Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভ্যাকুয়াম বোমা কী, কতটা ভয়ঙ্কর?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২২, ১২:১৬ এএম

ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে ভ্যাকুয়াম বা থার্মোবারিক বোমা ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে; প্রাণঘাতী এই বোমা একই আকারের অন্য সাধারণ বোমার চেয়ে অনেক বেশি বিধ্বংসী, যা বিস্ফোরণের এলাকায় যে কারো ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। এই বোমা উচ্চ-তাপমাত্রার বিস্ফোরণ তৈরি করতে চারপাশের বাতাস থেকে অক্সিজেন শুষে নেয়। বিস্ফোরণ ঘটালে প্রচলিত বোমার তুলনায় শক্তিশালী শকওয়েভ তৈরি হয়। আর তা এতটাই প্রচণ্ড যে এটি মানবদেহকে বাষ্পে পরিণত করতে পারে। কিন্তু এই বোমা কীভাবে কাজ করে? ভ্যাকুয়াম বোমার ব্যবহার নিয়ে আন্তর্জাতিক আইন কী বলে? ইউক্রেইনে ওই বোমা আদৌ ব্যবহার হয়েছে? এর আগে কোথায় ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার হয়েছিল? এক প্রতিবেদনে এসব প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরেছে বিবিসি। ভ্যাকুয়াম বোমা কীভাবে কাজ করে? ভ্যাকুয়াম বোমাকে অ্যারোসল বোমা বা জ্বালানী বায়ু বিস্ফোরকও বলা হয়। সাধারণত একটি জ্বালানির পাত্রে দুই ধরনের বিস্ফোরক চার্জ রেখে এই বোমা তৈরি করা হয়। রকেট লঞ্চারের মাধ্যমে এই বোমা ছোড়া যায়, বিমান থেকেও ফেলা যায়। লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানলে প্রথম বিস্ফোরক র্চাজ বোমার কনটেইনারের মুখ খুলে দেয় এবং সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরক জ্বালানি মিশ্রণটি মেঘের মত চারদিকে বড় এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বায়ুরোধী করে তৈরি করা হয়নি এমন যে কোনো ভবন বা প্রতিরক্ষা বূহ্যকে ভেদ করতে পারে বাতাসে ভাসমান ওই বিস্ফোরক। তারপর দ্বিতীয় চার্জটি ওই মিশ্রণের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটায়। তৈরি হয় অসংখ্য আগুনের গোলা। বিস্ফোরণের ফলে তীব্র শকওয়েভ ছড়িয়ে পড়ে, আশপাশের বাতাসের অক্সিজেন শুষে নেওয়ায় বিস্ফেরণস্থলে তৈরি হয় এক ধরনের বায়ু শূন্য পরিস্থিতি বা ভ্যাকুয়াম। এই অস্ত্রটি শক্তিশালী ভবন, ধাতব সরঞ্জাম ধ্বংস করতে পারে, মানুষকে হতাহত করতে পারে। কোথায় কীভাবে ব্যবহার করা হবে তার ভিত্তিতে ভ্যাকুয়াম বোমা তৈরি করা হয় ভিন্ন ভিন্ন আকারে। সৈন্যদের ব্যবহারের জন্য গ্রেনেড কিংবা হাতে বহনযোগ্য লঞ্চার থেকে ছোড়ার মত করে রকেট আকারেও তৈরি করা যায়। আবার বিমান থেকে ফেলার জন্য বিরাট আকারের ভ্যাকুয়াম বোমাও বানানো হয়েছে, যা বিশেষভাবে গুহা ও সুড়ঙ্গের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে ব্যবহার করা হয়। আবদ্ধ জায়গায় এই অস্ত্র সবচেয়ে বেশি ধ্বংস ঘটাতে পারে। ২০০৭ সালে রাশিয়া তাদের সবচেয়ে বড় থার্মোবারিক বোমার পরীক্ষা চালিয়েছিল, এর নাম তারা দিয়েছিল ‘ফাদার অব অল বমস’। ৪৪ টন সাধারণ বোমার সমতুল্য বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে কথিত ওই ‘ফাদার অব অল বমস’। পারমাণবিক বোমার বাইরে পৃথিবীর সবচেয়ে বিধ্বংসী বোমা এটি। ধ্বংসাত্মক প্রভাব এবং ভবন ও বাংকারে থাকা সৈন্যদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের সুবিধার কারণে ভ্যাকুয়াম বোমা প্রধানত শহুরে পরিবেশে ব্যবহার করা হয়েছে। বিবিসি লিখেছে, ইউক্রেইন দখলের ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, কারণ রুশ সৈন্যরা এখনও দেশটির রাজধানী কিয়েভ এবং পূর্বের অন্যান্য বড় শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভ্যাকুয়াম বোমা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ