গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে। স্কুল, কলেজ, মাদরাসার ক্লাস চালু হয়েছে। আর গতকালই রাজধানী ঢাকা যানজটে যেন থমকে দাঁড়িয়েছিল। কয়েকটি রাস্তায় ঘন্টার পর ঘন্টা যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। যানজটে আটকে পড়ে অবর্ণনীয় দূর্দশায় পড়েন অফিসগামী মানুষ ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা।
সকালে অফিসে যাওয়ার সময় রাজধানীজুড়ে যানজটের চিত্র প্রতিদিনেরই। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জটের তীব্রতা কমতে থাকলেও দুপুর শেষে তা ফের বাড়তে থাকে, চলে রাত পর্যন্ত। স্বাভাবিক সময়ে দুপুরে রাজধানীর সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ কিছুটা কম দেখা যায়। কিন্তু গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর সড়কজুড়ে যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। সকালের যানজট গড়িয়ে অব্যাহত ছিল দুপুরেও। অফিস থেকে ঘরে ফেরার সময় জটের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়।
সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন রুটে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাত্রী বহন করছেন হাবিবুর রহমান নামে একজন চালক। সড়কের পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে তিনি বলেন, বলতে গেলে সকাল থেকে রাজধানীর প্রতিটি সড়কে তীব্র যানজট। অন্যান্য দিন দুপুর পর্যন্ত যে কটি ট্রিপ দিতে পারি, সে তুলনায় অনেক কম হয়েছে। স্কুল খুলে দেয়ায় সড়কে বেশি যানবাহন নেমেছে মনে হচ্ছে।
উত্তরা থেকে এয়ারপোর্ট রোড ধরে খিলক্ষেত, বনানী হয়ে মহাখালী পর্যন্ত এসেছেন রাইডার তোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, সকাল থেকেই রাজধানীর সড়কগুলোতে যানজট দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে সড়কে প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, বাসসহ সব ধরনের যানবাহনের সংখ্যা বেশি। এছাড়া মানুষের উপস্থিতিও বেশি মনে হচ্ছে। সকালের যানজট দুপুরেও রয়ে গেছে। অনেক ট্রিপ ইচ্ছে করে বাতিল করে দিচ্ছি।
সাভার থেকে গাবতলী, শ্যামলী, আগারগাঁও, মহাখালী, গুলশান, বাড্ডা হয়ে নতুন বাজার পর্যন্ত আসা রইস পরিবহনের বাসচালক এরশাদ আলী নামের এক যুবক জানালেন তীব্র যানজটের কথা। তিনি বলেন, সাভার থেকে আসার সময় গাবতলী পেরোতেই অনেক সময় লেগেছে। শ্যামলী, জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী, গুলশান সিগন্যাল হয়ে বাড্ডা সড়কেও তীব্র যানজট ছিল। অন্য দিন সকালে অফিস আওয়ারে বেশি যানজট থাকলেও ধীরে ধীরে দুপুরে কমে আসে। ফের বিকেলের দিকে জট শুরু হয়। কিন্তু দুপুরে এসেও যানজট রয়ে গেছে রাজধানীতে।
রাজধানী যানজট, সড়কের পরিস্থিতির আপডেট জানানো জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপ ট্রাফিক অ্যালার্ট গ্রুপেও সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের তীব্র যানজট নিয়ে অনেকই পোস্ট করে নিজেদের ক্ষোভ জানিয়েছেন। শাহিন রহমানে নামের একজন গ্রুপে লিখেছেন, পুলিশ স্টাফ কলেজ, মিরপুর থেকে কচুক্ষেত এমপি চেকপোস্ট আসতে ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট লাগল, এ পথে সাধারণত ৫ মিনিট লাগে। হায়রে জ্যাম।
খাইরুল হাসিব সাইমন গ্রুপে পোস্ট করেছেন, মিরপুর রোড ফুল প্যাকড। একইভাবে তুষার সাইফুল আজম লিখেছেন, টেকনিক্যাল-গাবতলী-সাভার রোগে এত জ্যাম কেন? কেউ কি বলতে পারবেন? সোহেল রানা নামের একজন লিখেছেন, বাইক নিয়ে হেমায়েতপুর থেকে আমিনবাজার আসতে আধাঘণ্টা লাগছে আমার। যারা ওই রাস্তায় যাবেন পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বের হবেন।
যাত্রাবাড়ি ধোলাইপাড়, সায়েদাবাজে তীব্র যানজট দেখা গেছে। নিউ মার্কেট, আজিমপুরে যানজট ছিল ভয়াবহ। আজিমপুরে রাস্তার ওপর বিভিন্ন কোম্পানীর বাস দাঁড় করিয়ে রাখার কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগে যায়।
সকাল থেকে রামপুরা, বাড্ডা, নতুন বাজার, কুড়িল সড়কে অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি যানজটের কথা জানালেন প্রগতি সরণিতে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে। আর এ সড়কে রিকশা চলাচল করায় যানবাহনের চলাচলের গতি বাধাগ্রস্ত হয়, সে কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। এ সড়কে পথচারী পারাপারের কয়েকটি পয়েন্ট রয়েছে। তাই যখন দল বেঁধে পথচারীরা পার হন তখন গাড়িগুলোকে সেøা চলতে হয়। ফলে পেছনে যানজট সৃষ্টি হয়। মনে হচ্ছে সড়কে যানজটের তীব্রতা কিছুটা বেশি, সেই সঙ্গে গাড়ির সংখ্যাও বেশি মনে হচ্ছে।
মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে দেখা গেছে তীব্র যানজট। ভাড়ার অতিরিক্ত ৫ টাকা করে দিয়ে মানুষ দ্রুত গন্তব্যে যাওয়ার জন্য মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু সেখানেও দেখা গেছে তীব্র যানজট। মো. শহীদুল বাস চালক জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ফ্লাইওয়ারের এক ধারে মাইলের পর মাইল যানজট লেগে থাকে। মাঝে মাঝে অফিস সময়েও যানজট হয়ে থাকে। কিন্তু ইদানিং যানজট বেশি হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।