মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আর্ন্তজাতিক বাজারে তেলের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বৃহস্পতিবার বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১২০ ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এ দিন ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি ১১৯ ডলার ৮৪ সেন্টে উঠে যায়, যা গত ৯ বছরের মধ্যে সর্ব্বোচ্চ।
ব্রেন্টের দাম গত ৩০ দিনে প্রায় ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ দিন ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট অশোধিত তেলের মূল্যও ১১৬ ডলার ৫৭ সেন্ট উচ্চতায় পৌঁছেছে, যা ২০০৮ সালের পর সর্ব্বোচ্চ। ২০০৮ সালের পর থেকে এটির উচ্চতম। পরে আবার ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমে ১১৩ ডলার ১২ সেন্ট হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর এক লাফে ব্রেন্ট ক্রুড ওয়েলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ওয়েলের দর প্রায় ১০০ ডলারে পৌঁছে। সউদী আরবের পর সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল রফতানি করে রাশিয়া। বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির শুরু থেকেই চাপের মধ্যে ছিল বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার। সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে চাহিদার সঙ্গে জোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছিল না।
সউদী আরবের নেতৃত্বে ওপেক জোট উৎপাদন বাড়িয়ে সঙ্কট কাটানোর চেষ্টা করছে, তবে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় জ্বালানি তেলের বাজার যে অস্থির হয়ে উঠবে, তা আগেই বোঝা যাচ্ছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সেই ‘আগুনে ঘি ঢেলেছে’। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। করোনা মহামারির মধ্যেও টানা বেড়েছে তেলের দাম। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় তা আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়।
এক সপ্তাহ আগে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ ঘোষণার সময়েও ব্যারেল প্রতি ৯৫ ডলারের আশেপাশে ছিল ব্রেন্ট ক্রুডের দর। সেই অশোধিত তেলই বৃহস্পতিবার একটা সময়ে পৌঁছে গেল ১২০ ডলারের কাছাকাছি। পরে অবশ্য তা ১১০-১১৫ ডলারের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। তবে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, তেলের দাম যে ধারাবাহিক ভাবে আরও বাড়তে পারে এ দিন সেই ইঙ্গিতই মিলেছে। আর তা হলে বিশ্ব জুড়ে আরও মাথা তুলবে মূল্যবৃদ্ধির দৈত্য। অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো ধাক্কা খাবে। কমবে জিডিপি বৃদ্ধির হার। যে পরিস্থিতির পোশাকি নাম ‘স্ট্যাগফ্লেশন’। মূল্যবৃদ্ধি রুখতে এ দিন ফের সুদ বৃদ্ধির বার্তা দিয়েছে আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজার্ভ।
সারা বিশ্বে উৎপাদিত অশোধিত তেলের ১১ শতাংশের উৎস রাশিয়া। আর ইউরোপে যে তেল যায় তার প্রায় ৩০ শতাংশ সরবরাহ করে মস্কো। বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, যুদ্ধের ফলে সেই সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আবার এরই মধ্যে ওপেক গোষ্ঠী এবং তাদের সহযোগী দেশগুলো জানিয়েছে, বিশ্ব বাজারে তেলের সরবরাহ মসৃণ করতে তারা উৎপাদন বাড়াবে ঠিকই, কিন্তু তা হবে ধীরে ও ধারাবাহিক গতিতে।
এরই মধ্যে বিভিন্ন সূত্রে খবর, আমেরিকার আপৎকালীন তেলের মজুত ভান্ডার হঠাৎই কমে এসেছে। ব্রিটেন, জার্মানি-সহ প্রথম সারির তেল আমদানিকারী দেশগুলোর মজুতও খুব শক্তিশালী জায়গায় নেই। এই সমস্ত খবরের ফলেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ৫ শতাংশ বেড়ে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১২০ ডলারের কাছে চলে যায় বলে মত তাদের। সূত্র : রয়টার্স, ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।