Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিশুপার্কের সামনে ফের দখলদারিত্ব

প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সায়ীদ আবদুল মালিক : রাজধানীর শাহবাগ শিশু পার্কের সামনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর আবার দখল হয়ে গেছে। গত ৬ ফেব্রæয়ারি শনিবার দিনভর শিশু পার্কের সামনের ও ফুল মার্কেটের আশপাশের প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট উচ্ছেদ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। ওই সময় শিশুপার্কের ভেতরে থাকা দু’টি রেস্টুরেন্টকেও আট হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সিটি কর্পোরেশনের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার সাতদিনের মাথায় গতকাল শনিবার সরেজমিন দেখা গেছে, সাতদিন আগের অবস্থাতেই আবার ফিরে গেছে ওই এলাকা। শিশু পার্কের মূল গেইটের সামনের পুচকা দোকানগুলো আগে যেইভাবে সারি সারি চেয়ার দিয়ে সাজাতো গতকালও সেই একই রকম দেখা গেছে। বিভিন্ন খেলনা দোকান, কসমেটিক দোকান, জুতা দোকানসহ চা দোকানগুলো আগের মতোই আবার পূর্বের আবস্থায় এসে গেছে। ফুল মার্কেটের আশপাশের আবস্থাও একই রকম। ফুটপাত থেকে অবৈধ দখল শুরু হয়ে মূল সড়ক পর্যন্ত পৌঁছে গেছে তাদের দখল কর্মকাÐ। শিশু পার্কের গেইট থেকে শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাওয়ার সড়কটির অনেকাংশ দখল করে চলছে ফুল ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজ। গতকাল শনিবার পয়লা ফাল্গুন থাকায় ফুলের চাহিদা ছিল অন্যদিনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। সে কারণে দখলদারদের দখলের পরিধিও বেড়ে গেছে অন্যসময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ খালিদ আহম্মেদ ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের এ উচ্ছেদ অভিযান চলতেই থাকবে। অবৈধ দখলদাররা যতবার দখল করবে আমরা ততবার উচ্ছেদ করে দেব। তিনি বলেন, আমি মেয়রের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি তিনিও আমাকে অবৈধ দখলদারদের ব্যাপারে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আবারও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবো। তাদেরকে বারবার উচ্ছেদ করা হবে।
তিনি বলেন, অবৈধ দখল কর্মকাÐের সাথে শিশুপার্কের ভেতরের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ ও তথ্য পাওয়া গেছে। এ অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি মেয়র বরাবর সুপারিশ করবো। জানা গেছে, গত ৬ ফেব্রæয়ারি সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত অভিযানে শিশুপার্কের ভেতরে থাকা ১৫টি রেস্টুরেন্টের মধ্যে অভিজাত স্ন্যাকস ও অপু স্ন্যাকসকে যথাক্রমে পাঁচ হাজার ও তিন হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অভিজাত স্ন্যাকস নির্ধারিত সীমানার বাইরে টেবিল-চেয়ার রেখেছিল। আর অপু স্ন্যাকস মূল্যতালিকার চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করছিল। অভিজাত স্ন্যাকসের বিক্রেতা সাঈদ অভিযোগ করে বলেন, সিটি কর্পোরেশনের যান্ত্রিক বিভাগের প্রধান ক্লার্ক ফারহান অতিরিক্ত টাকা নিয়ে আমাদেরকে বেশি জায়গা ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে থাকেন।
গতকাল শনিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উল্লেখিত ওই এলাকায় গত ৬ মাস কিংবা এক বছরের মধ্যে কোন প্রকার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হয়েছে এমন চিহ্নটুকুও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওই এলাকায় গত এক সপ্তাহ আগে যারা গেছে, আর গতকাল যারা গেছে তাদের পক্ষে বুঝা কিছুতেই সম্ভব হবে না যে এখানে গত ৬ ফেব্রæয়ারি দিনভর উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ২০০ দোকান গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছিল।
অবৈধ দখলকারিরা যে যার মত করে তাদের পূর্বের দখল সীমানা আবার দখল করে তাদের নিজ নিজ ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছে।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শিশু পার্ক ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি হেদায়েত সরদার রানা ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু মোল্লার নেতৃত্বে পার্ক এলাকায় অবৈধভাবে দোকানপাট বসিয়ে প্রতি মাসে বিরাট অংঙ্কের টাকা চাঁদাবাজি চলছে। দোকান প্রতি দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা দিতে হয় তাদেরকে।
আর ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বাহালুল মজনু চুন্নু ও তার লোকজন ফুল মার্কেট থেকে চাঁদা তোলা ও অবৈধ দোকান বসিয়ে বাণিজ্য করে আসছেন।
ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা খালিদ আহম্মেদ এ ব্যাপারে বলেন, শাহবাগের এ এলাকায় যতো দোকানপাট রয়েছে, সবগুলোই অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। একটা পার্কের সামনে এভাবে সৌন্দর্য নষ্ট করে দোকানপাট-হকার থাকতে পারে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিশুপার্কের সামনে ফের দখলদারিত্ব
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ