নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
প্রতি সপ্তাহেই তারা ‘যুদ্ধ’ করেন! তবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ক্লাবগুলোর মাঠের সে ‘যুদ্ধ’ কারও প্রাণ নেয় না, করে না কোনো সম্পদের ক্ষতি। মাঠের সে লড়াইয়ে হেরে যাওয়া দলকে পদদলিত করে না বিজয়ীরা বা বিজয়ীদের প্রতি ঘৃণা দেখায় না পরাজিতেরা। কিন্তু বোমারু বিমান-মিসাইল-ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে রাশিয়া যে ইউক্রেনের ওপর হামলা করেছে, এতে প্রাণ যাচ্ছে অসংখ্য মানুষের, হচ্ছে সম্পদের ক্ষতি। রাশিয়া হয়তো এ যুদ্ধে বিজয়ী হবে, কিন্তু তাদের প্রতি ঘৃণা ঝরবে বিশ্বজোড়া মানুষের।
এমন যুদ্ধ কেউ চায় না। তাই তো ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলগুলো মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে হাজির হয়েছে যুদ্ধবিরোধী স্লােগান নিয়ে। গতপরশু রাতের প্রতিটি ম্যাচেই তাই বিভিন্ন ক্লাবের খেলোয়াড় আর সমর্থকেরা মুখর ছিলেন ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার প্রতিবাদে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার সিটি ও এভারটনের ম্যাচে বিশ্ব দেখেছে হৃদয়ে নাড়া দিয়ে যাওয়ার মতো একটি দৃশ্য। ম্যানচেস্টার সিটিতে খেলেন ইউক্রেনের লেফট ব্যাক ওলেকসান্দর জিনচেঙ্কো। এভারটনে একই পজিশনে খেলেন ইউক্রেনের আরেক ফুটবলার ভিতালি মিকোলেঙ্কো। সিটি-এভারটন ম্যাচ শুরুর আগে মাঠে দুজনকে একসঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলতে দেখা যায়। এরপর ছলছল চোখে দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরেন।
এদিকে ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রতিবাদ করেছে ম্যানচেস্টার সিটি ও এভারটনের পুরো দলই। ম্যাচ শুরুর আগে এভারটনের খেলোয়াড়েরা মাঠে নেমেছেন ইউক্রেনের পতাকা গায়ে জড়িয়ে। আর সিটির খেলোয়াড়েরা পরে এসেছেন ইউক্রেনের পতাকা আঁকা টি-শার্ট। তাঁদের টি-শার্টে ‘যুদ্ধ নয়’ স্লােগানও লেখা ছিল। ম্যাচটি হয়েছে এভারটনের মাঠে। দলটির সমর্থকেরা বিশালাকার ব্যানারে লিখে নিয়ে এসেছে, ‘আমরা ইউক্রেনের পাশে আছি।’
খেলোয়াড়দের যুদ্ধবিরোধী এ অবস্থানে সমর্থকদের সমর্থন আছে দেখে খুব খুশি ম্যান সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা, ‘কী দুর্দান্ত একমুহূর্ত। সবাইকে ধন্যবাদ। জিনচেঙ্কো খুব খুশি হয়েছে।’ এভারটনের কোচ ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের কথা, ‘খেলার যে কী ক্ষমতা, তা আমরা গত কিছুদিনে নানাভাবে দেখেছি। আমাদের দলে ভিতালি আর তাদের দলে জিনচেঙ্কো আছে। দুই দলের সমর্থকেরাই তাদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। খেলার ঐক্য এমনই। খেলার বাইরের মানুষেরা এ থেকে শিক্ষা নিতে পারে।’
শুধু এভারটনের সমর্থক অথবা ম্যান সিটি-এভারটনের খেলোয়াড়েরাই নন, ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্বজোড়া বিভিন্ন দেশের ক্লাব, খেলোয়াড় আর সমর্থকেরা। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও ওয়াটফোর্ডের গোলশূন্য ড্র ম্যাচের আগে দুই দলের খেলোয়াড় ও কোচ ‘শান্তি’ লেখা একটি ব্যানারের পেছনে দাঁড়িয়ে ইউক্রেনে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ব্রাইটনের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ে দলের প্রথম গোলটি করে একটি বার্তা দেখিয়েছেন অ্যাস্টন ভিলার ম্যাটি ক্যাশ। ‘শক্ত থাকো ভাই’- জার্সির নিচে পরা টি-শার্টে তিনি বার্তাটি লিখে নিয়ে এসেছেন তার পোল্যান্ড দলের সতীর্থ টমাস কেডজিওরাকে সাহস জোগাতে। দিনামো কিয়েভের হয়ে খেলা কেডজিওরা এ মুহূর্তে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে আছেন।
ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে টটেনহাম-লিডস আর ক্রিস্টাল প্যালেস-বার্নলি ম্যাচেও। জার্মানিতে আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে বায়ার্ন মিউনিখের ১-০ গোলে জেতা ম্যাচের আগে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়েছে। জার্মান ফুটবল লিগ কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছেন, বুন্দেসলিগার মতো দ্বিতীয় বিভাগের প্রতিটি ম্যাচের আগেই ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানাতে হবে। স্পেনের লা লিগায় রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদের ১-০ গোলে জেতা ম্যাচে যুদ্ধবিরোধী নানা রকমের ব্যানার দেখানো হয়।
প্যারিসে পিএসজি ও সেঁত এতিয়েন ম্যাচেও ছিল যুদ্ধবিরোধী স্লােগান। পিএসজির ৩-১ গোলে জেতা ম্যাচের আগে দুই দলের খেলোয়াড়েরা ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ‘সবার জন্য শান্তি’ লেখা ব্যানারের পেছনে দাঁড়িয়ে। ইতালির সিরি ‘আ’তে জুভেন্টাস-এম্পোলি ম্যাচের আগে মাঠের বড় পর্দায় ইউক্রেনের পতাকার নীল ও হলুদ রঙের ওপর ভেসে ওঠে ‘যুদ্ধ নয়’ লেখা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।