যোগাযোগমাধ্যমেও স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রোসকোমনাদজরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাশিয়া ও রুশ সংবাদগমাধ্যমগুলোকে হেয় করে ব্যাপকভাবে বিভিন্ন পোস্ট আপলোড ও শেয়ার করছে। ফেসবুকে অন্তত ২৬ টি এ রকম পোস্ট শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রোসকোমনাদজর।
রুশ সরকারি কর্মকর্তাদের অভিযোগ, রাশিয়ার চিহ্নিত ‘শত্রু’ যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিম ইউরোপীয় মিত্ররা দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করতে রাশিয়া সম্পর্কে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে। তাদের এই ‘অপতৎপরতা’ রোধ করাই নতুন আইনের উদ্দেশ্য।
তবে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের নির্বাহীরা মনে করছেন, আইনটি মূল উদ্দেশ্য রাশিয়ায় স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করা ও সাংবাদিকদের বিপদে ফেলা। ব্লুমবার্গের এডিটর ইন চিফ জন মাইকেলথোয়েট তার রুশ শাখার সহকর্মীদের উদ্দেশে এক মেসেজে বলেন, ‘নতুন যে আইনটি হয়েছে, তাতে আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে যে, বর্তমানে রাশিয়ায় স্বাভাবিক সাংবাদিকতা প্রায় অসম্ভব এবং একজন স্বাধীন ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিক যে কোনো সময় এই আইনের আওতায় অপরাধী হিসেবে গণ্য হতে পারেন।’
‘আমরা আমাদের প্রতিবেদকদের এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে কাজ করার অনুমতি দিতে পারি না।’
বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি পৃথক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘রাশিয়ায় এখন স্বাধীন সাংবাদকিতা একটি অপরাধ। এ কারণে কাজ বন্ধ করা ছাড়া আমাদের সামনে আপাতত আর কোনো বিকল্প নেই।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ