পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘ দিনের জটিলতা শেষে অবশেষে শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) সংযুক্ত নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়ন কর্মকান্ড। দক্ষিণ খানের কসাইবাজার থেকে উত্তরখানের কাঁচকুড়া বাজার পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন কাজের মধ্য দিয়ে শুরু হবে ১৮ ওয়ার্ড ঘিরে মেগা প্রজেক্টের কাজ। আগামীকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করবেন। এ রাস্তাটি ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ৭২ ফুট প্রশস্তের চার লেনের সড়ক হবে।
ডিএনসিসি জানায়, আগামীকাল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে নতুনভাবে অন্তর্ভূক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ ও উন্নয়ন (ফেজ-১) শীর্ষক প্রকল্পের কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন শেখ হাসিনা।
সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ১৪ জুলাই চার হাজার ২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকার একটি প্রকল্প একনেকে পাস হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সেই অর্থ ছাড় না হওয়ায় উন্নয়ন শুরু করতে পারেনি ডিএনসিসি। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও প্রকল্প পাসের পর ২১ মাস সময়ে মাত্র একশো কোটি টাকা পেয়েছে ডিএনসিসি। বর্তমানে প্রকল্পের একশো কোটি টাকা এবং ডিএনসিসির নিজস্ব তহবিলের দুই কোটি টাকাসহ মোট ৩০০ কোটি টাকা দিয়ে উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু হচ্ছে।
এদিকে সীমাহীন দুর্ভোগ-ভোগান্তিতে জীবন যাপন করছেন ডিএনসিসির সংযুক্ত নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের অর্থাৎ দক্ষিণ খান, উত্তর খান, তুরাগ, হরিরামপুর, বাড্ডা, ভাটারা, সাতাঁরকুল, বেরাঈদ, ডুমনির বাসিন্দারা। পাঁচ বছর আগে ২০১৭ সালে ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে ওয়ার্ডগুলো সিটি করপোরেশনে সংযুক্ত হলেও কোন উন্নয়ন কাজ করেনি ডিএনসিসি। একটি ওয়ার্ডে একটি সড়ক এবং একটি ওয়ার্ডে কয়েকটি বাজারের সামনের রাস্তা আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ হয়েছে। এর মধ্যে দুইবার মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচন অনুষ্ঠিতও হয়েছে। দীর্ঘদিন কোন উন্নয়ন কাজ না হওয়ায় ভাঙাচোরা রাস্তা, বৃষ্টিতে হাটুপানি হয়ে এলাকা ডুবে যাওয়া, ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকাসহ নানা সমস্যায় জর্জড়িত এই ওয়ার্ডগুলো। কোন রাস্তা মেরামত করা হয়নি, হয়নি কোন ড্রেন। এর মধ্যে দক্ষিণ খানে ওয়াসা নতুন পাইপ বসানোর ফলে মূল সড়ক, ওলি-গলির সব সড়ক নষ্ট হয়ে আছে।
এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা ইনকিলাবকে বলেন, আগামীকাল ডিএনসিসির নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ ও উন্নয়ন (ফেজ-১) শীর্ষক প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দক্ষিণ খানের কসাইবাজার থেকে উত্তরখানের কাঁচকুড়া বাজার পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন করা হবে। এই রাস্তার ফলে তিনটি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা (যথাক্রমে ৪৮, ৪৯, ৪৪) উপকৃত হবেন।
ডিএনসিসি সূত্র বলছে, এ প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত অর্থ ছাড় হতে পারে তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে উদ্বোধনী করা হচ্ছে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রীর শিডিউলের অপেক্ষা করছিল ডিএনসিসি। তবে কেন অর্থ মন্ত্রণালয় এ প্রকল্পের টাকা ছাড় করতে দেরী করছে এ বিষয়ে ডিএনসিসির কেউ কোন মন্তব্য করেননি।
৪ হাজার ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পে যা আছে:
এই প্রকল্পের আওতায় নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে মোট ১৮২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে। এর মধ্যে প্রধান সড়কগুলো চার লেন (৩৩ কিলোমিটার) করা হবে। দুই লেনের সড়ক নির্মাণ করা হবে প্রায় ৪০ কিলোমিটার। বিদ্যুৎ, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ক্যাবলসহ অন্যান্য তার মাটির নিচ দিয়ে নিয়ে যেতে ‘ইউটিলিটি ডাক্ট’ নির্মাণ করা হবে ৯৭ কিলোমিটার। এই খাতে ব্যয় হবে ৭৪৩ কোটি ৬৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। নর্দমা নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে ২৩৩ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৫১ কোটি ২২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রতি কিলোমিটার নর্দমা নির্মাণে ব্যয় হবে চার কোটি ৪৯ লাখ ২৯ হাজার ৯০০ টাকা।
১৮টি ওয়ার্ডে খালের সংখ্যা ১৩টি। দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮ দশমিক ৫১ কিলোমিটার। এই খালগুলোর উভয় পাশে হাঁটাচলার পথ ও সাইকেল লেন নির্মাণ করা হবে ৫৮ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮২ কোটি ৫৬ লাখ ছয় হাজার টাকা। এছাড়া এসব ওয়ার্ডে মোট ১২ হাজার ২৬৭টি এলইডি বাতি স্থাপন করা হবে। এতে ব্যয় হবে ১২০ কোটি ২৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। এই অর্থের মধ্যে বাতির দাম, পোল, ক্যাবল, সুইচ এবং আনুষঙ্গিক খরচ ধরা হয়েছে।
প্রসঙ্গত ২০১৬ সালের ৯ মে সচিবালয়ে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভায় ঢাকার আশপাশের ১৬টি ইউনিয়নকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন পায়। এরপর ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সম্প্রসারিত অংশে নবগঠিত ৩৬টি ওয়ার্ডকে দশটি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ডিএনসিসি অন্তর্ভুক্ত বাড্ডা, ভাটারা, সাতাঁরকুল, বেরাঈদ, ডুমনি, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও হরিরামপুর ইউনিয়নকে ১৮টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়। ডিএসসিসির শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল, সারুলিয়া, ডেমরা, মান্ডা, দক্ষিণগাঁও ও নাসিরাবাদ ইউনিয়নকে ১৮টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়।
২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ডিএনসিসির প্রথম মেয়র আনিসুল হক যুক্তরাজ্যে মারা গেলে ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উপ-নির্বাচনে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন আতিকুল ইসলাম। সে সময় ১৮টি ওয়ার্ডেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে আবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ডিএনসিসির অন্তর্ভুক্ত বাড্ডা, ভাটারা, সাঁতারকুল, বেরাঈদ, ডুমনি, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও হরিরামপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ডগুলো হল: ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নম্বর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।