নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পিনার নাসুম আহমেদের ঘূর্ণিতে সফরকারী আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে রেকর্ড গড়া জয় পেল বাংলাদেশ। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানদের ৬১ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল টাইগাররা। দেশের মাঠে টি-টোয়েন্টিতে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়। এর আগে গত আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬০ রানের জয়টি ছিল সবচেয়ে বড়। কাল টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে বিপর্যয়ে পড়লেও লিটন দাসের ৬০ রানের ইনিংসে বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে তুলে ১৫৫ রান। জবাবে ১৫৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৪ বল বাকি থাকতে ৯৪ রানেই গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান।
লিটনের হাফসেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের পাওয়া ১৫৫ রানের পর কোনও ভাগেই মনে হয়নি আফগানিস্তান এ ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। উল্টো পাওয়ার প্লেতেই আফগানদের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন স্বাগতিক দলের বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। যে কারণে বাংলাদেশের উইকেট উৎসব শুরু হয় প্রথম ওভারেই। শুরুর ওভারের চতুর্থ বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বিপদে পড়েন ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ। টপ এজ হয়ে বল জমা পড়ে ইয়াসির আলীর হাতে। ফলে রানের খাতা না খুলেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন আফগান ওপেনার। এরপর দ্বিতীয় ওভারেও উইকেট নেওয়ার সুযোগ ছিল। মেহেদী হাসানের করা বলে জায়গা বানিয়ে উড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন হজরতউল্লাহ জাজাই। কিন্তু পারেননি টাইমিং করতে। কাভার পয়েন্টে সহজ ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন মুনিম শাহরিয়ার। বল তার হাতে লেগে পড়ে যায় মাটিতে। জাজাই বেঁচে যান ৫ রানে। তবে নাসুমের পরের ওভারে আর রক্ষা হয়নি হজরতউল্লাহ জাজাইয়ের। মেরে খেলতে গিয়ে তিনি ক্যাচ তুলে দেন মোহাম্মদ নাঈমের কাছে। ফেরার আগে জাজাই করেন ৬ রান। এক বল বিরতি দিয়ে নতুন নামা দারউইশ রাসুলিও বোল্ড হন নাসুমের বলে। সুইপ করতে গিয়ে বরং আরও চাপ বাড়িয়ে দেন তিনি। ২ রান করে আউট হন। মাত্র ৮ রানে তিন উইকেট হারানো আফগানদের চেপে ধরার সময়টায় চতুর্থ ওভারে আবারও ক্যাচ মিস করে বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে নাজিবুল্লাহ জাদরানের ক্যাচ তালুবন্দী করতে পারেননি লিটন। পরের ওভারে আবারও উইকেট নিয়ে সেই ব্যর্থতা পুষিয়ে দেন নাসুম। অফসাইডে বল উঠিয়ে মেরে সহজ ক্যাচে ফিরেছেন করিম জানাত। আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৬ রান। একই ওভারের পঞ্চম বলেও উইকেট শিকার করেছিলেন নাসুম। মোহাম্মদ নবীকে এলবিডাব্লিউ করেছিলেন তিনি। আম্পায়ার আঙুল তুললেও আফগান ব্যাটার রিভিউ নিয়ে বেঁচেছেন। শুরুর ধাক্কার পর ইনিংস মেরামতে মনোযোগী হন অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী ও নাজিবুল্লাহ জাদরান। ৩৭ রান যোগ করেন তারা। আফগান অধিনায়ককে আফিফ হোসেনের ক্যাচ বানিয়ে জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। অবশ্য এই উইকেট নিয়ে মাইফলকও স্পর্শ করেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার। রঙিন পোশাকের ক্রিকেটে তিনি নিজ ঝুলিতে ভরেন ৪০০ উইকেট। এর পর আসা-যাওয়ার মিছিলেই সামিল হন আফগানিস্তানের বাকি ব্যাটাররা। এক ওভার পর সাকিব এবার তুলে নেন নাজিবুল্লাহ জাদরানের উইকেট। আগেভাগে খেলতে গিয়ে এই আফগান ব্যাটার ক্যাচ তুলে দেন মুনিম শাহরিয়ারকে। স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করতে চাওয়া এই ব্যাটার আউট হওয়ার আগে করেন ২৭ রান। পরের ওভারে রশিদ খানের উইকেট তুলে নিয়ে জয়টা আরও ত্বরান্বিত করেন পেসার শরিফুল ইসলাম। উইকেট তুলে নেওয়ার মিছিলে পরে যোগ দেন মুস্তাফিজুর রহমানও। ২০ রান করা আজমতউল্লাহ ওমারজাইকে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানান তিনি। শরিফুল ১৮তম ওভারে কায়েস আর মুজিবকে ফিরিয়ে আফগানদের কোমড় ভেঙে দিলে মাত্র ৯৪ রানেই শেষ হয় সফরকারী দলের ইনিংস। চার ওভার বল করে মাত্র ১০ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা হন নাসুম আহমেদ। ২৯ রানে ৩ উইকেট শরিফুলের। আর ১৮ রানে দুই উইকেট নিয়েছেন সাকিব।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে অভিজ্ঞরা ব্যর্থ হলেও লিটন দাসের ৬০ রানের ইনিংসই ছিল মূল হাইলাইটস। একপ্রান্ত আগলে রেখে দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফসেঞ্চুরি করে দলকে পথ দেখান লিটন। এই ব্যাটার ৪৪ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কার মারে খেলেন ৬০ রানের ঝকঝকে ইনিংস। আফগানিস্তানের সবচেয়ে সফল বোলার ফারুকী। এই পেসার চার ওভার বল করে ২৭ রান দিয়ে শিকার করেন ২ উইকেট। তার মতো ২ উইকেট পেয়েছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। আর একটি করে উইকেট নেন রশিদ খান ও কাইস।
সিরিজের শেষ ম্যাচ আগামীকাল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৫/৮ (মুনিম ১৭, নাঈম ২, লিটন ৬০, সাকিব ৫, মাহমুদউল্লাহ ১০, আফিফ ২৫, ইয়াসির ৮, মেহেদী ৫ , নাসুম ৩*, শরিফুল ৪*; ফারুকি ৪-০-২৭-২, মুজিব ৩-০-২৪-০, রশিদ ৪-০-১৫-১, নবী ২-০-১৯-০, কাইস ২-০-২১-১, ওমরজাই ৪-০-৩১-২, করিম ১-০-৫-০)।
আফগানিস্তান: ১৭.৪ ওভারে ৯৪/১০ (জাজাই ৬, গুরবাজ ০, রাসুলি ২, নাজিবউল্লাহ ২৭, করিম ৬, নবি ১৬, ওমরজাই ২০, রশিদ ১, কাইস ৮, মুজিব ৪, ফারুকি ০*; নাসুম ৪-০-১০-৪, মেহেদী ৩-০-১৭-০, মুস্তাফিজ ৩-০-১৯-১, শরিফুল ৩৪.-০-২৯-৩, সাকিব ৪-০-১৮-২)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।